উচ্চাকাঙ্খা
পুলিশের গাড়িতে একদিকে বসে আছে সমুজ্জ্বল বেজবড়ুয়া । অপর প্রান্তে মিস্টার ও মিসেস বেজবড়ুয়া । সমুজ্জলের পিতা ও মাতা । দুজনের মুখ বিষাদে ভরা । সমুজ্জল মনে মনে ক্ষমা চাইলো বাবা মা’র কাছে ।
জে ই ই পরীক্ষায় সমুজ্জ্বল ৯৯.৮% পেয়ে টপ করেছে । চারদিক থেকে অভিনন্দনের ঢেউ । কিন্ত সমুজ্জল নিজেকে কিছুতেই মানাতে পারছিলো না । পিতা সমর বেজবড়ুয়া রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্ত কর্মচারী ও মা কবরী দেবী প্রাইভেট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ্যা ।
সমুজ্জলের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা কোনোদিন ছিল না, বরং শিক্ষকতার পেশাই পছন্দ ছিল । কিন্ত বাবা, মা কিছুতেই রাজি ছিল না । অচেনা লোকদের সাথে বাবা ফোনে বার্তালাপ করতো । সমুজ্জলকে বলেছিলো, তোকে কিছু করতে হবে না, তুই লগ ইন করেই বেরিয়ে আসবি । সেই মতো সব কিছু হয়েছিল । রেজাল্ট আসতেই দেখা গেলো, সমুজ্জল টপ করেছে ।
কিন্ত সমুজ্জল গোটা ব্যাপারটা কিছুতেই মানতে পারলো না । ভিতরে ভিতরে প্রতিদিন ভেঙে যেতে লাগলো । নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলো না । প্রিয়তম বন্ধু কুলদীপের সাথে সবকিছু শেয়ার করলো । কুলদীপ এই গরম খবর ভাইরাল করার লোভ সামলাতে পারলো না । পরদিনের সোশ্যাল মিডিয়ার টপ ভাইরাল নিউস ছিল এটা । খবর ছিল কুড়ি লক্ষ টাকায় নাকি লেনদেন হয়েছে ।
পুলিশ এসেছে ওদেরকে থানায় নিয়ে যেতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য । সমুজ্জল মনে মনে বলছিলো, আমিতো কিছু দোষ করিনি । কি দরকার ছিল আমাকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবার । শিক্ষকরাওতো সমাজ গড়ে । তবুও কেন মাতা পিতার উচ্চাকাঙ্খার কাছে সন্তানের সুকুমার মন আজও অবহেলিত ।