Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কবি সমীর রায়চৌধুরী || Sankar Brahma

কবি সমীর রায়চৌধুরী || Sankar Brahma

সমীর রায়চৌধুরী কলেজ জীবনে কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, ১৯৬১ সালের নভেম্বরে তিনি ছোট ভাই মলয় রায়চৌধুরী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও দেবী রায় (প্রকৃত নাম হারাধন ধাড়া )-এর সঙ্গে হাংরি আন্দোলন শুরু করে, কাব্য-জগতে সাড়া ফেলে দেন । হাংরি আন্দোলন-এর শতাধিক বুলেটিনের অধিকাংশই তার খরচে প্রকাশিত হয়েছিল। হাংরি আন্দোলন-এর কারণে তিনি ১৯৬৪ সালে গ্রেপ্তার হন, যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না থাকায় অচিরেই মুক্তি লাভ করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি তরুণদের বিপথগামী করছেন (ভারতীয় দণ্ড সংহিতার ২৯৪ ধারা)।

সমীর রায়চৌধুরী ১লা নভেম্বর ১৯৩৩ সালে পাণিহাটি মামারবাড়িতে, জন্মগ্রহণ করেন।
কলকাতার আদি নিবাসী সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের উত্তরপাড়া শাখার সন্তান তিনি বিদ্যাধর রায়চৌধুরী, যিনি জোব চার্ণককে কলকাতা-সুতানুটি-গোবিন্দপুর গ্রামের ইজারা দিয়েছিলেন, তাঁর ৩৯তম বংশধর হলেন সমীর রায়চৌধুরী।
তার ঠাকুর্দা লক্ষ্মীনারায়ণ রায়চৌধুরী ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম ভ্রাম্যমাণ ফোটোগ্রাফার-আর্টিস্ট। তিনি নোবেলজয়ী সাহিত্যিক রুডিয়ার্ড কিপিংয়ের বাবা, তৎকালীন লাহোর মিউজিয়াম-এর অধক্ষ জন লকউড কিপলিং-এর কাছে ব্রোমাইড-কাগজ আলোকচিত্র তৈরির কৌশল শিখেছিলেন।
তার বাবা রঞ্জিত রায়চৌধুরী (১৯০৯-১৯৯১ সালে)-ও পাটনা শহরের প্রচীনতম ফোটোগ্রাফি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তার জ্যাঠামশায় পাটনা শহরের জাদুঘরের চিত্র এবং ভাস্কর্য রক্ষক ছিলেন। সেই কারণে শৈশব থেকে সমীর শিল্প-সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। পাটনায় স্কুল জীবন কাটিয়ে তিনি কলকাতার সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন, সেই সূত্রে কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা কবি দীপক মজুমদারের সঙ্গে পরিচিত হন। তার মা অমিতা দেবী (১৯১৬-১৯৮২ সাল) ছিলেন ঊনিশ শতকের বাঙালির রেনেসাঁস-প্রভাবিত পরিবারের মেয়ে।

তিনি বাংলা সাহিত্যের একজন বিতর্কিত কবি, ছোট-গল্পকার ও ভাবুক। কৃত্তিবাস গোষ্ঠিতে যুক্ত থাকার সময়ে তার দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল: ‘ঝর্ণার পাশে শুয়ে আছি’ এবং ‘আমার ভিয়েৎনাম’ । সেই সময়ে নিজ অর্থে তিনি কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়-এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’ প্রকাশ করে কবি মহলে বিশেস সম্মান অর্জন করেন।
কৃত্তিবাস গোষ্ঠী ত্যাগের পর, হাংরি আন্দোলন-এর কারণে তার কবিতায় লক্ষণীয় বাঁকবদল ঘটে, এবং তা প্রতিফলিত হয় তার পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ ‘জানোয়ার’-য়ে। সেই সময়ে তার চাইবাসার বাড়িটি (নিমডি নামের সাঁওতাল গ্রামের পাহাড়চূড়ায়) হয়ে উঠেছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকেন্দ্র।
পঞ্চাশ-ষাট দশকের বহু কবি ও লেখকের রচনায় চাইবাসার কথা বারবার উচ্চারিত হয়েছে।

গ্রেপ্তারির আপমানের কারণে, এবং ১৯৬৫ সালে হাংরি আন্দোলন প্রকৃত অর্থে ফুরিয়ে যাওয়ায়, সমীর রায়চৌধুরী প্রায় তিন দশক (৩০ বছর) লেখালিখি থেকে দূরে সরে ছিলেন। নব্বয়ের দশকে কলকাতায় নিজের বাড়ি তৈরি করার পর তিনি পুনরায় ছোট-গল্পকার ও ভাবুক রূপে লেখালিখি শুরু করেন।
নব্বই দশকের শুরুতে গল্পকার ও ঔপন্যাসিক মুর্শিদ এ এম -এর সঙ্গে তিনি ‘হাওয়া ৪৯’ নামে একটি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। সাহিত্য ও বিজ্ঞানকে একটি মঞ্চে একত্রিত করে তিনি নতুন একটি ধারার সাহিত্যচিন্তা প্রণয়ন করেন যার নাম তিনি দেন “অধুনান্তিক”(modern), পরবর্তীকালে পত্রিকাটি সাহিত্যতত্ব ও ভাষাতত্বের পত্রিকা হয়ে ওঠে, এবং তাকে আলোচকরা পোস্টমডার্ন (উত্তর আধুনিক) মঞ্চ বলে স্বীকৃতি দেন। এই ধারায় রচিত তার ছোটগল্পের সংকলন ‘খুল যা সিমসিম’ সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার বাংলা সন্দর্ভ হিসাবে সম্মানিত হয়েছে। অন্যান্য তরুণ কবি ও লেখক, যাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আগ্রহী, তাদের রচনা ‘হাওয়া ৪৯’-য়ে প্রকাশ ও তাদের গ্রন্থ প্রকাশের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতেন সমীর রায়চৌধুরী।

