ছাতার কথা
গাড়িতে উঠতে উঠতে বাবলি বলল, আচ্ছা তোমাদের তো গুগল ম্যাপে ইস্ট্রাকশন থাকে কোথার থেকে প্যাসেন্জার তুলতে হবে, তাহলে বুঝতে পারছিলে না কেন? আর এ জায়গার সম্পর্কে বিস্তারিত ফোনেও বলেছি। কত দেরী হয়ে গেল বলতো!
ওটিপি নম্বর বলতে বলতে দেখলাম ড্রাইভারের বয়স বড়জোর কুড়ি -একুশ হবে।
আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর মাঝে ছেলেটার সাথে বেশ অনেক কথা হলো। হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করার পর বছর খানেক হলো এই পেশায় এসেছে।এই বেহালা রুটটায় আজ ওর প্রথম দিন তাই খানিকটা সমস্যায় পড়েছে।
আমি বললাম বেশ; এবার আমাদের তাড়াতাড়ি পৌঁছে দাও ভাই সারথি ।
ওদিক থেকে উত্তর এলে আমি মনোজ দিদিভাই…
নিজেকে কেমন বোকা বোকা মনে হলো অহেতুক কৌতুকে। অবশেষে আমাদের গন্তব্য স্থান বড়মামার বাড়ি এসে পৌঁছালাম। আমি মিষ্টির বাক্সটা ও সাথে দু’একটা প্যাকেট ছিল তা গুছিয়ে নামিয়ে নিতে ব্যস্ত আর বাবলি ড্রাইভারকে ভাড়া মেটাচ্ছিল। ড্রাইভার পরের ট্রিপের যাত্রীর সাথে কথাবার্তায় ব্যস্ত। আমাদের ছাতাটা সিটে পড়ে আছে দেখে বাবলিকে বললাম, ‘ছাতা নে ‘। এর মধ্যে আবার ড্রাইভার মনোজ ঘাড় ঘুরিয়ে এই জায়গাটার ঠিক কি নাম জানতে চাইল,মনে হয় ওর প্যাসেঞ্জার জানতে চাইছে লোকেশনটা, পরমুহূর্তেই দেখি মনোজ ফোনে বলছে ছাতানে স্যার। আমি অতোটা মনোযোগ না দিয়ে আবার বললাম ছাতা নে বাবলি,,,, মনোজও দেখি ফোনে বারবার বলে যাচ্ছে, স্যার আমি ছাতানে’তে আছি কোনদিকে ঘুরবো বলে দিন। আমার বোধগম্য হওয়ার আগেই বাবলি চেঁচিয়ে উঠলো মনোজের উপর, তু কিউ ছাতানে ছাতানে বলতা হ্যায়? বল্, একডালিয়া মোড়। ফোনের ওপারের লোকটার কথা ভেবে হাসিতে ফেটে পড়লাম যদি আমার মতো প্রবাসী বাঙালী না হন, তবে নিশ্চয়ই ভীমড়ি খেয়েছেন।