এরকম হলে হাঁসের পংক্তি শিশুর আনাড়ি
হাতে আঁকা রেখা হয়ে যায় নির্ঘাৎ।
মানে, অতিশয় ত্রঁকেবেঁকে যায়, আকাশের ভুল
সীমানায় ওড়ে যেনবা হংসদল।
এরকম হলে ঘনঘন কাঁপে এপাড়ার কালো
রজস্বলা সে মেয়েটির বাম চোখ।
এরকম হলে বাড়ি খুঁজে-খুঁজে কাটে সারাবেলা,
পা চলে না আর; ঠিকানা-চিহ্নহীন।
এরকম হলে উদাস দুপুরে নিশুত নিশীথে
বার-বার ছেঁড়ে মীর কাশিমের তার,
গ্রীষ্ম-দুপুরে মুর্ছিত স্বরে দিন দিন বলে
কৃষিঋণ চায় জয়নুলী শত কাক।
এরকম হলে পার্কে কি মাঠে পেনশনভোগী
বয়স্কজন চুষিকাঠি নেন হাতে,
বারোয়ারি কত পার্টি অফিসে দোতারা বাজিয়ে
অন্ধ বাউল গায় লালনের গান।
এরকম হলে চৌরাস্তায় সন্ধ্যাবেলায়
ওড়ে সুবিশাল কৃশপুতুলের ছাই,
দূর শতকের কারুকাজময় পত্র চকিতে
রুক্ষ ধুলায় হয় সানকির নাচ।
এরকম হলে এ শহর ঢাকা বড় অভিমানী,
ভীষণ অসুখী; আঁধারে লুকায় মুখ।
এ শহর ঢাকা কখনও আবার এক নিমেষেই
দীপ্র তরুণ নজরুল ইসলাম।
এরকম হলে আহত বিবেকও লোকচক্ষুর
আড়ালে নিখুঁত পরে নেয় পরচুলা;
মনন, বিবাগী মরালের মতো
ডানা ঝাপটায় অকূল শূন্যতায়।
এরকম হলে বাক্যের ভীরু খরগোশ যেন,
এদিক-ওদিক তাকায় আর্তচোখে।
নিদাঘবেলায় দ্রুত উবে যায় আনন্দসুর,
কাব্যকলার রোদেলা অনুগ্রহে।