[গ্রন্থতালিকা]

(ছোটগল্পের বই)

১). সিগারেটের তিরোভাব ও অন্যান্য
২). ছাতা হারানোর বর্ষাকালীন দুঃখ

(পোস্টমডার্ন গল্পগুচ্ছ)

১). খুল যা সিমসিম

(কাব্যগ্রন্থ)

১). ঝর্নার পাশে শুয়ে আছি
২). আমার ভিয়েতনাম
৩). জানোয়ার
৪). মাংসের কস্তুরীকল্প

(পোস্টমডার্ন কবিতাগুচ্ছ)

১). বিদুরের খড়ম
২). নির্বাচিত কবিতা

(প্রবন্ধের বই)

১). কবিতার আলো অন্ধকার
২). পোস্টমডার্ন কবিতা বিচার
৩). পোস্টমডার্ন বিড়ালের সন্ধানে
৪). উত্তরাধুনিক প্রবন্ধ সংগ্রহ

(সম্পাদিত বই)

১). পোস্টমডার্ন: অধুনান্তিক
২). পোস্টকলোনিয়ালিজম: উত্তরঔপনিবেশিকতা
৩). পোস্টমডার্ন কি ও কেন
৪). পরমাপ্রকৃতি: ইকোফেমিনিজম
৫). সীমা
৬). কমপলেক্সিটি:জটিলতা
৭). ডায়াসপোরা
৮). অনিল করঞ্জাই আলোচনাসমগ্র
৯). ফালগুনী রায় আলোচনাসমগ্র
১০). ভুখী পীঢ়ি (নেপালি)
১১).;জীবনানন্দ (কন্নড়)
১২). Postmodern Bangla Poetry Volume I & II,
১৩). Postmodern Bangla Short Stories Volume I & II,
১৪). অধুনান্তিক বাংলা কবিতায়েঁ (হিন্দি)

(সম্পাদিত পত্রিকা)

১). কৃত্তিবাস (ফণীশ্বরনাথ রেণু সংখ্যা)
২). হাংরি বুলেটিন
৩). শাশ্বত (বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় সংখ্যা)
৪). সংক্রামক (হিন্দি)
৫). হাওয়া ৪৯

২২শে জুন ২০১৬ সালে তিনি মারা যান।

—————————————————————-
[ সংগৃহীত ও সম্পাদিত। তথ্যসূত্র – উইকিপিডিয়া

সূত্র নির্দেশিকা –

খুল যা সিমসিম পাঠচর্চা (ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সাল), গ্রাফিত্তি প্রকাশনী, ২এ টিপু সুলতান রোড, কলকাতা ৭০০০২৬.

গল্পবিশ্ব – সমীর রায়চৌধুরী সংখ্যা (অক্টোবর ২০০৮ সাল), সম্পাদক অলোক গোস্বামী, ২০ আশুতোষ মুখার্জি রোড, শিলিগুড়ি ৭৩৪০০১.
আলোচকগণ: রবীন্দ্র গুহ, বাসব দাশগুপ্ত, নাসের হোসেন, মুর্শিদ এ. এম, ডঃ নৃসিংহমুরারি দে, সুজিত সরকার, মৌলিনাথ বিশ্বাস, ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায়, ধীমান চক্রবর্তী, ডঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রামকিশোর ভট্টাচার্য, অশোক তাঁতি ও বেলা রায়চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অলোক গোস্বামী।

বোধ – সমীর রায়চৌধুরী সংখ্যা (নং ৫০, ২০০৯ সাল), সম্পাদক অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়, বনবাস, রূপনারায়ণপুর, জেলা বর্ধমান ৭১৩৩৬৪ । আলোচকগণ: ধীমান চক্রবর্তী, শঙ্করনাথ চক্রবর্তী, নারায়ণ ঘোষ, নাসের হোসেন ও অলোক গোস্বামী।

হাংরি শ্রুতি ও শাস্ত্রবিরোধী আন্দোলন (১৯৮৬ সাল) । ড.উত্তম দাশ । মহাদিগন্ত প্রকাশনী, কলকাতা।

ক্ষুধিত প্রজন্ম ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৯৫ সাল) । ড. উত্তম দাশ । মহাদিগন্ত প্রকাশনী, কলকাতা।

বন তুলসী কা গন্ধ (১৯৮৮ সাল) । ফণীশ্বরনাথ রেণু । রাজকমল প্রকাশনী, দিল্লি ১১০০০২.

একালের গদ্য-পদ্য সাহিত্য আন্দোলনের দলিল । সত্য গুহ । অধুনা প্রকাশনী, কলকাতা।

Salted Feathers (লবণাক্ত পালক) – Hungryalist Issue. Editor Lee Altman and Dick Bakken. 3206NE 12th, Portland, Oregon, USA.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress