Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কবিদের প্রতি আহ্বান || Sankar Brahma

কবিদের প্রতি আহ্বান || Sankar Brahma

কবিতা বিজ্ঞান নয় যে H2O মানেই জল হবে। এই অমোঘ সত্যটুকু না বুঝে যারা সনাতন ধারার স্রোতে অবগাহন করে, বৃথা কাব্য চর্চায় মেতে আছেন, তারা অযথা কিছু শব্দের অপচয় করছেন, তার বেশী কিছু নয়।তাই কবিতা লেখার পুরনো ছাঁচ প্রথমে ভেঙে ফেলুন। গড়ে তুলুন নিজের ভাবনা স্বকীয়ভাবে প্রকাশের জন্য নতুন ধাঁচ। কারণ, কবিতা লেখারধরা-বাঁধা কোনও নিয়ম নেই।
নতুন ধারার কবিতা গ্রহণে, পাঠকদের প্রাথমিক পর্যায়ে স্বাভাবিকভাবেই অনীহা থাকবে, কারণ এ ধরনের কবিতা পাঠে তারা অভ্যস্থ নন। ধীরে ধীরে পাঠকরাও অভস্থ হয়ে উঠবেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতাও বিশিষ্ট পাঠক সমালোচকরা সে-সময় গ্রহণ করতে পারেননি। সজনীকান্ত দাস তাঁর পত্রিকা ‘শনিবারের চিঠি’-তে জীবনানন্দের কবিতা বুঝতে না পেরে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। অনেক ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছিলেন তাঁর কবিতা নিয়ে। কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ কবি এবং সমালোচক কোথায়ও জীবনানন্দ নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি, এতটাই অপছন্দ করতেন তাকে। স্বয়ং রবীন্দনাথও তাঁর ”মৃত্যুর আগে’ কবিতাটি পড়ে তার রস সম্পূর্ণ রূপে গ্রহণ করতে না পেরে, তার কবিতাকে ‘ চিত্ররূপময়’ কাব্য বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। কেবলমাত্র নতুনের সন্ধানী বুদ্ধদেব বসু তাঁর কবিতার মূল্যায়ণ করতে পেরে, তাকে মূল্যে দিয়েছিলেন, কবিতা ভবন থেকে’এক পয়সায় একটি’ সিরিজের অংশ হিসেবে একটি ষোল পৃষ্ঠার কবিতা সংকলন প্রকাশ করে। বুদ্ধদেব বসু ছিলেন জীবনানন্দের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এবং তাঁর সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় জীবনানন্দের বহু কবিতা ছাপা হয়।
আর আজ জীবনানন্দ দাশ বাংলা ভাষার প্রধান কবি। আপনিও যে ভবিষ্যতে তেমন হবেন না, এ কথা কে বলতে পারে? তাই আসুন এখন থেকে নতুন ধারায় লিখতে শুরু করি।

(দ্বিতীয় পর্ব)

১৯৬৯-৭০ সালে আমরা তিনজন মিলে (আমি, মোহন গুপ্ত ও ঁশ্যামল চ্যাটার্জী) ‘মেঘদূত’ পত্রিকা বের করি। সে সময় বুদ্ধবেব বসুর কাছে পত্রিকার জন্য একটি কবিতা চাইতে যাই। কবিতা লেখা নেই বলে, স্বভাবতই তিনি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ‘মেঘদূত’ পত্রিকা বের হবার পর, তাকে কপি দিতে যাই। তারপর মাঝেমাঝেই তার বাড়িতে যেতাম কারণে-অকারণে তাঁর বাড়ির উল্টোদিকে নির্মলেন্দু বলে আমার এক বন্ধু থাকার ফলে।
একদিন তাঁর সঙ্গে কবিতা নিয়ে কথা বলার সময়, আচমকা তাকে প্রশ্ন করে বলি, আমাকে কবি হতে গেলে কী করতে হবে?
সে কথা শুনে তিনি আমার চোখের দিকে স্থির দৃষ্টিতে একমুহূর্ত তাকিয়ে, মৃদু হেসে বললেন, তুমি কি কবিতা লিখতে চাও, নাকি কবি হতে চাও।
তার প্রশ্ন শুনে আমি প্রথমটায় হতবুদ্ধি ও বিমূঢ় হয়ে পড়ি। কবিতা লিখতে চাওয়া আর কবি হতে চাওয়া কি,আলাদা কিছু?
তাই আমি তাঁকে প্রশ্ন করে ফেললাম, মানে?
তিনি বলেছিলেন, কবিতা লিখতে চাইলে দেশি-বিদেশি প্রচুর কবিতা পড়, আর নিজের ভাবনা-চিন্তার কথা নিজের মতো করে প্রকাশ করার চেষ্টা করো, অন্য কাউকে অনুকরণ না করে। আর কবি হতে চাইলে এসব কিছু করতে হবে না। কবি সভাগুলিতে গিয়ে নিয়মিত মুখ দেখাও। কবি হিসাবে সবাই তোমায় চিনে যাবে।
আজ পঞ্চাশ বছর পরও, তাঁর কথা কতটা সত্যি, বর্তমান কাব্য-জগতের বাস্তব পরিস্থিতি দেখে গৃরুত্বের সাথে অনুভব করি।
কবিতা চর্চায় মগ্নতা নেই (এতো সময় কোথায়) অধিকাংশ তারাই কবি-সভাগুলি নিয়মিত আলো করে বসে থাকেন। আমিও দু-একবার সে সব কবি-সভায় গিয়ে দেখেছি, কেউ কারও কবিতা পাঠ শোনে না। একে-অন্যের সঙ্গে খোশ গল্পে (আত্মপ্রচার মূলক) মতে ওঠে। আর সম্প্রতি তার সঙ়ে জুড়েছে প্রিয় লোকের সঙ্গে সেল্ফি তোলার ঘটা।
এসব করে কবিতার কী উন্নতি হচ্ছে, আমি সত্যিই বুঝি না।
তাই প্রথমেই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে, কবি হতে চান, নাকি কবিতা লিখতে চান?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress