(১)
অস্ফুট প্রত্যুষ
পাখিটা ডেকেই ভাবলো ভোর কি হয়েছে?
শিরিষ গাছের মাথায় হলুদ পাখিটা ভাবলো ভোর হয়ে গ্যাছে।
জারুলের মাথায় সবুজ টিয়া গেয়ে উঠলো জয় হো।
চরাচর জুড়ে জেগে উঠলো বিহঙ্গের দল।
সমুদ্র পাড়ে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন দিনমানের ওঠার প্রতীক্ষায় ।
নববর্ষে সূর্যের কাছে কামনা করলে তাই নাকি ফলে যায়।
তাই তারা সমুদ্র পাড়ে প্রার্থনায়।
কুয়াশার চাদরে বিছানো প্রকৃতি জুড়ে,
একবার ভাবলেন দিনমান।
তারপর সব কিছু ভেদ করে সমুদ্র পাড় জুড়ে ধীরে ধীরে নববর্ষের প্রথম প্রভাতে।
কাল সারারাত এর প্রার্থনায় সমস্ত শহর বুকের কাপড় সরিয়ে উন্মাদ নৃত্য করেছে।
এখন তারা ক্লান্ত।
তবুও প্রভাকর ঠিক দিলেন শিশির সিক্ত দুহাজার তেইশের নতুন সকাল।
ওপারের প্রাঙ্গণে পাঁচিলটা গ্যাছে কোন বর্ষায়।
সেখান জুড়ে জঞ্জালের স্তুপ।
জঞ্জাল পাহাড় টপকে উঠে আসে তেইশের প্রভাকর।
তার হাতে নেই কোনো ফেষ্টুন
নেই কোনো ইঙ্গিত ইশারা।
(২)
এই বরষে অতি হরষে
দীঘল দীঘির মাঝে মাছগুলি খেলা করে
সমন লটকে আছে বহুদিন আগে ।
ইশারায় ডাক্তার বলে গেলেন,
সব একই আছে।
তবু দুহাজার তেইশ আজ হাসপাতালের দরজায় এসে হাসে।
সূর্য দেখবে বলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামী টা আরেকবার জেলের বাইরে আকাশ টা দেখতে চায়।
পাখি ওড়ে,
একটা ছোট্ট হলুদ প্রজাপতি উড়ে যায় ডানা মেলে।
হিসেব মেলেনা কবে তার মুক্তি?
নববর্ষ এলো।
(৩)
রক্তনয়ন
বড়ো টিনের বাক্সটা পিঠে নিয়ে হেঁকে হেঁকে চলে যায় বৃদ্ধ সে ফেরিওয়ালা।
দুটো মোয়া কিনবে বলে ব্যাগ উল্টে মা দেখে দশ টাকা হতে আরও দু-টাকা বাকি।
মেয়ে কাঁদে।
পাথরের দুটো চোখ তার ওপরে মেলে ধরে ভাই।
দিগন্ত কাঁপিয়ে নিনাদে বজ্রমুষ্ঠী আছড়ে পড়ে মেয়ের পিঠে।
মোয়া কিনে দিতে না পারার যন্ত্রণা।
দুহাজার তেইশ আজই শুরু।
(৪)
প্রাণের ধারায়
নদীর পাড়ে উদাসী ক্ষেপি ভালোবাসা চায়।
ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া বাসা বদলায়।
নববর্ষ এগিয়ে যায়।
চিকচিকে বালুকণা কি আশায় কি প্রত্যাশায় দুহাতে জড়িয়ে ধরতে দুহাজার তেইশের মিষ্টি মুখ।
সব এক আছে পাল্টায় না তো কোনো সুখ।
একটা জীবন, একটা পাতা খসে পড়লো টুপ।
নদী কিন্তু বয়ে চলেছে নিরন্তর।
আজ অপেরা হবে
বনানীর আঁচল জুড়ে
হৃদয়ে নাচন তাই।
সবই এক থাকে
তবুও বিশু টা রাংতার মুকুট পড়ে শুধু শুধু রাজা সাজে।
আজ দুহাজার তেইশ।