আমি কবি যত কামারের আর কাঁসারির আর ছুতােরের,
মুটে মজুরের,
-আমি কবি যত ইতরের!
আমি কবি ভাই কর্মের আর ঘর্মের;
বিলাস-বিবশ মর্মের যত স্বল্পের তরে ভাই,
সময় যে হায় নাই!
মাটি মাগে ভাই হলের আঘাত,
সাগর মাগিছে হাল,
পাতালপুরীর বন্দিনী ধাতু
মানুষের লাগি কাঁদিয়া কাটায় কাল,
দুরন্ত নদী সেতুবন্ধনে
বাধা যে পড়িতে চায়,
নেহারি আলসে নিখিল মাধুরী
সময় নাহি যে হায়!
মাটির বাসনা পূরাতে ঘুরাই
কুম্ভকারের চাকা,
আকাশের ডাকে গড়ি আর মেলি
দুঃসাহসের পাখা,
অভ্রংলিহ মিনার-দচ্ছ তুলি,
ধরণীর গুঢ় আশার দেখাই উখত অগুলি!
জাফরি কাটান জানালায় বুঝি
পড়ে জ্যোৎস্নার ছায়া,
প্রিয়ার কোলেতে কাঁদে সারঙ্গ
ঘনায় নিশীথ মায়া।
দীপহীন ঘরে আধাে নিমীলিত
সে দু’টি অখির কোলে,
বুকি দুটি ফোঁটা অশ্রুজলের
মধুর মিনতি দোলে,
সে মিনতি রাখি সময় যে হায় নাই;
বিশ্বকর্মা যেথায় মত্ত কর্জে হাজাব করে
সেথা যে চারণ চাই!
আমি কবি ভাই কামারের আর কাঁসারির
আর ছুতােরের, মুটে মজুরের,
-আমি কবি যত ইতরের।
কামারের সাথে হাতুড়ি পিটাই,
তােরের ধরি তুরপুন,
কোন্ সে অজানা নদীপথে ভাই
জোয়ারের মুখে টানি গুণ।
পাল তুলে দিয়ে কোন্ সে সাগরে,
জাল ফেলি কোন্ দরিয়ায়!
কোন্ সে পাহাড়ে কাটি সুড়ঙ্গ,
কোথা অরণ্য উচ্ছেদ করি ভাই
কুঠার ঘায়।
সারা দুনিয়ার বােঝা বই আর খােয়া ভাঙি
আর খাল কাটি ভাই, পথ বানাই,
যশ্নবাসরে বিরহিণী বাতি
মিছে সারারাতি পথ চায়,
হায় সময় নাই!