Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

জিজ্ঞাসা (শেষ ভাগ)

” মায়ার শান্ত নম্র স্বভাবের জন্য ফ্ল্যাটের প্রত্যেকেই মায়াকে খুব ভালোবাসে খেয়াল ও রাখে ওর। বিশেষ করে ওর মামু মানে মুখার্জী দিদার ছেলে। কিন্তু সময় আর বয়স করো জন্যই থেমে থাকে না। বয়সের ভারে সবাই ভারাক্রান্ত। কিন্তু ইদানিং মায়ার মধ্যে কিছু পরিবর্তন প্রায় সবারই চোখে পড়ছে। পরিবর্তনটা মানসিক মায়া আজকাল অনেক সময়ই একা একা কথা বলে, বির বির করে, রেগে যায়, একাই কাঁদে, আবার হেঁসে ওঠে। সময় অসময়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আজকাল অনেক সময় বাড়ি চিনে ও আসতে পারে না। অসুবিধা হয় ওর। স্কুলের চাকরিটা ও আর নেই। টিউশন গুলো ও নেই। টাকা পয়সার সমস্যা ও আজকাল অনেক হচ্ছে কারণ মায়া আজ আর কাজ করতে পারে না সবাই বুঝতে পারছে ও ধীরে ধীরে ওর মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে।
এমনি এক সকালে হঠাৎ ফ্ল্যাটের সবাই খেয়াল করে মায়ার ফ্ল্যাট খোলা ঘরে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করে ও তাঁকে দেখতে পাওয়া যায় না। ওর মামু আর ফ্ল্যাটের আরো কয়েকজন মিলে ওর খোঁজ করে সারাদিন খুঁজে ও যখন মায়াকে পাওয়া যায় না তখন সবাই থানায় যাবার কথা বলে এর মধ্যে যার মাধ্যমে মায়ার বিয়ে ঠিক হয়েছিল তারা বলে যদি একবার ওই বাড়ি খোঁজ নেওয়া যায়: ” আমরা জানি বুঝে হোক বা না বুঝে আমরা বাপ মা মরা মেয়েটার অনেক বড় ক্ষতি করে দিয়েছি। বুঝতে পারিনি নিজের আত্মীয়ের আসল স্বরূপ ভেবেছিলাম ওখানে ও ভালো থাকবে ওরা এমন জানলে এই সমন্ধ আমরা কখনো করতাম না এতদিন লজ্জায় চুপ ছিলাম কিন্তু আজ আর পারলাম না”। মুখার্জী গিন্নীর ছেলে বলে: “না ওখানে খোঁজ নিয়ে দরকার নেই তাছাড়া কোনো লাভ ও নেই মেয়েটা নিজের বাড়ি চিন্তে পারে না ওই বাড়ি কি চিনবে? তাছাড়া ওরা যা করেছে তাতে ও যত বড় পাগলি হোক না কেনো আমার মনে হয় না সেখানে যাবে বলে, আমার শুধু একটা কথাই মনে হয় যে মেয়েটাকে ও জন্ম দিল পৃথিবীর আলো দেখালো সে ও ওকে কোনোদিন চাইলো না কতো বড় অভাগী ও, মরুক মরুক ওর মরাই ভালো”। নিজের অজান্তেই ওর চোখ থেকে জল নেমে এলো। এরপর সকলে থানায় যায় এবং একটা মিসিং ডায়েরী করায়।
প্রায় চার দিন বাদে ওর খোঁজ পাওয়া গেলো পথের ধারে ওকে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকতে দেখে কিছু লোক ওকে একটা সরকারি হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দেয়। জ্ঞান ফেরার পর অনেক চেষ্টা চরিত্র করে ওর থেকে কিছু ইনফরমেশন পাওয়া যায় যার সূত্র ধরে পুলিশ মুখার্জী গিন্নীর ছেলের সাথে যোগাযোগ করে। উনি আর ফ্ল্যাটের কয়েকজন মিলে সেখানে গেলে ওরা সেখানেই মায়াকে দেখতে পায়। কিন্তু ওকে যেনো চেনা যাচ্ছে না। মানসিক শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত একটা মানুষ। হসপিটাল থেকে ডাক্তার বলেন ওকে এই হসপিটালে রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব না উনি সম্পূর্ণ ভাবে মানসিক স্থিতি হারিয়েছেন এই চার দিনে ওনার মুখে শুধু দুজন মানুষের কথাই শোনা গেছে এক মা আর দুই পুতুল। অনেক কষ্টে ও মনে করতে পেরেছে ফ্ল্যাটের নাম আর জায়গা আর সেই সূত্র নিয়েই পুলিশ ওদের খবর দিয়েছে। এখন যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ওনাকে কোনো মানসিক হসপিটালে দিতে হবে শারীরিক ভাবে ও উনি সুস্থ নেই তার চিকিৎসা ওরা করছে কিন্তু তাড়াতাড়ি ওকে শিফট করা দরকার। এরপর ফ্ল্যাটের সবাই ওই হসপিটালের সাহায্য ও সহযোগিতায় ওকে একটি মানসিক হসপিটালে ভর্তি করে। ওকে যখন সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন ও সম্পূর্ণভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন একটা মানুষ না কেউকে চিন্তে পারে না কিছু বলতে পারে। দিন রাত মিলিয়ে ওর মুখে শুধু একটাই নাম পুতুল। আর যা ছিল তার উত্তর করো কাছে আছে কিনা আমার জানা নেই। ওর চোখদুটো একটাই প্রশ্ন সবার কাছে যেনো করছে “আমি কি করছিলাম? আমার অন্যায় কি”? কে দেবে এর উত্তর সত্যি কি আছে এর উত্তর করো কাছে? প্রথম প্রথম ফ্ল্যাটের কয়েকজন আসতো দেখতে কিন্তু মায়া তাদের কাউকেই চিন্তে পারতো না আর বেশি আসতো মুখার্জী দিদার ছেলে আসতে আসতে সবারই আসা কমতে থাকে। আর মায়ার পাকাপাকি ঠিকানা হয় মানসিক হসপিটাল। গল্পের শেষে যা পড়ে রইলো তা হোল” এক অভাগী আর তার একটাই প্রশ্ন কি দোষ আমার”।

Pages: 1 2 3 4 5 6
Pages ( 6 of 6 ): « পূর্ববর্তী1 ... 45 6

1 thought on “জিজ্ঞাসা || Pritha Chatterjee”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress