জগদীশ বর্মণ
লেখক পরিচিতি
—————————
নাম : জগদীশ বর্মণ
জগদীশ বর্মণের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৮শে জানুয়ারি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার মির্জাপুর গ্রামে।ছোটবেলা কেটেছে সেখানেই এবং প্রাথমিক পড়াশোনা সেখানেই করেছেন।তারপর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম গারোপাহাড় জেলার ডালু নামে এক গ্রামে বেড়ে ওঠা। ডালুতে অষ্টম শ্রেণী পড়ার পর আসামের বরপেটা জেলা থেকে মাধ্যমিক ও আই এ পাস করেন, তারপর গারোপাহাড়ের ‘ তুরা গভরমেন্ট কলেজ’ থেকে স্নাতক হন।পেশায় তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক।দীর্ঘদিন তিনি ‘ ডালু গভরমেন্ট ইংলিশ হাই স্কুল’ এর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
কর্মজগতের বাইরে তিনি ছিলেন একজন কবি, গল্পকার, শিল্পী ,গবেষক, সমাজ সেবক এবং রামকৃষ্ণ আশ্রমের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ।স্কুল জীবন থেকেই তিনি লেখা লেখি করতেন ,ছবি আঁকতেন এবং গান গাইতেন। ব্যাঞ্জো বাজাতেন অসাধারণ ।পরবর্তীতে রামকৃষ্ণ আশ্রম ,মঠ ও সেবা সংঘের নানা সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তিনি এবং কিছু সহৃয় ব্যক্তির প্রচেষ্টায় গারোপাহাড়ের ডালু গ্রামে গড়ে তোলেন রামকৃষ্ণ মন্দির ও স্কুল যা ‘ডালু রামকৃষ্ণ সেবা সংঘ’ নামে পরিচিত এবং এই সেবা সংঘের প্রথম সম্পাদক হিসেবে তিনি দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি রামকৃষ্ণ ঠাকুরের ওপর অনেক গান রচনা করে নিজেই সুর করে গেয়ে গেছেন।এসবের পাশে লেখা লেখি এবং বিবেকানন্দের ওপর গবেষণা মূলক পড়াশোনা করতেন প্রচুর । স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা থেকে অনেক পাঠ তিনি স্থানীয় গারো ভাষাতে অনুবাদ কার্যে মূখ্য ভুমিকা গ্রহণ করেছিলেন এবং চেরাপুঞ্জি রামকৃষ্ণ মিশন থেকে তা প্রকাশ করেছিলেন যাতে মেঘালয়ের গারো জনজাতি বিবেকানন্দের বাণীর শিক্ষণীয় বিষয় গুলো জানতে পারে।১৯৮২ সালে উনার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অন্তরের অজন্তায় ‘ প্রকাশিত হয় । প্রতিটি বর্ণের অনুপ্রাসে লেখা এই কাব্যগ্রন্থ এবং যতদূর জানা যায় তিনিই প্রথম বাংলাভাষায় এই ধরনের কাজ করেছিলেন। ১৯৯০ সালের কলকাতার বই মেলায় বইটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কতৃক বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয় এবং সরকারী গ্রন্থাগার গুলোতে বইটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। কলকাতার ‘রূপকথা’ সাহিত্যগোষ্ঠীর আয়োজিত সর্বভারতীয় কবিতা প্রতিযোগিতায় তিনি সন্মানিত হয়েছিলেন।উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন। কলকাতার শুকতারা, নবকল্লোল, সাহিত্যরূপা, যুগচেতনা, রূপকথা , নবীনের স্বপ্ন প্রভৃতি ম্যাগাজিনে নিয়মিত বা অনিয়মিত ভাবে তাঁর লেখা বেরতো। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি নানা সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর তিনি পরলোকগমন করেন।
লেখকের সৃষ্টি
শাঁকচুন্নি || Jagadish Burman
শুয়ে শূন্যে শাঁকচুন্নিকরছে কত কসরৎ-তার তরে তালতলাতেরাক্ষসটি রুখে রথ। শুধায়
পতিতপাবন || Jagadish Burman
যখনি যমযাতনায় যায় যামিনী যোগীশ্বরতখনি তব তরণীতে তোল তাপিত তনু
শারদা || Jagadish Burman
শারদা শোভাময়ী শরতের শিশিরসিক্ত শেফালিতেরণরঙ্গিনী রক্তদন্তিকা, রূপে রাজে রণাঙ্গনে।দনুজদলনী দেবী
শারদ উপহার || Jagadish Burman
শারদা শঙ্কাহরা শুভঙ্করীরক্তপায়ী রক্তবীজ রোধিনী রক্তদন্তিকাদনুজদলনী দশভুজা দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। উপাস্য
শারদ আহবান || Jagadish Burman
শরতে শারদা শোভাময়ী শুভ্র শিউলিতে,রমনীয় রকমারি রোশনি রচিয়াতেজোময়ী তোমার তরে
ইচ্ছার ইতি || Jagadish Burman
ইচ্ছাময়ের ইনামইন্দু,ইন্দীবর ,ইন্দ্রচাপ ;ইরার ইলাতে ইন্দীবরইলে ইন্দু ইতুর ইত্তিহাদ !ইত্যাকার
সোমেশ্বরী || Jagadish Burman
সোমেশ্বরী ,সুন্দরী সোমেশ্বরী ।সর্পিল সোমেশ্বরীরসফেন সলিলেসুমধুর সংগীত ;সেতো সজনীরসুমধুর সংলাপ
রাঙাব রজত রোদ্দুরে || Jagadish Burman
রাতের রংমহলে রংবেরং রোশনাই ,রজনীগন্ধা, রই রই রুনুঝুনু রব,রঙ্গরসে রত
ঐশ্বর্যবতী || Jagadish Burman
ঐশ্বর্যবতীর ঐরূপঐচ্ছিক ঐকল্যঐকাহিক ।ঐতো ঐশ্বর্যবতীরঐন্দ্রজালিক ঐক্যতানের ঐশ্বর্যঐহলৌকিক ঐন্দ্রিয়ক । শব্দার্থঃঐকল্য
ঈষিতার ঈর্ষা || Jagadish Burman
ঈষিতা,-ঈর্ষানু ঈষিতা ।ঈথরে ঈথরেঈষিতার ঈর্ষা ,ঈর্ষান্বিত ঈষিতারঈক্ষিত ঈক্ষণেঈদৃক্ষা ঈর্ষা ।
ছক্কুমিয়ার ছোড়াছুড়ি || Jagadish Burman
ছন্নছাড়া ছক্কুমিয়ারছ ‘ ছয়টি ছোড়াছুড়িছিপছিপে ছিঁচকাঁদুনেছায়ামূরতির ছিরি । ছক্কুর ছাগলদাড়িতেছাড়পোকার
কাঠঠোকরার কুটুরকাটুর || Jagadish Burman
কচি কলমের কল্পনাতেকোকিল কাঁদে কাহারবাতে ।কাঠঠোকরার কুটুরকাটুরকোলাব্যাঙের কাতরানি-কাঠবিড়ালি ক্যামেরা কাঁধেকরছে
লোকটা || Jagadish Burmanb
আজ লোকটা থমকে দাঁড়ালো ।ফর্সা মুখশ্রীটা এখন তামাটে ,শিথিল চামড়ায়
কাব্যের অব্যক্ত কান্না || Jagadish Burman
কৈশোরস্মৃতির মণি-মঞ্জূষা কখন জানিনাহয়ে গেছে নীরব সমাধি,ভরে গেছে পুরনো স্বপ্ন-মমির
রক্তগোলাপ || Jagadish Burman
হেলে দুলে চলেছ তুমি ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপনেপেছনে ফিরে তাকানোর তোমার
মিছিলের অন্তরালে || Jagadish Burman
মিছিল-সাপের দেহ বাড়ে দিন দিন-শ্লোগানে বিষের বাঁশীর কাব্য !শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাটের
বৈচিত্র্যই সুন্দর || Jagadish Burman
বৈচিত্র্যই স্বাভাবিক-সুন্দর অপরূপবৈচিত্রেই প্রকাশ সৌন্দর্যের স্বরূপ ।অনন্ত অন্তরীক্ষের অনুপম সৌন্দর্যযত
শান্তির সনেট || Jagadish Burman
লাঞ্চিত মানবাত্মার মুক্তির সংগ্রামীতাপস যে স্থান পেলো কারা-তপোবনকৃচ্ছ্র সাধনের তরে।
বিপ্লবী যৌবন || Jagadish Burman
ন্যাড়া শিমুলের রাঙা রক্ত নিয়েবসন্ত-হৃদয়ের লিপি তোমায় লিখি ।বাতায়ন খোলে
আমরা মানুষ || Jagadish Burman
সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ জীবআমরা মানুষ ।মর্গে আমাদের ভাইয়েরবেওয়ারিশ মড়া পচে ,আবার
মজুর দর্পণ || Jagadish Burman
ঘুম ভাঙ্গায় ওদেরভোরের সাইরেনের ডাক,-ওরা চিমনির কালো ধোঁয়ার খোরাক। বসুন্ধরার
স্বপ্ন-ভঙ্গ || Jagadish Burman
নিঃসঙ্গ নিশীথ শয্যায় চলেঘুমনোর নিরন্তর লড়াই ,মনের খাতা ভরে যায়বেকারের
পালা বদল || Jagadish Burman
যুগ-যন্ত্রণার শিকাররক্ত-মাংসেরএকটা নরম দেহঊষার মরুগর্ভেশক্ত পাথর অহল্যা,-কাঁদে- গুমরে কাঁদে !জীবনটা
অপূর্ব দৃশ্য || Jagadish Burman
নিদাঘ-তপ্ত চাঁদোয়ার নীচেঘামে নেয়ে ওঠা রিকশাওয়ালাররগ বেরিয়ে আসা শীর্ণ পায়ের
নিসর্গের নিয়তি || Jagadish Burman
বিরাটত্বের সম্ভাবনায় ভরা অঙ্কুরিত বীজটামেদিনী ফুঁড়ে উঁকি দিয়ে নিয়নের আলোর
মেকী সভ্যতা || Jagadish Burman
প্রাগৈতিহাসিক যুগেরপ্রপিতামহের অরণ্যের সভ্যতাকেতাচ্ছিল্য ভরে আটকে রেখেছিইতিহাসের পাতায় ।পুরনো সভ্যতার
বিফল স্বপ্ন || Jagadish Burman
জীর্ণ খড়ো ঘরের স্যাঁতসেঁতে মেঝেতেছেঁড়া মাদুরের ফুলশয্যা ।দুটি উষ্ণ প্রাণের
ইচ্ছে করে || Jagadish Burman
আমার ইচ্ছে করেসমাজের পরতে পরতে সঞ্চিতভিসুভিয়াসের বিষাক্ত লাভাকেপ্রাণদায়িনী মন্দাকিনীতে রূপান্তরিত
রক্ত নৈবেদ্য || Jagadish Burman
মা-মাগো,আর কেঁদো না তুমি ।সময় আসন্ন মাগো,তব শুভ মুক্তি সাধন
নীরব কেন || Jagadish Burman
মাগো,অচল মৌন হিমাদ্রি সমবধির পাষাণী দেবী হয়েআর কতদিন নীরব রবে
শতাব্দীর দর্পণ || Jagadish Burman
শতাব্দীর অগ্নি-লগ্নে জন্মেআমি অবাক!কেউ বাজালো না মঙ্গল শাঁখদিল না উলুধ্বনিশুধু
রোজ নামতা || Jagadish Burman
(১)সাতটি বার ফেল মেরেছেলে করল রিটায়ারপার্টিতে নাম লাগিয়েছেকরবে এবার দেশোদ্ধার
জবা || Jagadish Burman
জ্বালাময় জীবনের জিজিবিষাজগত জননীর জবায়।জাগো,জাগো জবা,জাগ্রত জীবনের জঠর জ্বালাজুড়াবে জননীর
ঘোষালদের ঘরজামাই || Jagadish Burman
ঘোষালদের ঘরজামাইঘণ্টারাম ঘুমকাতুরে ,ঘন ঘন ঘাড় ঘুরিয়েঘুষি ঘুষায় ঘুমঘোরে। ঘণ্টারামের
চিড়িয়াদের চড়ুইভাতি || Jagadish Burman
চিড়িয়াদের চড়ুইভাতিচৌধুরীদের চাতালে,চড়াই চাপায় চচ্চড়িচন্দনায় চাউল চালে। চতুর চিলে চটপটিয়েচুনো
আমি আসছি || Jagadish Burman
ভোরের মৃদু হাওয়ায়থরথর শুভ্র শিউলি,শিশিরের রুপোলি মুক্তো বুকে ধরেঅপেক্ষায় চয়ন
অপরূপা || Jagadish Burman
অপরূপা অতুলনীয়াঅসূর্যম্পশ্যা অনিন্দ্য অনন্যা।অধরে অস্তগামী অরুণেরঅনুপম অলক্তরাগ ;অভিসার অভীপ্সু অন্তরঅপরূপার
আমায় ভয় দেখিও না || Jagadish Burman
আমায় ভয় দেখিও না,তোমার ছোবলের বিষ কণ্ঠে ধরেনীলকণ্ঠ হতে আমি
ইচ্ছার ইতি || Jagadish Burman
ইচ্ছাময়ের ঈষিকায়ইন্দ্রচাপের ইশারা ;ইরার ইলাতে ইন্দীবর,ইথে ইন্দু ইতুর ইত্তিহাদ !ঈশ্বরের