এভকটি বেকারের আর্তনাদ
দীন দরিদ্র ঘরের ছেলে শ্রাবণ বহু কষ্টে বিএসসি পাশ করেছে। বাবা দিনমজুর। কোনোরকমে ছেলেমেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালায়। শ্রবণ চাকরির খোঁজে বহু জায়গায় ঘুরেও চাকরি না পেয়ে বাবার সাথে দিনমজুর খাটে। একটু ভালো থাকার আশায় দু’চারটে টিউশনি করে।
ছোটো বেড়ার ঘরে টিমটিমে কুপির আলোয় ভাই পড়াশোনা করে। শ্রবণ দেখে কষ্ট পায়। ভাইকে বলে চিন্তা করিসনা , কটা দিন কষ্ট কর, আমি ভালো কাজ পেলে ঘরে বিদ্যুতের আলো আনবো।
কিছুদিন পর ভিন রাজ্যে কাজ জুটিয়ে শ্রবণ চলে যায় কাজ করতে। মাসে মাসে ঘরে টাকা পাঠায় নিজে কৃচ্ছ সাধন করে।
ভালোই চলছিল দিন। হঠাৎ খবর পায়, বাবা জমিতে পিছলে পড়ে পা ভেঙেছে। কাজ করতে পারবে না। শ্রবণ চিন্তায় পড়ে, বাবার ওষুধে খরচটা একটু বেড়েছে। শ্রবণের লক্ষ্য বোনকে আগে বিয়ে দিতে হবে। তাই ভালো ছেলে দেখে ধার দেনা করে বিয়ে দিয়ে দেয়।
বেশ কয়েক বছর পর বিয়ের ধার দেনা মিটাতে পারলেও তার কারখানা লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে যায়।
ভগ্ন মনোরথে ফিরে আসে ঘরে। কাজ জুটে একটা চালের গুদামে। ভারি বস্তা টানতে হয়। দুস্থ বাড়ির ছেলে ধকল সইতে পারবে কেন! শরীরে বল পায় না। জ্বর কাশিতে কষ্ট পায়।
মা জোর করে ডাক্তারের কাছে পাঠালে, জানতে পারে তার টিবি অর্থাৎ ক্ষয়রোগ হয়েছে। ওষুধ ছাড়াও ভালো পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে।
শুনে শ্রবণ শিউরে উঠে। তার দিশেহারা লাগে। ধীর পায়ে ফেরার পথে বাড়ির পাশে নির্জন মাঠে দাঁড়িয়ে তার আর্তনাদ “ভগবান, এখন আমি কি করবো”!