Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রতকথা || Janmashtami Bratakatha

শ্রী কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রতকথা || Janmashtami Bratakatha

দিলীপ রাজকন বশিষ্ঠ মুনি প্রতি।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা শুনিতে সম্প্রতি।
ভাদ্র মাসে কৃষ্ণপক্ষে অষ্টমী তিথিতে।
কিবা হেতু জনার্দন জন্মেন ধরাতে।
বশিষ্ঠ কহেন রাজা শুন ভক্তি মনে।
নারায়ণ স্ব ত্যাজি কিসের কারণে।
এই পৃথিবীতে জন্মে দৈবকী উদরে।
সেই পুণ্যকথা বলি তােমার গােচরে।।

পূর্বকালে কংসাসুর নামে নরপতি।
অহঙ্কারে মত্ত হয়ে থাকি দিবারাতি।
পৃথিবীর দুঃখ দশা দেখি শূলপাণি
ক্রোধেতে অধীর হয়ে কহে এই বাণী।
দেবগণ চল যাই ব্রহ্মার সকাশে।
করিব উপায় আজি কংসের বিনাশে।।

অনন্তর মহেশ্বর দেবগণে লয়ে।
গমন করিল সবে ব্রহ্মার আলয়ে।
ব্রহ্মা তবে হংসপূষ্ঠে করি আরােহণ।
ক্ষীরােদ সাগরে যান লয়ে দেবগণ।।

সাগরের তীরে স্তব করে সুরগণ।
স্তবে তুষ্ট হইলেন দেব নারায়ণ।।

কিবা হেতু করেছ হেথায় আগমন
ব্রহ্মা বলিলেনপ্রভু করি নিবেদন।
শিববরে বলীয়ান হয়ে কংসাসুর।
পৃথিবীৱে দেয় সদা যাতনা প্রচুর।
মহেশ্বর দিল ব ভাগিনার হাতে।
নিধন হইবে কংস নহে অন্য হ’তে।
দৈবকী উদরে জন্ম করিয়া গ্রহণ।
পৃথিবীর দুঃখ দশা করুন মােচন নারায়ণ
বলিলেন দেব মহেশ্বর।
পার্বতীকে সাথে দেন একটি বৎসর।
কাৰ্য শেষে পুনরায় আসিবে চলিয়া।
এত বলি উমা রমা সাথেতে লইয়া।।

মথুরা উদ্দেশে যাত্রা করি নারায়ণ।
দৈবকী উদরে জন্ম করিলা গ্রহণ ।
ভাদ্র মাস কৃষ্ণপ্ অষ্টমী তিথিতে।
বুধবার রােহিণী নক্ষত্র নিশার্ধেতে৷৷

সৰ্বাধিক আলােকিত করিয়া শ্রীহরি।
ধরাধামে অবতীর্ণ শিশুরা ধরি।।

কেমনে রক্ষিব প্রভু কংস হাত হতে।
ভাবিয়া উপায় মােরা নাহি পাই চিতে৷৷

অন্তর্য্যামী নারায়ণ অন্তরে বুঝিল
পরিধান ত্যাজি প্রভু দ্বিভুজ হইল।
অনন্তর ভগবান হরির কৃপায়।
বাসুদেব শূল হইতে মুক্তি পায়।
মায়াময় শ্রীহরি আশ্চর্য্য মায়াতে।
রক্ষীগণ অচেতন হইল নিদ্রাতে।
যে সময়ে ভগবান আবির্ভূত হন।
যশােদা গর্ভেতে যােগমায়া ব্রহে জন্ম লন।
অতঃপর ভগবান কন বসুদেব।
নন্দালয় তারে রাখি আসিতে হইবে।
নন্দ-কন্যা যােগমায়া শ্রীভগবতীকে
আনায়ন করিয়া দিবেন দৈবকীকে।।

যেইকালে বসুদেব গমন করিল।
কারাগৃহে লৌহদ্বার মুক্ত হয়ে গেল।
মন্দ ম মেঘ গণে গর্জন।
মৃদুমন্দ বৃষ্টিধারা হে পতন।।

স্বয়ং অনন্তদেব সর্পরূপ ধরি।
বারি নিবারণ জন্য কৃষ্ণ শীর্ষোপরি ছত্রের মতন ফণা করিয়া ধারণ।
শ্রীবসুদেবের সাথে তিনি করেন গমন।।

