Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

দানু ফের সরষুদেবীর বাড়িতে

দানু ফের সরষুদেবীর বাড়িতে বহাল হয়েছে এবং তার আদর বেড়ে পাঁচ গুণ হয়েছে। রাধাগোবিন্দবাবুর ‘দারোগার দীর্ঘশ্বাস তরতর করে এগিয়ে চলেছে। ক’দিন ফাঁক যাওয়ার পর বটেশ্বর দ্বিগুণ উৎসাহে ভারতশ্রী হওয়ার জন্য ব্যায়াম শুরু করেছে। হারাধনবাবু আবার পায়েসপুরের গৌরবের কথা লোককে স্মরণ করিয়ে দিতে চরকির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

দেখতে-দেখতে হবিবপুরের সঙ্গে পায়েসপুরের ফিরতি ম্যাচের দিন এসে গেল। এবার খেলা পায়েসপুরে, মাঠে লোক ভেঙে পড়েছে। মাঠভর্তি দর্শকদের মধ্যে বিশিষ্ট আসনে ভূপেনদারোগাও বসে আছেন।

যথারীতি দানু অষ্টাবক্র মুনির মতো বল ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গিয়েছে এক ফাঁকে। ভূপেনবাবু “অফ সাইড, অফ সাইড,” বলে চেঁচাচ্ছেন। এবং যথারীতি দানু গোল দিয়ে দিল। কেউ এঁটে উঠতে পারছে না তার সঙ্গে। আজ সে, দুর্ধর্ষ খেলছে। সবাই বলাবলি করতে লাগল, সাধুর আরক খেয়ে দানুর খেলা আরও খুলেছে।

হবিবপুর শেষ অবধি আট গোলে হেরে মাথা নিচু করে ফিরে গেল। ভূপেনবাবু অবশ্য বাজে রেফারিং-এর দোষ দিতে ছাড়লেন না।

হলধর ঘোষের বাড়িতে সকালের জমায়েতটি রোজকার মতো আজও বসেছে। হলধর তাঁর নতুন আবিষ্কারের কথা সবিস্তার বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁর তিনটি আবিষ্কার শেষ হওয়ার মুখে। অটো-ঝি, অটো-ঝাটা এবং অটো-রুটি। শুনে কেউ হাসলেন না। কারণ, হাসাহাসি করলে চা, চির্ডেভাজা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। শুধু হারাধনবাবুই উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন, “বের করে ফেলুন, বের করে ফেলুন! জগৎসভায় পায়েসপুরের নিশেন উড়িয়ে আসতেই হবে। আর নোবেলটা এনে ফেলতে পারলে ভূপেনদারোগার মুখে একেবারে ঝামা ঘষে দেওয়া যাবে। নোবেল-মন্দিরও বানিয়ে ফেলব একটা, যেখানে রেগুলার পুজোপাঠ হবে, দেশ বিদেশের লোক ভেঙে পড়বে পায়েসপুরে।”

বড্ড ফাপড়ে পড়ে গিয়েছে গদাই। চিনির বলদ কাকে বলে তা খুব টের পাচ্ছে সে। কাকালের ব্যথায় সেদিন হাঁটতে ইচ্ছে করছিল না বলে উড়ুক্কু গালিচায় চেপে পায়েসপুর ঘুরে আসবে বলে ঠিক করেছিল। সবে গালিচাখানা চাতালে পেতে উঠতে যাবে অমনই গালিচার ভিতর থেকে সাধুবাবার গমগমে গলা পাওয়া গেল, “উঁহু!” শীতের শুরুতে একদিন একটু পোলাও কালিয়া খাওয়ার জন্য প্রাণটা আনচান করায় অক্ষয় থালাটা চুপিচুপি বের করে বাসনা ব্যক্ত করতে যেতেই থালা কেঁপে উঠল এক বজ্রকণ্ঠে, “উঁহু!” শীতের শুরুতে একখানা নরম ওমওয়ালা কম্বল কিনবে বলে একখানা বাটখারা কিনে এনে তাইতে পরশপাথরটা ঠেকাতে গিয়েছে, অমনই পাথরের ভিতর থেকে সাধুবাবার বিটকেল গলায় ফের সেই, “উঁহু!” কিছু কাঠ কেটে জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে, কিন্তু সেদিন বড় কবজির ব্যথা। তাই ভাবল, দত্যিটাকে দিয়ে করিয়ে নিলেই তো হয়! পিদিমটা দোনোমোনো করে সবে ঝোলা থেকে বের করেছে, পিদিমের ভিতর থেকে সেই থমথমে গলা ধমকে উঠল, “উঁহু!” এখন উঁহুর ঠেলায় গদাই একেবারে অস্থির।

তবে সে কিছু খারাপও নেই। জড়িবুটি ফিরি করে, সাপের বিষ বের করে, যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়। না, ভেবে দেখলে, সে বেশ আনন্দেই আছে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7
Pages ( 7 of 7 ): « পূর্ববর্তী1 ... 56 7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress