গ্রহন(পর্ব-২)
দরজার কাছে দাসীর নূপুরের শব্দে বাস্তবে ফেরে নটী গুঞ্জা ,,,,,লক্ষণাবতীর হৃদয়স্পন্দন ,,,,রসিকজনমনহারিনী। মাঝে মাঝে একলা থাকার সময় ও ফিরে যায় ওর কৈশোরের ফেলে আসা সময়ে। দাসী এসে জানায় রসিকজনের সমাবেশ হয়েছে নাটমন্দিরে।গুঞ্জার অপেক্ষায় আছেন সবাই,,,,,,,,,।দাসী প্রসাধনে সাহায্য করে গুঞ্জা কে।কবরীবন্ধন ফুলসাজে সাজাতে সাজাতে দাসী বলে ,,,”মা,ভগবান তোমাকে রাজরানী হবার রূপ দিয়েছেন ।”গুঞ্জা বলে ,,”মাসী, রাজরানী তো দূর,কোন সাধারণের রানীই তো হতে পারলাম না গো !এই ঘেণ্ণ।র জীবনে আসতে বাধ্য করলো ঠাকুর! চেয়েছিলাম একজনের গৃহিনী হয়ে সুখে সংসার করতে, কিন্তু আমাকে সুখের সংসার থেকে ছিড়ে নিয়ে এসে এই রূপের হাটে র পণ্য করে দিলো ভগবান!বড় জান্ তে ইচ্ছে করে,আমার কি দোষ ছিলো বলো তো ?কেন চুরি হয়ে গেলাম ? কেন হাটে বিকোলাম , কেনই বা নটী হলাম?”
গুঞ্জার দুচোখের কাজল ধোওয়া অশ্রু কপোলের চন্দনতিলক কে ধুয়ে দেয় । দাসী আবার সযত্নে চোখ মুছিয়ে কপোলে অলকাতিলকা এঁকে দেয় ।
ভাবে বড় ভালো মেযেটা,,,,বড় সরল ।এই কুড়ি বছরে দাসীবেহুলা কে মায়ের মতো ভালোবাসে,,,মাসী বলে ডাকে। নটী গুঞ্জার খ্যাতি সারা লক্ষনাবতী জুড়ে !যেমন মিষ্টি দেখতে তেমনই সুকণ্ঠি।আর নাচের তো তুলনাই চলে না।মনে হয় যেন সাক্ষাত ঊর্বসী মর্তে নেমে এসে ছে।গুঞ্জার কাছে নৃত্যগীতই সাধনা । তাই অন্যা ন্য নটীর মতো
দেহের বেসাতি সে করেনা॥তার আসর নৃত্যগীতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ॥তবে রা জ পুরুষ ও শ্রেষ্টীদের
মনোরঞ্জন না করলে তো এই নগরীতে বাস করাই যাবেনা!তাই অনিচছা সত্ত্বেও মাঝে মাঝে কোন কোন রাজ পুরুষদের মনোরঞ্জনে বাধ্য হয় ॥বড় কষ্ট হয় ওর। নিজেকে ঘৃন্য মনেহয় ! কলুষনাশিনীর
জলে সব কলুষ ধুয়ে শুদ্ধ হতে চায় ও। ভোরে কাকপক্ষী ওঠার আগেই গঙ্গ।র ঘাটে যায় স্নানে॥
আলো ফুটলে নগরনটীকে দেখলে সকলে হামলে পড় বে,তাই এই ব্যবস্তা॥
সেদিন এক বিদেশী বণিকের মনোরঞ্জনে বাধ্য হয় গুঞ্জা! তার মুখে শোনে যে এক অদ্ভুতবাউল এসেছে গঙ্গ।র ঘাটে॥তার গানে পাষান গলে যায় ,সবার চোখে নামে করুণার অশ্রু ॥ ও যেন কাউকে খুজে বেড়াচ ছে!ওর গানে,ওর চেহারায় ,ওরচোখে সেই অচিনের সন্ধ।ন স্পষ্ট বোঝা যায়