এইভাবে বসুদেব যাইতে লাগিল।
যমুনার তা আসি উপস্থিত হ’ল৷৷ দু-কুলে বহিছে বান বসুদেব ভাবে।
কেমনে হইয়া পার গােকুলে যাইবে।।

হায় কি করিব বি কাঁদিতে লাগিল।
অন্তর্যামী নারায়ণ অন্তরে জানে।।

দেখিতে দেখিতে জল আসিল কমিয়া।
শিবারূপে পার হয়ে যা মহামায়া।।

শিবার পশ্চাৎ ধরি বসুদেব যান।
মায়া করি বারি মধ্যে পড়ে ভগবান।
বসুদেব কাদে পুনঃ শিরে হাত দিয়া
জলক্রীড়া করে কৃষ্ণ যমুনা লইয়া।।

যমুনার পূরে সাধ কৃষ্ণকে পাইয়া।
কিছুক্ষণ পরে কৃষ্ণ উঠিল ভাসিয়া।
সানন্দে বসুদেব তুলি নিয়া কোলে।
যমুনা হইয়া পার আসিল গোকুলে।।

অন্তর বসুদেব, আসিন্দালয়ে।
যশােদা নিকটে দে় কন্যা আছে শুয়ে।।

মহামায়া প্রভাবেতে গােপ-গােণী যত।
কেহ কিছু নাহি জানে সবে নিদ্রাগত।
যশােদাও পুত্র কিছু না বুঝেছে।
জানে কোন দেবরূপী জনম লভেছে।।

যােগমায়ারূপী কন্যা দৈবকীকে দিয়া।
বন্ধন স্থানেতে বসু আসি চলিয়া।।

যােগমায়া প্রভাবে পুনঃবন্ধন ঘটিল।
কারাগৃহ পুনরায় আবদ্ধ হইল।।

মহামায়া সদ্যজাতা শিশুর মতন।
ক্রন করিবামাত্র জাগে রক্ষীগণ।
এক রক্ষী কংসপাশে করিয়া গমন।
দৈবকী প্রসব শিশু করে নিবেদন।।

বিদিত হইয়াক আসি কারালয়ে।
দেখিল দৈবকী কোলে কন্যা আছে শুয়ে।
ক্রোধে কংস ধরিবারে উদ্যত শিশুরে।
দৈবকী কন্যাকে হন জড়াইয়া ধরে।
অশ্রসিক্ত আঁখি নিয়ে বলে বারে বার।
প্রাণভিক্ষা দাও রাজা কন্যারে আমার।
না শুনিয়া তার কা পাপরূপী কংস।
শিশুরে করিতে চায় চিরতরে ধ্বংস।
ধরিয়া শিশুর পদ উদ্দ্ধেতে তুলিল।
শিলাপৃষ্ঠ লক্ষ্য করে নি্নে করিল।
কিন্তু সেই শিশু-কন্যা কংসহাত হাতে।
আরও উর্দ্ধে যায় উঠে না পড়ে শিলাতে।
কন্যা অষ্টভুজা হ মহাদেবীরূপে।
বলেন বচন দুরাচার কংস ভূপে।
দুষ্ট দুরাচার কংস শুনরে বচন।
কিবা লাভ হবে বধি আমার জীবন
তাের শত্রু যিনি তিনি বালক রূপেতে।
দিনে দিনে বর্ধিত হচ্ছে গাকুলেতে।।
অতএব নির্দ্দোষী দৈবকী বসুদো
হিংসা করি উভয়েরে কিবা ফল হ’বে।।

তারপর অষ্টভূজা মাতা ভগবতী।
গেলেন কৈলাসধামে যথা পশুপতি।।

মহাম বাক্য কংস করিয়া শ্রবণ।
বসু ও দেবকীর করে বন্ধন মােচন।
তৎপরে কিরূপে শত্রু করি বিনাশন।
পরামর্শ করে লয়ে মন্ত্রিগণ।।

জন্মাষ্টমী ব্রতকথা হ’ল সমাপন।
জয় কৃষ্ণচন্দ্র বলি ডাক সক্বজন।।

কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রত করে যেই সকল সদিচ্ছা তার হইবে পূরণ।।
রােগ শােক দূরে যায় শাস্তি পায় মনে।
জন্মাষ্টমী ব্রতকথা যেই জন শুনে।।
হে গােলক কৃষ্ণ প্রার্থনা চরণে।
এ অধমে কৃপা আপনার গুণে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *