Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কোথাও পারি না যেতে || Shamsur Rahman

কোথাও পারি না যেতে || Shamsur Rahman

(টি , এস এলিয়টকে নিবেদিত)
আমরা ভেবেছিলাম খড়ে-ঠাসা মাথা নিয়ে শুধু
হবে না ঘুরতে আর সাত পুরুষের
বিধ্বস্ত ভিটায় কিংবা জনশূন্য অলিতে গলিতে
প্রলাপের ঝোঁকে
হবে না কুড়াতে বুঝি সময়ের সুতীব্র ধিক্কার।
যাত্রারস্ত হয়েছিলো মনে,
তোমাকে সুদূর কোনো পিতামহ ভেবে
মহানন্দে বাড়াবো পা নতুন যুগের চৌমাথায়।
হা কপাল! তোমারই গণ্ডিতে
এখনও রয়েছি বাঁধা, জানি
চুকানো যায় না ঋণ বুড়ো মোড়লকে
কানাকড়ি দিয়ে।
অস্তিত্বের চতুর্দিকে কখন দেয়াল
হয়ে গেছে গাঁথা,
এখন সেখানে মাথা ঠুকে
কী ভীষণ অর্থহীন অলীক ভাষায়
পরস্পর কথা বলি, ঘেন্নায় দেখি না মুখ কারো।
যখন-তখন ভয় পাই, চমকাই
নিজের বিকৃত ছায়া দেখে
আর মনে হয়
সবকিছু মেরামত সাপেক্ষ এখনো,
তাই ‘মিস্তিরিকে ডাকো’বলে
ভীষণ চেঁচিয়ে উঠি
সামনের সিঁড়ির পাশে
ধ্বংসের রাজধানীতে!
আমাদের চতুর্দিকে রাস্তা খোলা, তবু
কোথাও পারি না যেতে। কে এক চতুর
বাজিকর শস্তা কিছু আলোর খেলায়
সর্বদা মাতিয়ে রাখে, স্ফুর্তি জাগত!

বন্ধুর কামিজ কোর্তা অকাতরে নিজের বলেই
হামেশা চালিয়ে দিচ্ছি, আমি খাঁটি নবীন যুবক।

শস্তা নভেলের খালে চালাই নিরুদ্ধ কামনার
বেসামাল নৌকোটিকে। আমার ভোটাধিকার নেই
জীবনের নির্বাচন কেন্দ্রে আমি ব্যালট পেপার
হারিয়ে ফেলেছি যেন, পাতিপাতি করে খুঁজি তবু
পাই না হদিস তার। পক্ষান্তরে জীবনকে বলিঃ
কী খেল দেখালে ভায়া, বেধড়ক বসিয়েছো পথে
এবং নিয়েছো কেড়ে ছলে বলে সব পুঁজিপাটা।

প্রত্যহ বন্ধুরা বলেঃ “কেন শুধু আগুনের ঝড়ে
বল তো কিসের মোহে রাত্রিদিন পাখা পোড়াচ্ছো হে?
চেয়ে দ্যাখো কয়েকটি যুবা,-বাক্‌সর্বস্বের দল-
হাঁটু মুড়ে বেপরোয়া দুরাশার মহান চত্বরে
রাত্রিকে করছে পান ক্রমাগত চাঁদের গেলাশে!
তুমি শুধু ভয় পাও, যেন আর্ত হরিণের চোখে
জটিল লতার ছায়া, অথবা বাঘের থাবা কাঁপে।

উপদ্রুত কেরানীর বিশুষ্ক মুখের মতো যাচ্ছেতাই এক
অন্ধকারে আমরা স্বপ্নের
গলা টিপে নানাবিধ হত্যাকাণ্ডে মাতি,
কখনো আবার
জীর্ণ হোটেলের
টেবিলে চিবুক রেখে বলি, আমাদের মনীষাকে
বয়স্ক করেছো ভরে আমাদের সংকীর্ণ আকাশ।

জনাকীর্ণ পথে হাঁটি, আওড়াই ধ্যানমগ্নতায়ঃ
হতশ্রী জীবনে
কিছুটা পালিশ দাও প্রভু, জানতাম
একদা ফ্লেবস ছিল সুকান্ত পুরুষ, দীর্ঘকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *