চাহিদা পূরণ – পর্ব ৮
ল্যাপটপ খুলে বসে,হাতটাতে অল্প ব্যাথা অনুভব করলেও কাজ শুরু করে সুমেধা। ফোনে নেট অন করতেই বেশ কতগুলো ম্যাসেজ,ঐ ভাবে কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে, একটু সাবধানী হও, অনেক বেশি চোট লাগতে পারতো, অবশ্য সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ায় তোমার কাছে কোন সমস্যা নয়। অনেকবার ভাবলাম তোমার গাড়িটা দাঁড় করিয়ে একটু সেবার সুযোগ করে নিই কিন্তু অত সৌভাগ্য আমার কোথায়!!! সুমেধা কোনো উত্তর না দিয়ে নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণ পর চরু দা এসে বলে স্যার আপনাকে ডাকছেন। সুমেধা আস্তে আস্তে বসের কেবিনে পৌঁছায়।বস সুমেধাকে দেখে বলেন একি! আপনার চোট লাগলো কি ভাবে? চেয়ারে বসুন। সুমেধা চেয়ারে বসে বলে কিছু না স্যার আসার সময় একটি বাইকে ধাক্কা লাগে, এখন ঠিক আছি।
বস: হুম, একটু সাবধানে চলাফেরা করুন,যে জন্য ডেকেছিলাম, আপনি যে পিপিটি প্রেজেন্টেশন রেডি করছেন আগামী কাল আমাদের এক ক্ল্যায়েন্ট কম্পানির একজন অফিসার আসছেন, আপনি সুন্দরভাবে রেডি করবেন, কিছু ইনফরমেশন আমি প্রিন্ট করেছি,add করে নেবেন, আমি আর আপনি এই মিটিং attain করবো। কাল একটু তাড়াতাড়ি আসবেন,ভয় পাবেন না, বেশি সময় ধরে মিটিং চলবে না, একটু মুচকি হেসে হয়তো হাফডে হতে পারে। সুমেধা পেজগুলো তুলে নিয়ে বলে ঠিক আছে স্যার আমি যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি আসতে চেষ্টা করবো।বস: চেষ্টা নয় আসতেই হবে।বসের কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে নিজের কাজ নিয়ে বসে,রিক্তা তখনও ফোন নিয়ে ব্যস্ত, সুমেধা বলে কি এতো ম্যাসেজ করছিস, রিক্তা: তুমি বুঝবে না এবার সিরিয়াস একজনের প্রেমে পড়েছি। সুমেধা অল্প হেসে,দেখি বিয়ে অবধি পৌঁছতে পারিস কিনা… রিক্তা: এই তোমাদের দোষ, বিয়ের পর প্রেম থাকে? সুমেধার ফোন বেজে ওঠে, রিসিভ করতে দেবাংশু বলে আমার ফিরতে এখনো তিন চারদিন লাগবে, ছেলের প্লে স্কুলের মিটিং এ যেতে পারবে? ঐ জন্য বলেছিলাম পরের বছর ভর্তি করো, কিন্তু কে কার কথা শোনে.. একটানা কথাগুলো বলে যায় দেবাংশু। সুমেধা সুস্থিত ভাবে উত্তর দেয় ভর্তি যখন করা হয়েছে তখন মিটিং এ পৌঁছে যাবো তুমি চিন্তা করো না, নিজের খেয়াল রেখো। দেবাংশু হেসে উত্তর দেয় সেই জন্যই এতো ভালোবাসি, এখন রাখছি। রিক্তা কথোপকথন শুনছিল, সুমেধাকে বলে আমার প্রেম তোমার বিবাহিত জীবনের থেকে অনেক সুখের। সুমেধা একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে জীবনের অন্য অনেক মানে আছে, আত্মসুখী নাইবা হলাম। রিক্তা: মহান দিদি আমার। সুমেধা ধুর,তোর বিয়ে দিতে পারি আগে, দুজনে একসাথে হেসে ওঠে। সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরলে জোজো জড়িয়ে ধরে বলে আজ মামমাম শুধু আমার সঙ্গে খেলবে।ফ্রেশ হয়ে টুকিটাকি কাজ সেরে ছেলের সঙ্গে খেলতে থাকে সুমেধা, মনটা ভালো হয়ে যায়। রাতে খাওয়ার পর প্রেজেন্টেশন একবার দেখে নেয় পেনড্রাইভ থেকে, একটা চাপা টেনশন মনে হয়।শোয়ার আগে গান শোনার অভ্যাস সুমেধার, ইউটিউবে গান চালিয়ে শুনতে শুনতে না চাইতেও তদ্ভবের কথা মনে পড়ে যায়, ঠিক তখনই মোবাইলে ম্যাসেজ আগামী কাল দেখা হচ্ছে আমাদের… বহু প্রতীক্ষার অবসানে…..