রামায়ণ : কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড – শ্রীরাম লক্ষ্মণের দণ্ডকে ভ্রমণ ও তাঁহাদিগকে দেখিয়া সুগ্রীবাদি বাণরগণের পরস্পর তর্ক বিতর্ক
শ্রীরাম লক্ষ্মণ দোঁহে ভ্রমেণ দণ্ডকে।
সহায় করিতে যান বানর কটকে।।
দুই ভাই উঠিলেন পর্ব্বত শিখরে।
দেখিয়া বানর পঞ্চ শঙ্কিত অন্তরে।।
সুগ্রীব বলেন, দেখ আসে দুই নর।
মনে করি, বালি রাজা পাঠাইল চর।।
বুদ্ধির সাগর বালি বুদ্ধি ধরে নানা।
তত্ত্ব কর, সত্য মিথ্যা তথ্য যাব জানা।।
সুগ্রীবের বচনে বানর পালে পালে।
লাফে লাফে উঠে সব বড় বড় ডালে।।
সে গাছ সহিতে নারে সবার আস্ফাল।
ফল ফুলে ভাঙ্গে কত শাল-তাল-ডাল।।
বন জন্তু যত ছিল পর্ব্বত-শিখরে।
সিংহ ব্যাঘ্র মহিষ পলায় উচ্চৈঃস্বরে।।
হনুমান বলে, রাজা না হও চিন্তিত।
না দেখিয়া বালিরে হইলা কেন ভীত।।
বানর চঞ্চল জাতি লোকে উপহাসে।
চঞ্চল হইলে রাজা লোকে আরো দোষে।।
আমি গিয়া জেনে আসি কোথাকাব বীর।
তথ্য না জানিয়া কেন হইলে অস্থির।।
সুগ্রীব বলিল, দেখি তপস্বী উভয়।
কিন্তু ধনুর্ব্বাণ ধরে, মনে লাগে ভয়।।
হইবে তপস্বীবেশ রাজার কুমার।
ঝাট যাহ হনুমান, আন সমাচার।।
যান হনুমান বীর তপস্বীর বেশে।
পরম গৌরব ভাবে উভয়ে সম্ভাষে।।
রাম নাম স্মরণে যমের দায় তরি।
অনায়াসে মুক্তি হবে মুখে বল হরি।।
কৃত্তিবাস পণ্ডিতের মধুর পাঁচালী।
রচেন কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ডে প্রথম শিকলি।।