Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » খিচুড়ির গন্ধ || Maya Chowdhury

খিচুড়ির গন্ধ || Maya Chowdhury

খিচুড়ির গন্ধ

রচন্ড শীতের কাঁপুনি, সঙ্গে বৃষ্টির ঝিরিঝিরি বিন্দু গায়ে এসে পড়ছে।মোটা সোয়েটার সঙ্গে চাদরে নিজেদের মুড়ে যাচ্ছি আমাদের ঘরোয়া পিকনিকে। প্রত্যেকে খুব কর্মঠ, তাই গোরাবাজার থেকে এসে গেছে বড় বড় ফুলকপি_ বেগুন _মটরশুটি এবং চালডাল। বক্স খাটে থাকা বড় বড় নৌকাগুলো (বাসন) বের করলাম অতি সন্তর্পনে। তারপর একে একে হাজির হলাম মিলি দের বাড়ী। রাতের মেনু খিচুড়ি, বেগুনি, ফুলকপির রোস্ট, চাটনি। আহা! এখনই জিভে জল এসে গেছে। গ্যাসের মধ্যে চাপলো কড়াই। সেটার নাড়াচাড়া করার অনেকের চেষ্টা, চড়ুইভাতি বলে কথা। যদিও সবাই একবার খুন্তি ধরে ফিরে এলো গানের অনুষ্ঠানে। বাচ্চাগুলো একটা ঘরে চিৎকার করে নানা রকম খেলা খেলছে। আর মায়েরা নানা গল্প এবং নাচে মশগুল। বাবারা মাঝেমধ্যে এগিয়ে দেওয়ার কাজ করছে। কস্তুরী দি বরকে নিয়ে রান্নায় ব্যস্ত। দুর্দান্ত রান্না করেন। কিছুক্ষণ বাদে এল কফি। মন পোষাচ্ছে না। রেডি থাকা বেগুনি টা কখন যে ভাজা হবে। চোখ বারেবারে ওইখানেই আটকাচ্ছিল। প্রত্যেকের আমার মতো একবার যাচ্ছে আবার ফিরে এসে নানা গল্প। আমি বুঝতে পারছিলাম যে বেগুনি টা শুধু আমার নয় সকলের মন কেড়েছে। তারপর ফুলকপির রোস্ট নামানোর সঙ্গে সঙ্গে বেগুনি শুরু। গন্ধটাই তো পাগল করে দিচ্ছিল। এবার পলি দিদি বেগুনির ট্রে নিয়ে আমাদের কাছে। মনে হচ্ছিল হামলে পড়ি। বাইরে যা ওয়েদার। কিন্তু একটু তো সংযত হতে হবে। আগে বাচ্চারা, তারপর পুরুষেরা, তারপর বয়স্কদের মধ্যে আমার স্থান, তারপর যারা প্রচুর পরিশ্রম করে চলেছে তাদের। যাই হোক মনের সুখে গরম গরম বেগুনি খাওয়া গেল। কী অসাধারণ বেগুনি। একটার জায়গায় পাঁচটা খাওয়ার প্রবণতা। বাজারে গেলে আমার মানিব্যাগ ফাঁকা হয়ে যেত। আসলে আমি একটু কৃপণ। খাওয়ালে খেতে ভালবাসি।হাসছেন তো? এটা অনেকেই অবশ্য আছেন গোপন করেন। যাইহোক পেটে বেগুনি আর আমাদের নাচের ভঙ্গিমা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিল। শরীর দুলিয়ে কিছুক্ষণ অঙ্গভঙ্গি করার চেষ্টা। এখানেই তো আমাদের মজা। বাচ্চারা তাদের বেগুনি পর্ব সেরে আবার চিৎকার চেঁচামেচি করে খেলা শুরু করেছে। রান্নার গতি এগিয়ে চলেছে। কস্তুরী দি এগিয়ে চলেছেন তার বরকে সঙ্গে নিয়ে মহা উৎসাহে খিচুড়ি পর্বে। হাতা খুন্তি নিয়ে নাচ শুরু হয়েছে ঝিমলি দিদির। যদিও তিনি তার বাচ্চাকে পড়িয়ে একটু আসতে দেরি করেছেন। আমাদের প্রচুর মজা। একদিকে শীতের কাঁপন, অন্যদিকে পেটে বেগুনি, তারপর খিচুড়ির গন্ধ। রাত বাড়ছে। কিশলয় দাদা গন্ধরাজ লেবু গুলোকে টুকরো টুকরো করছেন। কিছুক্ষণ বাদে এসে গেল সুপারি পাতার থালা। গরম ধুয়ো ওঠা খিচুড়ি, প্রথমে দুটো পরে আরো তিনটে বেগুনি, ফুলকপির রোস্ট, লেবু ,চাটনি। অসাধারণ হয়েছে খিচুড়ি। বেশি বললে আপনারা জিভকে সংবরণ করতে পারবেন না। এতোটুকু বাড়িয়ে বলছি না। সেই ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি গলধঃকরণ একটা করে বেগুনির ঢেঁকুর এখনো প্রতিদিন আমাকে সঙ্গ দিচ্ছে। জয় কস্তুরী দিদির জয়। আমাদের পিকনিকের জয়। আবার ক দিন অপেক্ষা করতে হবে। ততদিন খিচুড়ির গন্ধটা বারে বারে ফিরে আসুক তার অমরত্ব নিয়ে। আগামী দিনে আপনারাও আসবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress