অনন্ত গুহার মাঝে কতকাল পরে আছে প্রাণহীন শতাব্দী প্রাচীন এক বিশাল ঘন্টা।
মরচে পড়েনি,
সূর্যের আলোতে এখনো রয়েছে প্রচুর ঝলকানি।
এখন পেয়েছে প্রাণ, কি অদ্ভুত মায়াবী টান!
সত্যের বিরুদ্ধে যেকোনো জিনিসেই,
সঠিকের উল্টো পথে কিছু ঘটলেই
প্রচন্ড শব্দে সজোরে নিষিদ্ধ ঘুঙুরের মতোফেটে পরে ঘন্টা।
থামতেই চায়না।
নিশ্চুপ হয়ে যায় পৃথিবী,
সূর্য তখন প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীকে
প্রচন্ড গতিতে ঘোরে সূর্য তার অক্ষপথে।
আগুন ছিটকায়।
হয়তো হাজার বছর পরে অন্য এক পৃথিবীর এমনি করেই জন্ম হবে।
ঘন্টা বাজে ঘন্টা বাজে ঘন্টা বাজে নিরন্তর।
কাল গোধূলি লগ্নে বড়ো মায়াবী চোখে অর্ধাঙ্গিনী এসে বলেছিলো,
” সারা জীবন তোমাকেই ভালোবেসে বয়ে গেলো বেলা।”
চেয়েও দেখিনি কোনোদিকে কোনো কালে কোনো গ্রহণের খেলা।
তুরীয় শব্দে ঝনঝনিয়ে বেজে উঠলো ঘন্টা।
আমি ছুটে বাইরে গেলাম ঘন্টাকে থামাতে।
পৃথিবী নিষ্ঠুর, সূর্য ঘুরছে পৃথিবীর চারদিকে লাট্টুর চেয়েও ভয়ংকর গতিতে।
তোলপাড় রসাতল,
পৃথিবী তবুও অবিচল।
হামাগুড়ি দিয়ে সন্ধ্যা এসে থামালো ঘন্টা।
এখন আর কোনো নেতা-মন্ত্রীর মিটিংয়ে যাওয়া হয়না।
শুধু ঘন্টার ভয়ে।
ঘন্টা শুধু বাজে, মানেনা কোনো শাসন।
যদি শোনে কোনো নেতা মন্ত্রীর ভাষণ।
পৃথিবীও আশ্চর্য রকম চুপ হয়ে যায়,
সূর্য তখন ঘরে পৃথিবীর চারপাশ।
বিশাখা, গৌরী, ববি, অনুরুপা, শ্যামলী এসে বলেছিলো তারা সব নাকি সুন্দরী।
জোনাকির আলোয় সাজানো পৃথিবী চুপ করে গেলো।
প্রচন্ড বেগে বাজলো ঘন্টা সঙ্গে দুন্দুভি।
সব পাখি উড়ে চলে গেল পৃথিবী ছেড়ে,
চাঁদ দেখা দিয়েও কোথায় পালালো।
সূর্য ঘুরছে বনবন করে।
ছুটে গিয়ে সমুদ্র পাড়ে দাঁড়িয়ে গণ্ডষে জল নিয়ে স্তব করি মহাকালের।
মহাকাল আসে,
হাসে।
তারপর জলদ গম্ভীর স্বরে বলে,
হয়না সুন্দরী কেউ বাহ্যিক আবরণে।
প্রয়োজন থাকে শিষ্ঠাচার, বিনয় আর বিদ্যা।
তবেই সে সুন্দরী,
টলটলে দীঘির জলের মতো।
প্রতিটি কোটরেই এমন এক ঘন্টা থাকে ,
কেউ গাছ হয়, কেউ পাখি, কেউ অনন্ত আকাশ।
ঘন্টা কিন্তু বাজে নিরন্তর।