ক’দিন পরেই
আমার জীবন হবে গোধূলিতে শস্যহীন ক্ষেত, কুয়াশায়
হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া ঘণ্টাধ্বনি। কিছু
পোড়া কাঠ, শূন্য কৌটো, একটি কি দু’টি
প্লাস্টিকের ক্লিপ, আপেলের টুকরে ইতস্তত
থাকবে ছড়ানো আশেপাশে। সেদিন দুপুরবেলা
তোমার শয্যায় পাশে বসে স্বপ্নের জগৎ থেকে
ভেসে-ওঠা অমন রহস্যের চোখ রেখে
চকিতে পড়ল মনে ক’দিন পরেই
তুমি চলে যাবে দূরে, কুড়িয়ে স্মৃতির ধানশীষ
পরিযায়ী পাখির মতন
এবং আমাকে ঘিরে ঘুরবে তখন হানাকার।
সেদিন দুপুরে
বলেছিলে, ‘আমার যে-হাত সাবলীল স্পর্শ করে
তোমাকে কখনো, জেনো সে-হাত এঁকেছে চুম্বন,
সে ঠোঁটও আমার নয়। তবে কার?’ আমি কি তোমার
ছায়ার পুতুলটিকে দিঘিতে ভাসিয়ে তৃপ্ত হবো?
কয়েকটি দিন,
যেন অনাস্বাদিত চুম্বন, কাটে বড় এলোমেলো,
আমার হৃদয় ঝড়বিক্ষুব্ধ সারস;
আমার কবিতাগুলি তোমার নিভৃত শুয়ে-থাকা,
বসে থাকা, বই-পড়া, হাত নড়া দ্যাখে
উপনিষদের
দ্বিতীয় পাখির মতো এবং তোমার বিরূপতা
চাবুকের কালসিটে দাগ হয়ে সেঁটে থাকে আমার সত্তায়।
আমি সেই বেদনার্ত স্থানটিতে পানি ঢেলে ঢেলে
করবো শুশ্রূষা
মধ্যরাতে, যেমন বালক করে আহত পাখিকে,
মাঝে-মধ্যে চুমো খাব। ক’দিন পরেই
স্বর্গচ্যুত আদমের মতো শূন্য প্রহরে প্রহরে
গোঙাবো কেবলি।