গর্ভভাড়া
প্রফেসর প্রলয় ও বাসন্তীর একমাত্র কন্যা পরমা —-হঠাৎ কলেজে পড়াকালীন
মা- বাবার স্বপ্ন, ভালবাসা ভুলে গিয়ে বিয়ে করে বসে।
ওনারা যখন জানতে পারেন মেয়ে কারর সঙ্গে প্রেম চলছে– মেয়েকে বোঝানোর পরিবর্তে প্রচুর শাসন শুরু করেন–মারধোর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি হওয়াতে কলেজে যাবার নাম করে পালায়।
মা বাবা জানতেন না ছেলেটা কে?
কি করে?কোথায় বাড়ি?
জানবার চেষ্টাও করেননি।
পরমা দমদম বিমানবন্দরে যায়।টিকিট কেটে সোজা চেন্নাই।বিপুল পরমাকে চেন্নাই বিমানবন্দরে নিতে আসে ।
মারধোরের মাত্রা যখন বেড়ে যাচ্ছিল বিপুল চেয়েছিল পরমার বাবার সাথে কথা বলতে।পরমা জানত বিপুল বাহ্মণ নয়।তখন অন্য অজুহাত দেখাতো।
বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে আগেই তার বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল।ছেলে টা এত মোটা,বড়লোকের হোদলকুতকুত ছেলে।
বিপুলের বাড়ি দমদম ,মা বাবার একমাত্র সন্তান।বাবা ও মা একটা গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে।তখন ও সবে বি.টেক শেষ করে চেন্নাই চাকরি করছে।বিপুলের মাসতুতো বোনের বন্ধু পরমা।পরমা ও বিপুলের সম্পর্ক টা গড়িয়ে দেবার পিছনে মাসতুতো বোনের ই হাত ছিল।পালিয়ে যাবার বুদ্ধি সেই দিয়েছিল।
পরমা পালিয়ে যাবার পর পুলিশ বুলবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।সে কিছুই জানে না বলেছিল।
পরমা কিন্তু যাবার সময় চিঠি লিখে গেছিল ,”খোঁজ করো না”।
চেন্নাই পোঁছে ওরা মন্দিরে বিয়ে করে।রেজিস্ট্রি ও করে।তারপর ৫বছর এগিয়ে যায়।এম.এ পাশকরে পরমা।বাবা,মার কথা বন্ধুর বিয়ে হবার পর কিছুই জানতে পারে না।এখন একটু মনে পড়ে মার কথা।পরমা মা হতে পারছে না,কিছু সমস্যা আছে।সারোগেট মাদারের কোখে বাচ্চার জন্ম হচ্ছে।মেয়েটি বাঙ্গালী হিন্দু ঘরের বউ।স্বামী বিয়ের এক বছরের মধ্যে মারা গেছে।তা পরমার বাড়িতেই থাকে।নিজের থেকেই রাজি হয়েছে ৩লাখ টাকার বিনিময়ে।মেয়ে বাচ্চা হয়।পরমারা খুব খুশী।সারোগেট মাদার রমা ওদের সঙ্গে থাকে।
তিনমাস পরে ডক্টর মায়ের দুধ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। রমা কিছু বুঝতে পারছিল যে দাদা বৌদি তলে তলে কোথাও চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বাচ্চাকে চুরি করে নিয়ে রমা কলকাতায় পালিয়ে আসে।খোঁজ করে পরমা বাচ্চার সন্ধান পায় না।এই সময় পরমার বাচ্চার শোকে প্রায় পাগল অবস্হা।।
ওদিকে রমা বাচ্চা নিয়ে কলেজে পড়ান দিদিমনির বাড়ি কাজ করতে আসে।বাবুও পড়াতেন কলেজে।এখন অবসর নিয়েছেন কাজের থেকে।যতক্ষণ কাজ করে বাচ্চাটা দাদুর কাছেই থাকে।
রমার বাচ্চার বয়স এখন- তিন।
–বাবু ও গিন্নিমা বলেন আমার মেয়েকে নাকি তেনাদের মেয়ের মত দেখতে।
মেয়ে নাকিকয়েক বছর আগে মারা গেছে ।তাই ছবি রাখিনি।
একদিন কলিংবেল বাজে,
আরে মাসীমা কেমনআছেন?
মাসীমা বলে তুমি কে মা?
আমি পরমার কলেজের বন্ধু,কালই লন্ডন থেকে ফিরেছি।
হ্যাঁ মা চিনতে পেরেছি।
সন্ধ্যায় এসেছে বুলবুল—মাসিমা মেসোমশাই রাতের খাবার খাইয়ে ছাড়লেন।
রমার মেয়ে ওনাদের খুশীতে রেখেছে।। মাসিমা বাচ্চার মুখেভাতের ছবি দেখান।৩মাসের ছবি,৪মাসের….দেখেই থমকে যায় বুলবুল।কারণ ওর দাদা ও বন্ধুর বাচ্চার ছবি লন্ডনে পাঠিয়েছিল।এখনো ছবি মোবাইলে আছে।এই ছবিগুলি ও তুলে নেয়।কি করবে বুলবুল বুঝতে পারছিল না।
তুমি কোথায় থাকতে রমাদি?
তোমার কথায় একটা বাইরের টান।
হ্যাঁ গো দিদি বাইরে থাকতাম।
তারপর বুলবুল বাড়ি চলে যায়।
পরদিন বিকালে পরমা ও বিপুল আসে পরমার বাপের বাড়ি।ওদিকে বুলবুল পুলিশ নিয়ে পরমার বাপের বাড়ি যায়।
মা ও বাবা ঝকঝকে মেয়ে জামাই দেখে কাঁদতে শুরু করে।
কান্না শুনে রমা ছুটে আসে,ওদের দেখে হতবাক হয়ে যায়!!!
আর পরমা টাস টাস করে রমাকে চড় মারতে থাকে।
পুলিশ বাচ্চা চুরির দায়ে রমাকে ধরে।তিন লাখ টাকার বিনিময়ে ও কোখ ভাড়া দেয়।তাই বাচ্চাটা তার নয়।বাচ্চাটি পেয়ে পরমা হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।
মা ও বাবা তোমাদের কষ্ট দিয়েছিলাম
তো ——–!
অত্যন্ত ভাল লাগল