Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এক মুঠো ভাতের মন্ত্র || Rita Mukherjee

এক মুঠো ভাতের মন্ত্র || Rita Mukherjee

এখন একটা শ্রাবণ চাই
পৃথিবীর বুকের ধূলি কণায় যে আবর্জনা মিশে গেছে তা ধুয়ে ফেলতে হবে ।
আমি তাঁকেও বলেছি আর তোমাকেও বলছি—
এখনও কেনও চুপ করে বসে থাকবে ?
ভাবছো বুঝি এই ভাবে বেঁচে যাবে তুমি অথবা আমরা ?
বিধ্বস্ত পৃথিবীর পথে পথে একবার হাঁটি চলো —
তোমাকে দেখাবো– নগ্ন পায়ে যারা পৃথিবী বানায়
তোমাকে দেখাবো— কোন জমি তে কত জল লাগে
তোমাকে দেখাবো পাট চাষির বেহাল জীবন
তোমাকে দেখাবো লকআউট কারখানার পাশে ভিক্ষারিদের ও যাওয়া আসা বন্ধ।
তুমি শুধু ভাতের মন্ত্র দিও ।

শ্রমিকের হাঁড়ির খবর রাখো কি ?
হয়তো বলবে — ” পন্থা আছে অনেক– ভাত খাবার ” তবে একটা দুটো আমাকেও বলতে পারো ।
আমি ওদের কানে কানে বলে আসবো সে মন্ত্র ।
তুমি হয়তো জানো না — সুভাষ মিস্ত্রির কচি ছেলেটা মালের গুদামে বস্তা টানতে গিয়ে চড়া রোদে প্রাণটা দিল —–
চাহিদা– দুটি ভাত — অভুক্ত বিধবা মা আর কচি বোনটার জন্য।
বলতে পারো ?– ঐ সংসারটা বাঁচে কি নিয়ে?!
তাই তো বলছিলাম — আমাকে শিখিয়ে দাও সেই ভাত পাওয়ার মন্ত্র টা ।

জানো—–
বৈষ্টমী এখন আর গান শোনাতে আসে না
ভৈরবী রাগে শুনতে পাই না সেই গান– “রাই জাগো রাই জাগো সুখ-সারি বলে , কত নিদ্রা যাও রাধে কালো মানিকের কোলে “
বৈষ্টমী বুঝি বুঝে গিয়েছে — খালি পেটে রাইয়ের ঘুম আসে না রাতে
সারা রাতটাই তার জাগরণের ।
দেয়ালের পোস্টারে কি যেন লেখাছিল!!?
” কলের চাকা ঘুরছে না ঘুরবে না “
“শ্রমিকের দাবি মানতে হবে”
হায় রে শ্রমিক!— তাকিয়ে দেখো , কারা যেন ঘষেমেজে তুলে দিয়েছে তোমাদের সে রক্তলেখন ।
এখন কলের চাকা ঘোরে মালিক পক্ষের ইশারায় ।
শুধু তুমি , তোমরা , আমরা বুঝলাম না ।
মেরুদণ্ড টা সোজা করে যতবার দাঁড়াতে যাই
কারা যেন ভেঙে দিয়ে যায়
খিদের পেটে ভিক্ষার হাত বাড়াই ।

মৃত্যু যেন আসবে নিশ্চয় , হয় না খেয়ে , নয় তো,,, না খেয়ে ( দুবার না খেয়ে কথা অর্থ বাহক )
শ্যামলা গায়ের কাজলা মেয়ে নদীর ঘাটে আসে বারংবার, যদি কোনো বাবুর দেখা মেলে!
তবে রাতে দুটি ভাত চড়বে হাঁড়িতে।
ছোটো ছ্যানাটার ঘ্যানঘ্যানানি সহ্য হয় না আর ।
মনে হয় গলা টিপে মেরে দেয় পেটের শত্তুর টাকে ।

বন্ধু— জানো নাকি একটু সম্মানের ভাত পাওয়ার মন্ত্র টা !?

হরেন কাকার একটিই ছেলে , সবের ধন নীলমণি
চটকল টা বন্ধ হয়ে গেল , বন্ধ হয়ে গেল লেখাপড়া , বন্ধ হয়ে গেল ভবিষ্যতের দরজা ।
হরেন কাকা বলছিল– “ইখানে কিছু হবেক লাই রে ব্যাটা” ,
ছেলেটা এখন শহুরে রাস্তার অলিতে গলিতে–

কিসের খোঁজে !? ভাত না কি কাজ ?
ও জেনে গেছে—–
স্বপ্ন– আশা — আকাঙ্ক্ষা ,,,, সবটাই এখন বড়লোকের ঝুলিতে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *