Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এই তো বেশ আছি || Samarpita Raha

এই তো বেশ আছি || Samarpita Raha

গভীর তমসাচ্ছন্ন রাতে এক অবলার মাঝে মাঝে চিৎকার–
আসন্ন প্রসবা মূক বধির অসহায় লীলার সাথে কারা যেন লীলা দেখিয়ে বীরত্ব দেখিয়েছিল।
হায় রে কত না পাপ লুকিয়ে আছে অন্ধকারে!
কুমারী লীলা ব্যথায় যন্ত্রণায় ক্লান্তিতে কখনো সখনো নিশ্চুপ ছিল,
কয়েকটি সারমেয় ইতস্তত বসেছিল হয়ত সুখবর পাবার আশায় !
মাঝে মাঝে জল রক্তধারা অবাক চোখে দেখছিল
হয়তো শেষ রাতে চতুর্দশীর প্রসব যন্ত্রণার পরেই তিথিক্ষয়ে পূর্ণিমার জন্ম হবে ।
শোনা যাচ্ছে সারমেয়দের করুণ রব
জন্ম নিয়েছে এক দেবদূত!
যার কণ্ঠস্বরে ঘেউ ঘেউ কোথায়!
ওয়া ওয়া আহ্লাদে শব্দ!
ভোররাতে তারারা মিটিমিটি জ্বলে অদৃশ্য হচ্ছে,
যেন খোকার আবির্ভাবে নীহারিকারা মঙ্গল ধ্বনি দিতে দিতে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে যায়।
হয়ত প্রসবের পর কিছু সময় অতিবাহিত হয়–
মুখ বধির মা অজান্তে শিশুকে বুকের উপর রেখে তারাদের দেশে পাড়ি দেয়।
নবজাতকের তখন থেকেই শুরু হয় বেঁচে থাকার যুদ্ধ,
মাতৃস্তন্যধারায় স্নাত হয় যেন–
একটি ছোট্ট সারমেয় শাবক ও মাতৃসুধার স্বাদ পেয়েছে !
কতকগুলো লাল পিঁপড়া ভাগ বসাতে হানা দেয় দুগ্ধসাগরে!
সারা পৃথিবী যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন
তখন একা একা নবজাতকের লড়াই চলছে!
আসলে তার মা তো পথশিশু থেকে বারো বছরের ধর্ষিতা নারী ছিল,
কতকগুলো হায়না এসে মৌজ করে জন্ম দিয়ে গেছে অপূর্ণা শরীরে।
শিশুটি আশ্রয় পায় এক সন্তানহীনা পুলিশ অফিসার দম্পতি র কাছে,
শিশুটির মায়ের চুপকথা বরাবরের মতো চুপ থাকে ।
জন্ম নিয়ে নানান প্রশ্ন থেকে যায়,
শিশুটি পিতা হয়ত মীরজাফর,রায়, ঠাকুর,সেন,দত্ত,বন্দ্যোপাধ্যায়,
কোনো ডাকু পরিবারের উত্তরাধিকার হতে পারে!
শিশুটি বড়ো হলে শিশুর জিন বলে দেবে।
ক্রমশ শিশুটি শৈশব পেরিয়ে যৌবনে আসে সুপ্রতিষ্ঠিত ডাক্তার রূপে।
ডাক্তারবাবুর মা, স্বামী হারিয়ে দীর্ঘদিন বৃদ্ধাশ্রমে আছেন!
পুলিশ পত্নী ভাবেন পর কখনো আপন হয় না
কুয়াশার চুপকথাগুলো ,জন্মবৃত্তান্ত পালিত পুত্রের বড়ো হবার কাহিনী
আজ পুঁথি হয়ে বিশ্বকে চমক লাগিয়েছে!
প্রেসে হাজার হাজার বই মুদ্রণ হবার সাথে সাথেই দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে
ওই নবজাতকটি মা হারিয়ে পিঁপড়ার কামড় খাচ্ছিল–
আজ ডাক্তার কুশল রায় সমগ্র সমাজের কাছে নানান কামড়ে রক্তাক্ত।
কুশল রায় নাকি বেজন্মা,
এমনকি তার স্ত্রী ও ,শাশুড়িকে সহ্য করতে পারত না
সব ঘটনা পরপর সাজানো ছিল বইয়ে
বৌমা বলেছে ওই বুড়ির ভীমরতি হয়েছে নাকি!
সন্তান তো পেটে ধরেন নি , মাতৃত্ব কিভাবে আসবে!
জীবন ভাটায় বিলুপ্ত করে দিয়েছে বৃদ্ধাকে
কত সময় হারিয়ে গেছে সময়ের ভিড়ে
পালিত সন্তান পর করেছে আজ
তাই তো ঠাঁই পেয়েছে অন্য নীড়ে।
একটু একটু করে স্মৃতি হলুদ হয়ে যায়
আস্তে আস্তে সব ঝরে পড়ে।
জানেন বৃদ্ধাশ্রমে খুবই মজাতে আছি
পাতায় পাতায় জীবনের কথা ঝরে।
অতীত সব অতীত থাকুক
বর্তমান নিয়ে বাঁচি
নানান কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ বদলে যাচ্ছে!
কেউ ভালোবাসায়, কেউ বা অবহেলায়!
কেউ আঘাতে আঘাত অস্তিত্ব হারায়,
কেউ বা বদলায় প্রতিশোধ নেবার জন্য!
কেউ পুরোপুরি পাল্টে যায় স্নেহ মমতায়,
কেউ বা বেঁচে থাকে শুধু অন্যের দয়ায়।
পৃথিবী আপনমনে ঘুরতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *