চোর-পুলিশ
এ যেন সুকুমার রায়ের ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল, সেইরকম। ছিল তাল গাছ, হয়ে গেল বেড়াল। দুদে দারোগা বঙ্কুবাবু তো তাজ্জব। শুধু তাজ্জব নন, রীতিমতো হতবাক। থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন কেষ্টনগরের পুতুলটি হয়ে।
আসছিলেন কেকরাডিহি থেকে একটা তদন্ত সেরে। দুদিন আগে সেখানে দুদলে খুব মারপিট-রক্তারক্তি হয়ে গেছে। তদন্ত সারতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গের দুজন বন্দুকধারী সেপাইকে সেখানকার শান্তিরক্ষার ভার দিয়ে বন্ধুবাবু সাইকেলে চেপে একা থানায় ফিরছিলেন। কেকরাডিহির বিশাল মাঠের মাঝামাঝি পোঁছে চাঁদ উঠেছিল। কাঁচা রাস্তায় বড় ধুলো। তাই আস্তে সাইকেল চালিয়ে আসছিলেন আর অভ্যাসবশত গুনগুন করে গানও গাইছিলেন। তারপর সামনে দেখলেন একটা বাজপড়া মুন্ডুহীন ঢ্যাঙা তালগাছ। সেই সময় হঠাৎ মনে পড়ছিল, আসার পথে তো এমন কোনও তালগাছ দেখেননি! সেজন্যই একটু অবাক হয়ে সাইকেলে ব্রেক কষেছিলেন। তারপর এই অদ্ভুত ঘটনা।
তাঁর চোখের সামনে জ্যোৎস্নারাতে ওই উটকো তালগাছটা হঠাৎ খাটো হতে হতে বেঁটে হতে-হতে মাটির ভেতর যেন সেঁধিয়ে যাচ্ছে। টর্চ আছে সঙ্গে। ঝটপট জ্বেলে দেখলেন। তালগাছটার জায়গায় একটা কালো বেড়াল নীল জ্বলজ্বল চোখে তাকিয়ে তাঁকে দেখছে।
পুলিশকে ভূতের ভয় করতে নেই। তাছাড়া ওটা ভূত কি না সেটা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। বন্ধুবাবু সেজন্যেই খুব রেগে গিয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন, তবে রে!
কালো বেড়ালটা তবু গ্রাহ্য করল না। তার চেয়ে বিচ্ছিরি ব্যাপার, টর্চটাও গেল বিগড়ে। সুইচ টেপাটেপি করে আলো জ্বলল না! তখন সাইকেল থেকে নেমে বঙ্কুবাবু সাইকেলটা দাঁড়ি করিয়ে রেখে পিস্তল বের করলেন, পিস্তল তাক করে ট্রিগারও টানলেন। গুলি বেরুল! বিকট ফটাস আওয়াজও হল। কিন্তু বেড়ালটার গায়ে গুলি বিধল না। তখন আরও খাপ্পা হয়ে ফের গুলি ছুঁড়তে থাকলেন। পিস্তলটাতে আরেকটা গুলি। সাতটা গুলি খরচ হয়েছে, এমন সময় যেটা ছিল বেড়াল, সেটা হয়ে গেল একটা মানুষ। তারপর সেই মানুষটা খি-খি করে খুব হেসে বলে উঠল,–খামোকা গুলি খরচ করে কী লাভ দারোগাবাবু?
বন্ধুদারোগা মানুষের কথা শুনে ভড়কে গেলেন বটে, কিন্তু মুখে সাহস করে গর্জে উঠলেন, তুই কোন ব্যাটা রে?
–আজ্ঞে, আমি সেই পাঁচু।
বঙ্কুবাবু এতক্ষণে সঠিকভাবে বুঝতে পারলেন, তিনি ভূতের পাল্লায় পড়েছেন। তালগাছের বেড়াল হয়ে যাওয়া চোখের ভুল হতেও পারে, কিন্তু মানুষ হয়ে পাঁচুতে রূপ নেওয়াটা তো আর চোখের ভুল বলা যাবে না। তার ওপর কথাও বলছে। তার চেয়ে বড় কথা, এই পাচু ছিল ধড়িবাজ এক সিঁদেল চোর। সম্প্রতি রোগে ভুগে সে মারা পড়েছিল। তার সঙ্গে কেকরাডিহির মাঠে রাতবিরেতে দেখা হওয়াটা সহজ ব্যাপার নয়। বন্ধু দারোগা মনে-মনে ঠিক করলেন, এসব ক্ষেত্রে আপস করাই ভালো। তাই তিনিও খিকখিক করে হেসে বললেন,–তুই তাহলে পাঁচু? তা এখানে দাঁড়িয়ে কী করছিস তুই?
পাঁচু-চোরের ভূত অবাক হয়ে বলল, আমাকে আপনার ভয় করছে না দারোগাবাবু?
–একটুও না। চোরকে পুলিশ কখনও ভয় করে? ভয় করলে পুলিশের চাকরি থাকে রে?
–কিন্তু ভূতকে? আমি যে মরে ভূত হয়েছি, দারোগাবাবু।
–মরলে লোকে ভূত হয়, এ আবার নতুন কথা কী? আমি মরলে আমিও ভূত হব।–বঙ্কুদারোগা খুব হেসে বললেন, তুই তো তালগাছ হয়েছিলি, তারপর বেড়াল হলি, শেষে ফের পাঁচু হয়ে গেলি। আর আমি হলে কী করব জানিস?
পাঁচুর ভূত আগ্রহ দেখিয়ে বলল, কী করবেন শুনি?
বঙ্কুবাবু ভরাট গলায় বললেন, কথায় আছে? স্বভাব যায় না মলে। বুঝলি কিছু?
–আজ্ঞে না।
–তুই একটা হাঁদারাম! আমি সারাজীবন দারোগাগিরি করছি। চোর-ডাকাত ধরা স্বভাবে দাঁড়িয়েছে। আমি যখন মরব, তখন সে স্বভাব যাবে কোথায়? তোর মতো চোরদের ধরব। বেদম পিটুনি দেব। ঠ্যাংদুটো বেঁধে ওপরে ঝুলিয়ে
কথা শেষ হওয়ার আগেই পাঁচুর ভূত চেঁচিয়ে উঠল, আরে তাই তো! তাই তো!–তারপর একেবারে অদৃশ্য হয়ে গেল।
বন্ধুদারোগা কিছু বুঝতে পারলেন না। বারকতক ওকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ধ্যাত্তেরি বলে সাইকেলে চাপলেন। রেগেমেগে এবার জোরে প্যাডেলে চাপ দিলেন। প্রচণ্ড বেগে থানায় ফিরে চললেন।…
পাঁচুর ভূত কেন এমন করে হঠাৎ উধাও হয়েছিল, বুঝতে কয়েকটা দিন দেরি হল বঙ্কুবাবুর। সিঁদেল চোর পাঁচুর মরার পর থেকে এলাকায় চুরিচামারি, বিশেষ করে সিঁদকাটা একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই রাতের পর আবার থানার লোকেরা একের পর এক এসে চুরির নালিশ করতে শুরু করল। চুরিগুলোও ভারি অদ্ভুত রকমের। সিঙ্গিমশায়ের জামাই এসেছে বলে থলে ভর্তি বাজার করে ফিরছেন। হঠাৎ থলেতে হ্যাঁচকা টান এবং ঘুরে দেখেন থলেটি শূন্যে ভেসে উধাও হয়ে গেল। বিন্দু–ঝি পুকুরঘাটে বসে থালা-বাসন মাজছে আর পেছনে রাখছে। বোয়া শেষ করে ঘুরে দেখে বাসনকোসন নেই। এমনকী বন্ধুবাবুর কোয়ার্টারেই এক রাত্তিরে সিঁদ। বঙ্কুবাবুর বাবা অনিদ্রার রুগি। সিঁদ কেটে চোর যেই পা দুখানা ঘরে ঢুকিয়েছে, সুইচ টিপে আলো জ্বেলে খপ করে পা দুটো ধরে ফেলেছিলেন। লিকলিকে কালো দুটো পা। কিন্তু ধরামাত্র হাত ঠান্ডায় জমে গেল। বাপস বলে ছেড়ে দিলেন। পাদুটোও সিঁদের গর্ত দিয়ে সুড়ুৎ করে বেরিয়ে গেল।
এবার বঙ্কুবাবু বুঝলেন কী হচ্ছে। খুব আফসোস হতে লাগল তার। কেন যে বলেছিলেন পাঁচুর ভূতকে, স্বভাব যায় না মলে, ভুলটা সেখানেই হয়েছিল। পাঁচু ছিল চোর। কিন্তু মলেও চোরের চুরির স্বভাব যায় না, পাচুর ভূতকে প্রকারান্তরে মনে পড়িয়ে দিয়েছিলেন বন্ধুদারোগা।
বড় ভাবনায় পড়ে গেলেন। চোর যতক্ষণ মানুষ থাকে, তাকে শায়েস্তা করতে পুলিশ ভূতই দরকার। বঙ্কুবাবু তো পাঁচু-চোরের ভূতকে পাকড়াও করার জন্য মরে যেতে পারবেন না! বালাই ষাট। এ বয়সে তিনি মরবেন কেন? স্বয়ং মহৎ কোনও কাজের জন্য প্রাণ দিয়ে মরা যায়, নেহাত একটা হিঁচকে চোরের জন্য প্রাণত্যাগ করার মানে হয়?
রোজ এদিকে নালিশেনালিশে জেরবার। জেলার ওপরওয়ালারাও চুটিয়ে ফলাও করে এই তল্লাটের চুরির খবর ছাপতে শুরু করেছে। সদর থেকে পুলিশ সুপার কড়া চিঠি লিখেছেন। স্থানীয় এম. এল. এ.-মশাইও বারবার এসে শাসিয়ে যাচ্ছেন। গণতন্ত্রের যুগ। গণ দরখাস্ত দিলে বন্ধুবাবুর চাকরি নিয়ে টানাটানি হতে পারে। বড় ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন বঙ্কুবাবু। আসল সমস্যাটা হল, এসব চুরিচামারি যে ভূতের কীর্তি সেটা তো বিশ্বাস করবে না ওপরওয়ালারা। সংবিধানে ভূত বলে কোনও কথা নেই। কোনও আইনকানুনেও নেই। স্থানীয় লোকের মতে, পাঁচুর কোনও শাগরেদেরই কাজ। কিন্তু সে যে কে তাও কারুর মাথায় আসছে না।
একদিন দুপুরবেলা মনমরা হয়ে থানার পেছন দিকে নিরিবিলি একটা আমতলায় বঙ্কুবাবু দাঁড়িয়ে আছেন, সেইসময় শনশনিয়ে বাতাস উঠল। একটা ঘূর্ণি হাওয়া ধুলোবালি শুকনো পাতা উড়িয়ে গাছটাকে নাড়া দিল। চোখে ধুলো ঢোকার ভয়ে চোখ বুজে ফেলেছিলেন বঙ্কুদারোগা। চোখ খুলে হকচকিয়ে গেলেন। সামনে একটু তফাতে আছেন তাঁর বন্ধু করালীমোহন। তিনিও এক দারোগাবাবু। অন্য একটা থানায় ছিলেন বলে জানতেন। বহুদিন দেখাসাক্ষাৎ নেই দুজনে। বঙ্কুবাবু খুব খুশি হয়ে বললেন,–আরে? করালী যে! তুমি হঠাৎ কোত্থেকে?
করালীমোহন মিটিমিটি হেসে বললেন,–শুনলাম খুব ঝামেলায় পড়েছ চুরিচামারি নিয়ে। তাই ভাবলুম গিয়ে জেনে আসি ব্যাপারটা কী।
বঙ্কুবাবু বললেন,–বলছি। কিন্তু তুমি এখন কোন থানায় আছো? খোঁজখবর পাইনে। সদরে কনফারেন্সে গিয়েও তোমাকে দেখতে পাইনে। নিশ্চয়ই অন্য জেলায় বদলি হয়ে গেছ?
করালীমোহন বললেন, বদলি হয়েছি, সেটা ঠিক। তবে তোমার প্রবলেমটা আগে শুনি।
বঙ্কুবাবু সংক্ষেপে পাঁচুর ভূতের সঙ্গে দেখা হওয়া থেকে শুরু করে সবটাই বললেন। শোনার পর করালীমোহন হেসে অস্থির,-এই কথা? ঠিক আছে? আমি দেখেছি ব্যাটাকে।
–কী করে দেখবে? ব্যাটা তো মানুষ নয়, ভূত।
করালীমোহন হাতের বেটন নাড়া দিয়ে বললেন,–ভূতকে শায়েস্তা করতে ভূত চাই। বুঝলে তো?
–কিন্তু সেটাই তো সমস্যা। পাচ্ছিটা কোথায়?
–আছে, আছে।
করালীমোহন কথাটা বলার সঙ্গে সঙ্গে আবার একটা ঘূর্ণি বাতাস এল মাঠের দিক থেকে। ধুলো ঢোকার ভয়ে চোখ বুঝলেন বন্ধুবাবু। বাতাসটা চলে গেলে চোখ খুললেন। তারপর অবাক হয়ে গেলেন। করালীমোহন নেই।…
দিন দুই পরে বন্ধু দারোগা লক্ষ করলেন, থানায় আর একটাও চুরির নালিশ আসছে না। তারপর একদিন স্বয়ং এম. এল. এ.-মশাইও মিছিল করে এসে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে গেলেন। সদর থেকে পুলিশকর্তার প্রশংসার চিঠি এসে গেল। ব্যাপারটা কী?
করালীমোহন কি তাহলে ভূতের রোজা দিয়ে পাঁচুকে শায়েস্তা করে ফেলেছেন? করালীমোহন পাকা লোক বটে। তার চেয়ে আরও উঁদে দারোগা। তার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। নিশ্চয়ই রোজা লাগিয়ে ব্যাটাচ্ছেলেকে ঢিট করে ফেলেছেন। দুচ্ছাই, কেন যে ভূতের রোজার কথাটা তার মাথায় আসেনি।
তবে করালীমোহনের দৌলতে প্রমোশনের চিঠি পেয়ে গেলেন বঙ্কুবাবু। মফস্বলে শহরে একেবারে এস.ডি.পি.ও.-র পোস্টে প্রমোশন। অবিলম্বে জয়েন করতে হবে। রাত্তিরে জিনিসপত্তর বাঁধাছাদা হয়ে গেছে। ভোরবেলা রওনা দেবেন! আনন্দে ও উত্তেজনায় ঘুম আসছে না চোখে। আনন্দ প্রকাশ করতে নিরিবিলি গুনগুন করে গান গাওয়া অভ্যেস বন্ধুবাবুর। তাই থানার প্রাঙ্গণ পেরিয়ে খেলার মাঠটাতে গিয়ে দাঁড়ালেন। তেমনি জ্যোত্মারাত। বাতাস বইছে। সবে গুনগুনিয়ে রবীন্দ্রসংগীত ধরেছেন, আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে…এমন সময় হঠাৎ দেখতে পেলেন কালো মতো কী একটা সামনে আসছে। গানভঙ্গ হওয়ায় খাপ্পা বঙ্কুবাবু বললেন,–কে রে?
কালো মূর্তিটা দাঁড়িয়ে গেল। বলল, আমি স্যার!
–আমি কে? কী নাম? বাড়ি কোথায়?
–স্যার, আমি সেই পাঁচু।
বঙ্কুবাবু খি-খি করে হেসে বললেন,–পাঁচু! আয়, আয়! কেমন জব্দ হয়েছিস বল।
পাঁচুর ভূতও পাল্টা হেসে বলল, জব্দ হয়েছিলুম বটে দিন কতক।
–তার মানে?
–বুঝলেন না? করালীদারোগার নাতিগয়ায় পিণ্ডি দিয়ে ফিরে এসেছে। এখন করালীবাবু উদ্ধার হয়ে স্বর্গে চলে গেছেন। আর আমায় ঠেকায় কে? যাচ্ছিলুম হরিবাবুর বাড়ি সিঁদ কাটতে, আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ভাবলুম খবরটা দিয়েই যাই।
বঙ্কুবাবু চমকে উঠে বললেন, করালীমোহনের পিণ্ডি! কী বলছিস রে? করালী মারা গিয়েছিল বলেনি তো সেদিন?
কবে মরে ভূত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। পাঁচ-চোর বেজায় হাসতে লাগল। আপনার অবস্থা দেখে আমার পেছনে লেগেছিলেন কিছুদিন। উঃ, খুব ঠেঙিয়েছে। এখনও গা ব্যথা করছে স্যার!
ফোঁস করে শ্বাস ছেড়ে বন্ধুবাবু বললেন, আমার প্রমোশন হয়ে তো বড় ভুল হল দেখছি। তুই তো আবার লোকেদের জ্বালাতে শুরু করবি। নতুন দারোগাবাবুটির বয়স কম। ওরে পাঁচু, দোহাই তোকে, এ বেচারাকে ঝামেলায় ফেলিসনে বাবা!
পাঁচু বলল,–তা কি হয় স্যার? আপনিই তো মনে করিয়ে দিয়েছেন, স্বভাব যায় না মলে।
বলেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল। বন্ধুদারোগা তার উদ্দেশ্যে হুংকার ছেড়ে বললেন,–ঠিক আছে। আমায় মরতে দে। তারপর মজা দেখাচ্ছি। উইল করে যাব, যেন কেউ আমার জন্য গয়ায় পিণ্ডি না দেয়।
রাগে-দুঃখে বন্ধুবাবুর আগের মুড নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন জায়গায় গিয়েই উকিল ডেকে উইল লিখিয়ে তবে শান্তি।
একটু উপসংহার আছে। মফস্বল শহরের বুদ্ধিমান উকিলরা বন্ধুবাবুকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, নিজের পিণ্ডিদত্তের ব্যবস্থা বন্ধ করার বদলে পাঁচু চোরের পিণ্ডির ব্যবস্থা করলেই তো ল্যাটা চুকে যায়। কিন্তু দুঃখের কথা, বন্ধুবাবুর সে চেষ্টা সফল হয়নি। পাঁচুর ঝড়েবংশে কেউ ছিল না। তাছাড়া একজন চোরের নামে পিণ্ডি দেওয়ার লোকও খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে শোনে সেই বলে, পাঁচুর নামে পিণ্ডি দিতে গয়া প্যাসেঞ্জার ট্রেনে উঠে বসি, এদিকে আমার সর্বনাশ হয়ে যাক। আমি ওতে নেই বাবা! পিণ্ডি দেওয়ার আগেই পাঁচু ফতুর করে দেবে। ভূতের কান খুব সজাগ। নজরও কড়া।
সুতরাং বন্ধুবাবুর পক্ষে ভূত হওয়ার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে উপায় নেই।