রামধনু রঙ মাখা যৌবনের সন্ধিক্ষণে,
পরিচয় আচমকাই তোমার সনে।
সীমান্ত শহরের এপারে ভারত,
ওপার বাংলায় তোমার বসত।
ওপার তখন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি তে তোলপাড়,
সারাদেশ জুড়ে চলছে অরাজকতা, নৃশংস অত্যাচার।
তুমি ও মুক্তিসেনা শুনে বুকে কেমন অচেনা স্পন্দন!
বুঝতেই পারিনি কখন তোমাকেই বেসেছে ভালো এ মন।
বন্ধুর ভাইকে নিয়েই তো প্রথম এসেছিলে বাড়িতে,
সবাই গোল হয়ে বসে যুদ্ধের কথা শুনতো বিস্ময়ে তে।
ভিড়ের মাঝে এককোনে আমিও ছিলাম আড়ে আড়ে,
কি কান্ড! ওমা! ছিঃ তুমিও তো চুপিসারে!
হৃৎপিণ্ডের ধুকপুকানি পাচ্ছি শুনতে,
পরিচয় ক্রমেই নিবিড় সময়ের পথে।
অঙ্গীকারে আবদ্ধ দুটি মন ভালোবাসায়,
মিলন হবেই খুশির বাদ্যে সময়ের আঙ্গিনায়।
মুক্তিযুদ্ধের দামামা বেজে উঠতেই তুমি গেলে চলে,
প্রতীক্ষার অনন্ত সময় ঢলে।
কত কত ঝড়- ঝঞ্ঝা বয়ে গেলো তোমার উপরে,
নীরব তোমার উদাসীনতার কারনটা জেনেছি ঢের পড়ে।
কাল চক্রের আবর্তনে দিন মাস বছর গড়ায়,
দীর্ঘদিন পর বাসস্টপে দেখা দুজনায়।
সময়ের স্বাক্ষর দুজনার ভারী চশমা আর রূপোলী চুলে,
তবুও কি আশ্চর্য্য,আজো যাইনি তো ভুলে।
দুজনেই অপলক ,চোখে মুখে অনুক্ত প্রশ্নের ঝাঁক,
আচম্বিতে বাসের বেরসিক হর্ণের হাঁক।
তড়িঘড়ি বিপরীত মুখী বাসের দিকে তুমি,
বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো,তোমার চোখের কোণ চিকচিক করছে দেখেছি আমি।
তীব্র কষ্টে মনটা ছ্যাৎ করে ,
হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বাড়ছে,চোখে অশ্রু আসে ভরে।