ঐশী
শ্রীকান্ত নতুন সাহিত্য গ্রুপে কত বিচিত্র আয়োজন করেছে। কবিতা – গল্প -নাটক, প্রবন্ধের প্রতিদিনের লেখা, মাসিক প্রতিযোগিতা , সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা – নানা কিছু। আজ এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে হল ভাড়া, মেমেন্টো, যৌথ সংকলন, সঙ্গে এক বাক্স সুস্বাদু খাবার। আজ শ্রীকান্ত গর্বিত। প্রথম বর্ষে পা দিলো সন্তান সম ‘ঐশী সাহিত্য’।
– আজ তুমি যাবে তো!- মা- ও—–মা।
– যাব তো। সংস্কৃতি-ভবনে আমাদের ঐশী সাহিত্য পত্রিকার প্রথম জন্মদিন। অনেক পরিশ্রম হলেও আজকে খুশির দিন।
– পঙ্কজ স্যার ,অসীমা দি, নীলাঞ্জনা দি সকলেই আসবেন ।এই গ্রুপের সৃষ্টিকর্তা তোর বাপি হলেও সমস্ত সদস্য ঐশী গ্রুপকে সন্তানের মতো ভালোবাসে।
– জানি মা। প্রীতি আন্টি ,শ্রীতমা আন্টি কত ছুটোছুটি করে চলে আসেন পুরুলিয়া বাঁকুড়া থেকে। এত ভালোবাসে বলেই অত দূরের মানুষ সহজে আসতে পারেন।
– ঐতো সুমন এসে গেছে। আমার আর চিন্তা নেই। তোমার কাকু রেডি হচ্ছেন। তুমি কিছুটা গুছিয়ে নাও সুমন।
– তনুমিতা আন্টি কী কী নিতে হবে দাও, গাড়ীতে তুলে দিয়ে আসি। বইগুলো কলেজ স্ট্রিট থেকে একেবারে হলে পৌঁছে দিতে বলেছি।
– হ্যাঁ রে সুমন দুটো গাড়ি লাগবে , অনেক জিনিসপত্র। ফুলগুলো হাতে নিস। ঐদিকে বড় প্রদীপটা আছে নিয়ে একটা গাড়িতে রাখ। মেঘনা কে সঙ্গে নিয়ে নে।
– মেঘনা তোর বাপিকে রেডি হতে বল।
– বাপি পুজো করছে মা।
– ও তাইতো ।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি সকলে যেন সুস্থ থেকে ঐশী সাহিত্য পত্রিকা কে মর্যাদাসহ উচ্চে স্থান দিতে পারি। এইভাবে আমরা যেন বৃহৎ সংসারে পরিণত হই।
– শ্রীকান্ত তোমাদের ব্রেকফাস্ট দিয়েছি,সুমন আর মেঘনাকে নিয়ে তুমি রওনা দিও। অনেকে তোমাদের অপেক্ষায় থাকবেন।
– আরে শুধু চা দাও। খাওয়ার সময় নেই। ওরা ছোট ওদেরকে খাওয়াও।
– সুমনদা তুমি খেয়ে নাও। ওদিকে বাপির ফোনটা বেজে চলেছে। মনে হয় আঙ্কেল আন্টিরা ফোন করছেন।
– শুনছ,,,,এ। প্রীতি দি ফোন করেছেন।
– ফোনটা তুমি ধরে কথা বলো। হলে সামনে অপেক্ষা করতে বলো। ওখানে সুজাতা রয়েছেন। যদি খুলে দেয় সবাই বসতে পারবেন।
– হ্যালো প্রীতিদি, আমি তনুমিতা বলছি- তোমরা কোথায় আছো? হলে তোমরা পৌঁছে যেতে পারো। আমরা এইবার বের হচ্ছি।
– হ্যাঁ গো তনুমিতা আমরা হোটেল থেকে রওনা দিয়েছি ।তোমরা তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমরা আজ ফিরে যাব। তোমরা আগে এলে একটু কথা হতো ।
– কলকাতার সংস্কৃতি ভবনে সকলের সাথে আবেগে ভেসে যাওয়া। অনুষ্ঠানের শুরুতে সভাপতির পদ অলংকৃত করলেন ছিয়াশি বছরের প্রবীণ সাহিত্যিক শুভঙ্কর ব্যানার্জী মহাশয়। অতিথিবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত হলে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, উদ্বোধনী সংগীত ,সাহিত্যপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস ভালোবাসায় ঐশী সাহিত্য পত্রিকার প্রথম বর্ষের কেক কাটা সম্পূর্ণ হলো।
– উত্তরীয়, ফুল চন্দনের ফোঁটা, লাল সাদা শাড়িতে, জুঁই ফুলের মালায় মঞ্চ সেজে উঠেছে । একে একে বই উদ্বোধন, যৌথ সংকলন, কবিতাপাঠ ,মেমেন্টো প্রদান, সঙ্গে চা-জলে হলের ভিতরটা বর্ণময় হয়ে উঠেছে।
– প্রত্যেকের মুখে চওড়া হাসি। ফেসবুকের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আজকে প্রত্যেকে প্রত্যেকের মুখোমুখি। কতদিনের যেন চেনা। ভাই দাদা- দিদি – বোন – আন্টি সমস্ত সম্পর্ক গুলো একসঙ্গে আবেগে ভালোবাসায় এক সূত্রে বেঁধে ফেলে। এতক্ষন কাজের ফাঁকে ভাবছিল শ্রীকান্ত। একটা পরম তৃপ্তি।
– প্রত্যেকে শুভেচ্ছা বিনিময়, বইয়ের আদান-প্রদান। ভালোবাসাগুলো কত সুন্দর ভাবে পরিবেশটাকে মনোরম করে তুলেছে। আবার একটা বছরের পরিশ্রম। এডমিন মডারেটর বাদেও এত সংখ্যক মানুষ ভালোবেসে আমাদের বৃহৎ পরিবার কে আগলে রাখুক এটাই কাম্য।
– শেষ হলো প্রথম বর্ষ উদযাপন।