Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কাড়া- নাকাড়ার জন্মকথা || Manisha Palmal

কাড়া- নাকাড়ার জন্মকথা || Manisha Palmal

কাড়া- নাকাড়ার জন্মকথা

সে অনেক দিন আগের কথা! জঙ্গলমহল ছিল শাল মহুয়ার জঙ্গল ও ডুঙ্গরি টিলা নদী-নালার সরজমিন। এই অঞ্চলে তখন মানুষের বসবাস ছিল খুব কম। মারাং বুরুর কৃপায় ধীরে ধীরে এখানে লোক বাড়লো। পুরো জঙ্গলমহল জুড়ে শুরু হলো তাদের বসবাস। প্রথমে তারা গাছের ফল মূল খেত। আস্তে আস্তে তারা কাঁড়( ধনু) গুলতি টাঙ্গি বল্লম দিয়ে পশুপাখি শিকার করে খেতে শুরু করল। জঙ্গলের পশু পাখি এই হড়( মানুষ) দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মারাংবুরু ও বড়ামদেবের কাছে মানুষদের নামে নালিশ করল! মারাংবুরু ও বড়ামদেব তখন পশুপাখি মারা কমাবার জন্য সেখানকার লোকজনকে চাষাবাদ করা শেখালেন! আর তখন থেকেই ঠিক হলো বছরের কয়েকটি বিশেষ দিনে শিকার করা যাবে আর বাকি সব দিন চাষাবাদ করতে হবে। দেবতার কৃপায় সুবর্ণরেখা কাঁসাই আর ডুলুং নদীর জল এতে মানুষদের সাহায্য করল।
একবার দেশে খুব আকাল হল। চাষের সময় একটুও বৃষ্টি হলো না। খরায় জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেল। সব লোক মিলে মারাংবুরু ও বড়ামদেবের কাছে হত্যে দিয়ে পডলো। মারাংবুরু তখন দলমা পাহাড় থেকে একটা বিরাট কাড়া ও বড়াম দেব পাঠিয়ে দিলেন একটা মস্ত মহিষ। এই দুই দেবতার আদেশে সেই মহিষ ও কাড়ার চামড়া দিয়ে তৈরি হলো ধামসা -কাড়া-নাকাড়া! এই ধামসা কাড়া-নাকাড়া বাজনা বাজিয়ে হাঁড়িয়া খেয়ে জঙ্গলমহলের সব লোক মারাংবুরুও বড়ামদেবের কাছে সাদা বদা( পাঁঠা)ও কালিয়া( কালো) কুকড়া বলি দিল! লায়া-দেউরী সেই পবিত্র জল সারা রাস্তায় ছিটিয়ে দিল। ধামসা কাড়া-নাকাড়া বাজনার সাথে তাল মিলিয়ে হাঁড়িয়া খেয়ে সকলে সারারাত ধরে নাচ-গান করলে। রাত শেষে সারা আকাশ ছেয়ে গেল ঘন কালো মেঘে। তারপর বরষা নামলো আকাশ ভেঙ্গে। মারাংবুরু ও বড়ামদেবের কৃপায় তৈরি ধামসা কাড়া নাকড়ার শব্দে খরা প্রাণ নিয়ে পালিয়ে গেল আকালের দেশে। খরা তাড়াবার জন্য এবং যেকোন অমঙ্গল দূর করার জন্য আজও বিভিন্ন পরবে ধামসা কাড়া-নাকাড়া বাজানো হয়। এই বাজনা গুলো বাজানোর জন্য দেবতারা কালিন্দী ডোম নামে এক আলাদা জাতি তৈরি করলেন। আজও এই প্রথা চলে আসছে। কাড়া বাজায় বলে কালিন্দী ডোমদের কাড়োয়া নামেও ডাকা হয়।
কাড়োয়া, কালিন্দী ডোম, জেতোড় জাতির অন্যতম নাম। জেতোড়রা হলেন লৌকিক দেবদেবী বড়ামদেব ও সাত বুড়ির সন্তান । কাঁসাই- সুবর্ণরেখা-ডুলুং নদীর অববাহিকায় যাদের বসবাস।

তথ্যসূত্র- লোকভাষ
ক্ষেত্র সমীক্ষা
জেতোড়— ডক্টর নির্মলেন্দু দে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *