Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » জারুল চৌধুরীর মানিক জোড় || Muhammad Zafar Iqbal » Page 15

জারুল চৌধুরীর মানিক জোড় || Muhammad Zafar Iqbal

বাবা আমাকে আর লাবলুকে আর কখনো মারেননি। তার মানে এই নয় যে, বাবা একেবারে মহপ্রাণ মানুষ হয়ে গেছেন, হঠাৎ করে আমাদের জন্যে ভালবাসায় তার বুক উথলে উথলে উঠেছে। সেরকম কিছু হয়নি, বাবা আগের মতই আছেন। খারাপ মানুষেরা, নিষ্ঠুর হৃদয়হীন মানুষেরা হঠাৎ করে খুব ভাল হয়ে গেছে এগুলি শুধু গল্প আর উপন্যাসে পাওয়া যায়। সত্যিকারের জীবনে মনে হয় সেটা হয় না। যে খারাপ সে খারাপই থাকে, শুধু তার সাথে কোনভাবে বেঁচে থাকা শিখতে হয়। আমরা সেটা। শিখছি। আমি বাজি ধরে বলতে পারি, এখনো আমাদের মারার জন্যে বাবার হাত নিশপিশ করে কিন্তু আর সাহস করতে পারেন না। যদি তার ভেজাল ওষুধের কথা বলে দেই!

এমনিতেই আমাদের ছোট শহরটাতে আমার আর সলীলের বেশ নামধাম হয়েছে। খবরের কাগজে আমাদের ছবিও ছাপা হয়েছিল। আমি আর সলীল দাঁড়িয়ে আছি মাঝখানে একটা টুলে, জয়নাল বসে আছে। ছবি তোলার সময় ফটোগ্রাফার বলেছিল হাসি হাসি মুখ করে তাকাতে, জয়নাল একেবারে সবগুলি দাঁত বের করে হেসে ফেলল। খবরের কাগজের সেই অংশটা আমি কেটে রেখেছি, বাসায় কেউ এলে সুযোগ পাওয়া মাত্রই তাদের দেখাই।

নাওয়াজ খান আর ওসমানের বিচার শুরু হয়েছে। দুজনেই নাকি ঘাঘু মানুষ। আগের অনেক ইতিহাস আছে, জামিন পায়নি বলে জেলেই আছে। সবাই বলছে ফঁসি হয়ে যাবে দুজনেরই।

জারুল চৌধুরীর সাথে এখনো যোগাযোগ আছে। আমাদের হেডস্যারকে নিয়ে ফিল্ড ট্রিপে একবার তার বাসায় গিয়েছিলাম। নদী, জংগল, গাছপালা, গাছের উপর গাছঘর, দেখে সবাই একেবারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। জারুল চৌধুরী একটা নৌকা কিনেছেন, পিছনে ইঞ্জিন লাগিয়ে নাকি নৌকা ভ্রমণে বের হবেন। সাথে থাকবে দুই দিস্তা কাগজ। সেই কাগজে তিনি তাঁর বইটা লিখবেন –”শিশুদের ক্যালকুলাস”।

নাওয়াজ খানের পুরো ব্যাপারটা যেভাবে শেষ হয়েছে সেটাতে সবচেয়ে বেশি খুশি। হয়েছে লাবলু। বাবার মার খেতে হয় না বলে আজকাল সে অনেক হাসিখুশি থাকে। প্রতি রাতেই ঘুমানোর আগে বলে,স ভাইয়া, তোমরা কেমন করে নাওয়াজ খানকে ধরেছ গল্পটা বলবে?

আমি বলি, ধুর, গাধা! এক গল্প মানুষ কয়বার শুনে?

লাবলু বলে, বল না আরেকবার –মাত্র একবার।

আমি তখন তাকে গল্পটা আবার বলি। প্রত্যেকবারই গল্পটার সাথে আরো অনেক অনেক মালমশলা যোগ করি। অনেকখানি অতিরঞ্জন, নানারকম হাস্য কৌতুক, ঠাট্টা-তামাশা।

শুনে লাবলু একেবারে হেসে কুটিকুটি হয়।

কতদিন এভাবে চলবে জানি না। কিন্তু যতদিন চলছে ততদিন তো উপভোগ করে নিই! এই ছোট শহরে তো আর দৈনন্দিন এরকম বড় ঘটনা ঘটে না!

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
Pages ( 15 of 15 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1314 15

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *