Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » একটি ফুলের মৃত্যু || Chinmoy Banerjee

একটি ফুলের মৃত্যু || Chinmoy Banerjee

কত ফুল ফুটে ঝরে পড়ে যায়,
এই ধরণীর পরে।
কিছু ফুল পায়,দেবতা চরণ,
বাকিগুলি শুধু মরে।
মায়ের কোলেও ,ফুলের মতন,
কত শিশু জন্মায়।
কেহ পায় প্রাণ,কেহ বা আবার,
মুকুলেই ঝরে যায়।
ধরণীর কোণে, জীর্ণ কুটিরে,
জন্মিল এক নারী।
ফুলের মতন, সুষমা তাহার,
বর্ণিতে নাহি পারি।
চাঁদের মতন মুখখানি তার,
হরিণীসম নয়ান।
ধবধবে সাদা ,দেহখানি তার,
যেনো বিধাতার দান।
পরম যতনে,তমালিকা নাম,
দেন তার জেঠুমনি।
শুভেচ্ছা নামে, ডাকে তার বাবা,
যেনো নয়নের মণি।
মাতার যতনে,স্নেহ সুধা দানে,
তিলে তিলে ওঠে বেড়ে।
হাঁটি হাঁটি পায়ে, সারা গৃহময়,
ঘুরে ফিরে খেলা করে।
পায়ের নূপুর, ঝুমুর ঝুমুর,
রব তোলে তালে তালে।
কভু পড়ি যায়,কভু বা আবার,
হেসে ওঠে খল খলে।
ছুটে আসি মাতা,কোলে করি লয়,
পরম সোহাগ ভরে।
আদর করিয়া, শিশুরে তাহার,
ধূলা বালি দেয় ঝেড়ে।
এমন করিয়া, শৈশব কাটে,
দিন বয়ে চলে দ্রুত।
সেদিনের শিশু, দেখিতে দেখিতে,
কৈশোরে উপনীত।
নদী বয়ে চলে, আপন গতিতে,
কলকল রবে জল।
সময় তেমনি, তার অনুগামী,
অবিরাম অবিচল।
সেদিনের সেই,শিশু তমালিকা,
নবীনা কিশোরী আজ।
অন্তরে তার,জ্ঞানের পিপাসা,
নয়নে তাহার লাজ।
আত্মপরের ভেদাভেদ নাই ,
সুমধুর ব্যবহার।
আবালবৃদ্ধবনিতার কাছে,
কত যেনো আপনার।
এমনি করিয়া বারোটি বর্ষা,
বসন্ত সমাপনে।
নিঠুর বিধাতা,তার জীবনের,
যবনিকা দেয় টেনে।
সেদিন গ্রামের,প্রতি ঘরে ঘরে,
ভাই ফোঁটা আয়োজন।
শঙ্খ নিনাদে উঠিয়াছে ভরি,
প্রতিটি গৃহের কোণ।
ভায়ের দীর্ঘ জীবনের লাগি,
যমের দুয়ারে কাঁটা।
মন্ত্র বলিয়া বোন দেয় তার,
ভায়ের কপালে ফোঁটা।
ভাইফোঁটা লাগি তাদের ঘরেও,
চলছিলো আয়োজন।
তমালিকা যায় জিনিষ কিনিতে,
যাহা ছিলো প্রয়োজন।
সাথে ছিল তার পিসিমার মেয়ে,
উভয়ে মিলিয়া যবে।
বাড়ির পাশের মুদির দোকানে,
উপনীত হলো সবে।
সিঁড়িতে দাঁড়ায়ে যখন তাহারা,
ডাক দিলো দোকানীরে।
কোথা হতে কাল সর্প আসিয়া
নিমেষে কাটিল তারে।
পলকের তরে বিবর ভিতরে,
প্রবেশিল তাহা দ্রুত।
সকলে ভাবিল হয়তো বা এটি,
হুল ফুটানোর ক্ষত।
বিষের জ্বালায় তমালিকা হায়,
করিতেছে চিৎকার।
হলাহল ক্রিয়া তাহার শরীরে,
হইতেছে বিস্তার।
চিকিৎসা তরে তাহারে লইয়া,
হাসপাতালের পথে।
দিলো সবে পাড়ি মোটর গাড়িতে,
অতি দ্রুততার সাথে।
কিন্তু গরল আরও দ্রুততায়,
চালায়ে তাহার রথ।
থামাইয়া দিলো জীবনের গতি,
বিফল হইলো সব।
নামিয়া আসিল নিদারুণ শোক,
গ্রামের প্রতিটি ঘরে।
সকলে আসিয়া উপনীত হলো,
আজি তাহাদেরই দ্বারে।
নীরব নিথর দেহখানি তার,
পড়ে আছে গৃহমাঝে।
সম্বিৎ হীনা জননী তাহার,
পাশেতে পড়িয়া আছে।
আবাল বৃদ্ধ বনিতার চোখে,
বহে নয়নের ধারা।
কি করিবে হায়,ভাবিয়া না পায়,
সকলেই দিশাহারা।
এ যেনো ভায়ের মঙ্গল তরে,
নিজেরে বিসর্জন।
যমের দুয়ারে কাঁটা দিয়ে হলো,
ভাইফোঁটা সমাপন।
ওগো দয়াময়,তোমার নিকটে,
এই প্রার্থনা হায়।
নিথর নীরব বোনের আত্মা,
যেনো গো শান্তি পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *