একজন কী সুদূর রূপালি কবির কাছে আমি
প্রায়শ যেতাম অগোচরে, যন্ত্রণা গভীর হ’লে
হৃদয়ের; দেখতাম রাজহাঁস তাঁর অনুগামী
মোহন অভ্রের কুটিরের কাছাকাছি; কথাচ্ছলে
পাখিকে ডাকার মতো ডাকতেন কবিতাকে, তাঁর
পায়ের তলার নুড়ি কী আনন্দে হতো হৃৎস্পন্দন।
নক্ষত্রের বাক্সে পায়রার মতো ব্যালট পেপার
ফেলেছেন বারবার। ছিঁড়ে-খুঁড়ে রীতির বন্ধন
নিজের ভেতরে তীব্র দিয়েছেন ভেটো সর্বদাই
ধ্বংসের বিপক্ষে, রেখেছেন বাক্য অর্ধবাক্য আর
বিশেষ্য ও বিশেষণ শুইয়ে দিঘিতে, ঘাসে ঘাসে।
কখনো চালান মেঘে মেঘে মেরুন মোটরকার
এবং জুতোর নাকে জ্বলে স্বপ্ন সুদূর নিশ্বাসে
তাঁর প্রান্তরের আর সুপ্ত পাতালের ঘ্রাণ পাই।
অন্তরালে থাকা ছিলো সে রূপালি কবির স্বভাব।
নিভৃত আস্তানা থেকে তাঁর দূরে চলে গেলে কানে
মধুর বাজতো সুর, স্পন্দমান অদৃশ্য রবার।
বয়স বুঝিনি তাঁর, এমনকি তাকেও বুঝিনি
কোনোদিন; সবুজ আয়ত তাঁর চোখে কী যে আছে,
কী যে আছে হাতে, ক্ষিপ্র পারেন লাগাতে ছিটকিনি
অন্তর্গত দরজার। চৈতন্যের অত্যন্ত গহনে
অক্লান্ত সাঁতারু তিনি, নিজেই নিজের অন্তর্যামী।
মাঝে মাজেহ মনে হয়, সত্যি কি গিয়েছি তার কাছে?
বলতেন, তুমি ঐ হরিণের পেছনে পেছনে
ছুটে যাও, তার স্পর্শ যদি পাও, বিশুষ্ক বাগানে
জাগবে বর্ণিল শোভা, আমি পথ ছেড়ে বনে নামি-
সর্বত্র বেড়াই ছুটে, অথচ হরিণ পলাতক
সে কোন অরণ্যে। হরিণের পদধ্বনি যত দূরে
যায় তত স্পষ্ট হয় আপনার সমাধি ফলক।
একটি জীবন বাজে ক্রমাগত হরিণের খুরে।