চাহিদা পূরণ – পর্ব ৫
সুমেধা নিজের ঘরে এসে জোজোকে বলে ঘুমিয়ে পড়ো, কাল স্কুলে যেতে হবে তো, মনে মনে বলে কিডজির কৃপায় ছেলের কথা বলা বেশ সাবলীল।জোজোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আস্তে আস্তে গান গেয়ে শোনায় সুমেধা, জোজো আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়লে দুধারে পাশবালিশ দিয়ে দেয়। আনমনে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে দেখে একটা অচেনা নাম্বার থেকে মোবাইলে ম্যাসেজ তোমার পছন্দের ফুল, জানিনা এখনো তোমার পছন্দ একই আছে কি না, তবু পাঠালাম। সুমেধা ভাবে নতুন নাম্বার নিয়েছে তবে, কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন স্যুইচড অফ করে দেয়। সকালে তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে হবে,প্রয়োজনীয় ফাইল কমপ্লিট করতে হবে, তাই ফাইল খুলে নিজের কাজ এগিয়ে রাখে, মনে মনে ঠিক করে অনলাইনে কাল সব পেন্ডিং ওয়ার্ক কমপ্লিট করে একদিন ছুটি নিয়ে জোজোকে বেড়াতে নিয়ে যাবে, সারাদিন গোমতীর কাছে থাকে, মনে মনে বলে আমি একাই যথেষ্ট জোজোকে মানুষ গড়ে তোলার জন্য, দেবাংশু যতটুকু হেল্প করে ঠিক আছে, কিন্তু জোজো যেন একাকিত্বের সমস্যায় না ভোগে, ঠাকুমণিকে সব সময় টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখে মাঝে মাঝে রেগে ওঠে,আধো আধো গলায় যখন বলে জানো মা ঠাকুমণি সব সময় টিভি দেখে, তখন সুমেধার মনে হয় জোজো একাকিত্বে ভোগে কিছুটা সময়। একটু আশেপাশে বাইরে বেড়াতে নিয়ে গেলে শিশু মনের সঠিক বিকাশ ঘটবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত বারোটা বাজে, বুঝতে পারেনি সময়ের কাঁটা কিভাবে এগিয়ে চলেছে,লাইট নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। চারিদিকে নিঝুম অন্ধকার,ঘুমের মধ্যে যেন শুনতে পায় ফিসফিস গলায় আমি আছি, সব সময় তোমার সাথে সাথেই,যদি তুমি চাও আমরা একসাথে নতুন সুরে গান বাধবো একটা পাহাড়ি গ্রামের পাশ দিয়ে যেতে যেতে,লাল সূর্য যখন আলো ছড়িয়ে দেবে পাহাড়ের গায়ে, সেই সুন্দর আলোর আভায় তোমার মুখের ঔজ্জ্বল্য করবো আবিষ্কার আবার নতুন করে। ঘুমটা ভেঙে যায় সুমেধার, আলোর স্যুইচ অন করে দেখে চারটে বেজে গেছে, কি মনে হয় বারান্দায় এসে দাঁড়ায় ভোরের সূর্যকে দেখবে বলে।