Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কার্ভালোর বাক্স (১৯৯৩) || Samaresh Majumdar » Page 5

কার্ভালোর বাক্স (১৯৯৩) || Samaresh Majumdar

ঠিক বারোটা নাগাদ ঘুম ভেঙে গেল অর্জুনের। ঘরের সবকটা দরজা-জানলা বন্ধ করে শুয়ে ছিল, যাতে চোখে আলো না ঢোকে। তবু ঘুম ভাঙল এবং আর এল না। খিদে পাচ্ছিল বেশ। মা বাড়িতে নেই। কাজের মেয়েটি রান্নাবান্না করে বসে আছে। স্নান সেরে ভরপেট খেয়েও নতুন করে ঘুম এল না। অমলদা বলতেন পৃথিবীর প্রতিভাবান মানুষরা দিনেরাতে চারঘন্টার বেশি ঘুমোন না। এই হিসেবে সে প্রতিভাবান মানুষের পর্যায়ে পড়ছে আজ! এটা এমন সময় যে, যার বাড়িতেই যাবে সে বিরক্ত হবে। অর্জুন বাইক বের করতে গিয়ে হোঁচট খেল। গতকাল সে ওটাকে থানায় রেখেই বেরিয়েছে। অতএব রিকশা নিয়ে থানায় পৌঁছে গেল সে। খবর নিয়ে জানল অবনীবাবু নিজের কোয়াটার্সে ঘুমোচ্ছন।

বাইকে চেপে অর্জুন ছুটল জলপাইগুড়ি বাইপাসের দিকে। ব্রিজ থেকে বাঁ দিকের চরে নেমে গেল সে। বালির ওপর বাইক চালাতে অসুবিধে হচ্ছিল। ওটাকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে সে হেঁটে চরের সেই জায়গায় গেল যেখানে নীল আলোর বেলুনকে সে প্রথম দেখেছিল। বালির ওপর কোনও ভারী জিনিস চেপে বসেছিল এখানে, অর্জুন স্পষ্ট দেখতে পেল। আর কোথাও কিছু নেই। বালি নিয়ে হাওয়া খেলা করে যাচ্ছে তিস্তার চরে। সে ফিরে এল বাইকের কাছে।

বেলা তিনটে খুব অসময় নয়। অর্জুন মহাদেব সেনের বাড়ির সামনে বাইকে এসে একটু ভাবল। তারপর এগিয়ে গিয়ে দরজার কড়া নাড়ার আগেই সেটা খুলে গেল। তিস্তা দাঁড়িয়ে আছে। অর্জুনকে দেখে হাসল সে, কাল দাদুকে সাত-তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার জন্যে আমরা সবাই আপনাকে ধন্যবাদ দিয়েছি, শুধু দাদু একটু অপ্রসন্ন হয়েছেন আপনার ওপর।

কেন?

কাল ওঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, তাই।

উনি কি বিশ্রাম করছেন?

না। আসুন।

দোতলায় উঠে মহাদেব সেনের কাছে পৌঁছে অর্জুন দেখল তিনি মগ্ন হয়ে বই পড়ছেন। চোখে চশমা ঠিকই, কিন্তু এটাই তো দুদিন আগে অবিশ্বাস্য ছিল। তিস্তা ডাকতে তিনি মুখ ফেরালেন কিন্তু মাথা পরিষ্কার হল না তৎক্ষণাৎ। অর্জন বলল, পড়তে অসুবিধে হচ্ছে না?

আঁ? ও, অর্জুন। খুব সামান্য। আগে তো পড়তেই পারতাম না। তোমরা আমাকে হঠাৎ এড়িয়ে চলছ কেন হে? গত রাত থেকে কোনও পাত্তা নেই?

কোথায় এড়িয়ে চলেছি? আপনার সূত্র অনুসরণ করেছি।

তার মানে?

গত রাত্রের কথা আপনার মনে আছে?

হ্যাঁ, তোমরা আমাকে জোর করে থানাব বাইরে নিয়ে এসেছিলে!

কারণ, আপনি একটু একটু কবে প্রভাবিত হয়ে পড়ছিলেন। বেরবার আগে আপনি শব্দের দূরত্ব এবং দিক অনুমান করেছিলেন। কী করে?

খুব সোজা। উত্তর দিকে কান পাতলে আওয়াজটা স্পষ্ট হচ্ছিল।

এবার অর্জুন মহাদেব সেনকে গতরাত্রের অভিজ্ঞতা খুলে বলল। শুনতে-শুনতে বৃদ্ধ সোজা হয়ে বসলেন। অর্জুন কথা শেষ করলে বললেন, কী বলব একে? অলৌকিক? এত বছর মহাকাশ নিয়ে কাজ করেছি, কখনওই তো এমন অভিজ্ঞতা হয়নি? ফ্লাইং সোর জাতীয় ব্যাপারগুলো উত্তেজিত করত এবং সেই পর্যন্ত। কিন্তু ওকে তুমি কীভাবে সাহায্য করবে? আমার মনে হয় ওর জ্বালানি শেষ হয়ে আসছে। পৃথিবী থেকে না চলে গেলে ও আর কখনওই। যেতে পারবে না। অথচ ওর মহাকাশের জাহাজকে ওড়াবার জন্যে ওই যন্ত্রটাকে সম্পূর্ণ পাওয়া দরকার!

হ্যাঁ। কার্ভালো ফিরে এসেছেন। তাঁর কাছে আমি যন্ত্রের আর-একটা অংশ পেয়েছি।

বাঃ। গুড। তা হলে চলো, ওকে ফিরিয়ে দিয়ে আসি।

হ্যাঁ। আমি সন্ধেবেলায় আপনার কাছে আসব। কিন্তু আমি চাই না বেশি লোক ব্যাপারটা জানুক। আমাদের অতিথি বাজে লোকদের সহ্য করতে পারে না।

ঠিক আছে, আর কেউ জানবে না।

পাশে দাঁড়িয়ে তিস্তা এতক্ষণ সব শুনছিল। এবার আবদারে গলায় বলল, দাদু, আমি তোমার সঙ্গে যাব। প্লিজ দাদু, কেউ কিছু জানতে পারবে না।

মহাদেব সেন মাথা নেড়ে যাচ্ছিলেন।

সন্ধে নাগাদ অর্জুন থানায় এল একটা ব্যাগ নিয়ে। অবনীবাবু নিজের চেয়ারে বসে ছিলেন। দেখামাত্র হাসলেন, কী ব্যাপার অর্জুনবাবু?

যন্ত্রটা চাই। অর্জুন বলল।

কেন?

যার জিনিস তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে না?

জিনিসটা কার?

আরে, কাল দেখলেন না?

সত্যি বলতে কি, গতরাত্রের ব্যাপারটা আমার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। তা ছাড়া কলকাতা থেকে বড়সাহেবরা জানিয়েছেন, ওটাকে অবিলম্বে সেখানে পাঠিয়ে দিতে।

অসম্ভব।

কেন?

ওটা আজই ফিরিয়ে দিতে হবে।

না মশাই। ওপরওয়ালারা আমাকে ছাড়বে না ওটা দেখতে না পেলে।

অবনীবাবু, আপনি বুঝতে পারছেন না কেন, একটি প্রাণের নিরাপত্তা নষ্ট হয়ে যাবে ওটা আজ ফেরত না পেলে!

এটা একা তো কিছু উপকার করবে না। ওব আর-একটা অংশ না পেলে কোনও কাজ দেবে? মাথাটা ঠাণ্ডা করুন।

হঠাৎ অর্জুনের মনে হল, অবনীবাবু আজ স্বাভাবিক নন। এখন এই অবস্থাতে কার্ভালোর ফিরে আসার কথা বলা ঠিক হবে না। সে কাভালোকে কথা দিয়ে এসেছে অবনীবাবু তা নাও মানতে চাইতে পারেন। ওপরওয়ালা জেনে যাওয়ার পরে ভদ্রলোক নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না।

অর্জুন বলল, এক কাজ করি। চলুন, ওটাকে নিয়ে কালকের স্পটে যাই। গতরাত্রে যে এসেছিল তাকে বলি সমস্ত ব্যাপারটা।

হঠাৎ অবনীবাবুর চোখ চকচক করে উঠল। একটু ভাবলেন। তারপর উঠে দাঁড়ালেন, চলুন। আপনার কথা রাখছি। তবে আজ আমি সঙ্গে রিভলভার রাখব।

কেন?

গতরাত্রে ও আমাকে আঘাত করেছিল। আজ আমার পালা।

অর্জুন বুঝল গোলমাল হবে। কিন্তু এ ছাড়া পুলিশের লকার থেকে যন্ত্রটাকে বের করার অন্য কোনও উপায় নেই।

অবনীবাবু চেয়েছিলেন একটা বিরাট বাহিনী নিয়ে যাবেন যাতে প্রাণীটিকে গ্রেফতার করা সহজ হয়। ওই প্রাণী, যন্ত্রটি একসঙ্গে প্রচারমাধ্যমে হাজির করলে আর দেখতে হবে না। কিন্তু অর্জুন এতে কিছুতেই রাজি হল না। সে বোঝাল, প্রাণীটি বেশি মানুষের উপস্থিতি টের পাবেই এবং সেক্ষেত্রে সে আর নীচে নামবে না।

যন্ত্রটাকে বের করে কোলে নিয়ে গাড়িতে উঠেছিলেন অবনীবাবু। মহাদেব সেন যেতে চান শুনে খুব একটা খুশি হলেন না। জিপের সামনে ওঁর পাশে অর্জুন বসে ছিল। মহাদেব সেন তৈরি ছিলেন। অর্জুন তাঁকে সামনের আসন ছেড়ে পেছনে চলে গেল। তিস্তা ঠোঁট ফুলিয়ে বলল, ঠিক আছে, মনে রাখব, তোমরা আমাকে নিলে না।

হেসে ফেলল অর্জুন, তুমি গিয়ে কী করতে?

অটোগ্রাফ নিতাম। তিস্তা বলল।

তিস্তার চরের কাছে পৌঁছে মহাদেব সেন বললেন, তিনি সেই শব্দটা শুনতে পাচ্ছেন। খুব ক্ষীণ। অর্জুন দেখল, অবনীবাবুর হাতে ধরা যন্ত্র থেকে সবে আলোর ছিটে বের হচ্ছে। সে অবনীবাবুকে বলল, যন্ত্রটা একবার দেখি। আলোটা অদ্ভুত লাগছে।

নিজে লক্ষ করে বুঝতে না পেবে ভদ্রলোক শেষপর্যন্ত অর্জুনের হাতে ওটা দিলেন। অন্ধকারে হাঁটতে অসুবিধে হচ্ছিল না, কারণ মহাদেব সেনের হাতে টর্চ ছিল। অর্জুন চট করে কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে হাত ঢুকিয়ে অন্য যন্ত্রাংশটি বের করল। তারপর আন্দাজে চেষ্টা করল আংটা দুটোকে জুড়ে দিতে। পাঁচ-ছ পা যাওয়ার পর সে দুটো লেগে যেতেই মহাদেব সেন বলে উঠলেন, যাঃ।

অবনীবাবু জিজ্ঞেস করলেন, কী হল?

শব্দটা হারিয়ে গেল।

ভাল করে শুনুন।

না, আর পাচ্ছি না।

চেষ্টা করুন।

দূর! চেষ্টা করে কি এসব শোনা যায়! কাল কোথায় এসেছিলে তোমরা?

অর্জুনের বুকের ভেতর যেন ড্রাম বাজছে এখন। সে বলল, এখানে।

কিন্তু এটা কী হল? দুটো যন্ত্র জুড়ে গেলে মহাদেববাবুরাও কিছু শুনতে পান না? অবশ্যই। প্রথম রাত্রে যন্ত্রটা জোড়া ছিল বলে কার্ভালো থাকা সত্ত্বেও রামচন্দ্র রায় কিছুই শুনতে পাননি। তার মানে এটা এখন শুধু শব্দ গ্রহণ করছে না, পাঠিয়েও যাচ্ছে। বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এটা গ্রহণ করত, এরা যেটা পাঠাত তা অতি সূক্ষ্ম বোধসম্পন্ন মস্তিষ্কে গিয়ে আঘাত করত।

দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় কাটল। শেষপর্যন্ত অবনীবাবু যন্ত্রটি নিয়ে মাটিতে রাখলেন। দপদপ করছে আলো। হঠাই দেখা গেল তিস্তার চরে কিছু একটা নেমেছে। মহাদেব সেনকে সে জিজ্ঞেস করল, আপনি কিছু দেখতে পাচ্ছেন?

না।

অবনীবাবু বললেন, আমি পাচ্ছি। আসুক কাছে, রেঞ্জের মধ্যে। তিনি রিভলভার বের করে নিলেন। অর্জুন ওঁর হাত ধরল, কী করছেন আপনি?

আই ওয়ান্ট হিম।

না। কখনওই নয়।

মারব না। এমন আহত করব যাতে পালাতে পারবে না কিন্তু পরে চিকিৎসা করে সারানো যায়। আমি ওকে জীবন্ত চাই। অবনীবাবু বললেন।

এসব কী কথা। ছি ছি ছি। ইউ ক্যাননট ড়ু দিস। মহাদেব সেন বললেন।

আমাকে আমার কর্তব্য করতে দিন। কারও যদি কোনও আইডেন্টিটি না থাকে তা হলে তাকে অ্যারেস্ট করার সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে।

এই সময় দেখা গেল তিস্তার চর থেকে একটা নীল আলোর বেলুন ওপরে উঠে এদিকে এগিয়ে আসছে। বেলুনটা যখন কাছে নেমে এল ঠিক তখনই গুলি চালালেন অবনীবাবু। মনে হল জলের মধ্যে একটা পাথর তলিয়ে গেল। সঙ্গে-সঙ্গে প্রচণ্ড চিৎকার করে হাত শূন্যে তুললেন ভদ্রলোক। অর্জুন দেখল, ওঁর হাত থেকে মাটিতে কিছু পড়ে গেল। যন্ত্রের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা আলোয় মনে হল, একদলা গলিত লোহা। বাঁ হাতে ডান হাতের কবজি ধরে মাটিতে বসে পড়েছেন ভদ্রলোক। যন্ত্রণায় কাতরে যাচ্ছেন।

নীল আলোর বেলুন থেকে সেই প্রাণীটি বেরিয়ে এল, আপনাকে প্রথম দেখছি। কিন্তু মনে হয় কোথাও আমাদের সংযোগ হয়েছিল।

অর্জুন বলল, ইনি আপনার ওই যন্ত্রের পাঠানো সিগন্যাল শুনতে পেতেন। তা ছাড়া পেশায় একজন বিজ্ঞানী।

ধন্যবাদ। আমার যন্ত্র যখন সিগন্যাল ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে তখন বোঝা যাচ্ছে তুমি আমার উপকার করেছ। কী দিয়ে এই ঋণ শোধ করতে পারি?

ঋণ কেন বলছ?

নিশ্চয়ই। আজ ভোরের আগে আমি যদি মহাকাশে না পৌঁছতে পারি তা হলে শেষ হয়ে যাব। তোমাকে আমার বন্ধুত্ব দিলাম।

ধন্যবাদ। একটা কথা জিজ্ঞেস করছি। ওই যন্ত্রের অর্ধেকটা যে শব্দতরঙ্গ তুলত তা শুনে মহাদেব সেন এবং রামচন্দ্র রায় অস্বাভাবিক হয়ে যেতেন। কিন্তু একজন দৃষ্টিহীনতা আর একজন বাত থেকে মুক্ত হওয়ার পথে পৌঁছেছিলেন। কী করে?

খুব স্বাভাবিক। ওঁদের মস্তিষ্কের যে কোষ শব্দটাকে নিতে পেরেছিল তারাই বলিষ্ঠ হয়ে এই দুটো প্রতিক্রিয়া আনে। কিন্তু পূর্ণমাত্রায় না হওয়ায় ব্যাপারটা খুবই সাময়িক হবে। তুমি চাও এটা পূর্ণতা পাক?

হ্যাঁ।

আপনি শুয়ে পড়ন।

মহাদেব সেন নির্দেশ পালন করামাত্র তাঁর গলা থেকে তীব্র চিৎকার বের হল। তিনি স্থির হয়ে গেলেন। প্রাণীটি বলল, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে দাও। ওঁর শরীরের সমস্ত বিকল কোষ এখনই জীবন ফিরে পাবে। এই লোকটিকে কী করা যায়?

কিছু না। উনি বিভ্রমে পড়েছেন। তোমার পূর্ণ যন্ত্র নাও। অর্জুন যন্ত্রটিকে তুলে ধরতে মূর্তিটি ইশারা করল থামতে। তারপর আলোর বেলুনে ঢুকে সে কিছু চালাতেই একটা আলোর রেখা বেরিয়ে এল। তারই আকর্ষণে যন্ত্রটি সোজা চলে গেল নীল আলোর বেলুনের ভেতরে। প্রাণীটি আবার বেরিয়ে এল, আমার হাতে আর সময় নেই বন্ধু।

তোমাকে আমি সারাজীবন মনে রাখব। অৰ্জুন বলে উঠল।

বিদায় বন্ধু। প্রাণীটি আবাব নীল বেলুনে ঢুকে গেল। বেলুনটি উড়ে গেল তিস্তার চরে। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কিছু একটা হুস করে উড়ে গেল আকাশে।

অর্জুনের বুক ভার হয়ে গিয়েছিল। সে মহাদেব সেনকে দেখল। তারপর অবনীবাবুকে। ভদ্রলোক যেন বসেবসেই ঘুমোচ্ছেন।

ওঁদের জ্ঞান ফেরাব জন্যে অপেক্ষা করতে লাগল অর্জুন, অন্ধকার নির্জন নদীতীরে। আকাশে তখন হাজার তারার মালা। শোঁ-শোঁ বাতাস বইছে। হঠাৎ কানে এল মহাদেব সেনের গলা, অর্জুন!

বলুন।

চলে গিয়েছে।

হ্যাঁ।

আপনি?

হ্যাঁ। আমি দেখতে পাচ্ছি। এই অন্ধকারেও তারাদের দেখতে পাচ্ছি।

আনন্দে ভরপুর অর্জুন আকাশের দিকে তাকাল, ধন্যবাদ, বন্ধু।

Pages: 1 2 3 4 5
Pages ( 5 of 5 ): « পূর্ববর্তী1 ... 34 5

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress