Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আমি কি পাগল? || Pallav Sanyal

আমি কি পাগল? || Pallav Sanyal

রাতের নীরবতা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। ঘরের দেয়ালে টিক টিক শব্দে চলা ঘড়ি যেন তার একাকীত্বকে আরও গভীর করে তুলেছিল। রমেশ, যে একসময় হাসিখুশি স্বভাবের ছিল, আজ নিঃশব্দে বসেছিল। তার চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল—চোখের জল ভরে উঠেছিল, কিন্তু সে সেই জল ঝরতে দেয়নি।

তার জীবনের এক সময় ছিল যখন সে নিজেকে কারও জন্য পুরোপুরি উৎসর্গ করেছিল। নীতু… সেই মেয়ে যে রমেশের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সত্য ছিল। নীতু প্রথমবার তার জীবনে এলে, রমেশের মনে হয়েছিল যেন তার গোটা পৃথিবী বদলে গেছে। নীতুর হাসি, তার কথা বলা, এবং তার উপস্থিতি রমেশের জীবনকে উজ্জ্বল করে তুলেছিল।

কিন্তু ধীরে ধীরে নীতুর আচরণ বদলাতে লাগল। সে আর রমেশকে গুরুত্ব দিত না। রমেশের মিনতি, তার ভালোবাসায় ভরা কথা, এবং তার চেষ্টাগুলি নীতুর কাছে একটা অভ্যাসের মতো হয়ে গিয়েছিল।

রমেশ বারবার নীতুর পরিবর্তিত আচরণ উপেক্ষা করত। সে ভাবত, “হয়তো আমার দোষ আছে। হয়তো আমার ভালোবাসায় কোথাও কমতি আছে।” কিন্তু সত্য এটাই ছিল যে নীতু কখনোই রমেশের ভালোবাসাকে বোঝার চেষ্টা করেনি।

দিন আসে যখন নীতু সরাসরি রমেশকে উপেক্ষা করতে শুরু করে। সে যেন রমেশের আবেগকে খেলনার মতো ব্যবহার করত। রমেশ বারবার তার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করত, কিন্তু নীতু তাকে দূরে ঠেলে দিত।

রমেশ তার সমস্ত আনন্দ, তার স্বপ্ন, এমনকি তার আত্মসম্মানও নীতুর জন্য ত্যাগ করেছিল। সে নিজের মনকে বারবার সান্ত্বনা দিত, “একদিন নীতু বুঝবে। একদিন সে আমাকে সেভাবে ভালোবাসবে, যেভাবে আমি তাকে ভালোবাসি।”

কিন্তু সেই দিন কখনো আসেনি।

এক সন্ধ্যায়, যখন নীতু রমেশকে অপমান করল এবং বলল, “তোমার নিজের উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, আমার পেছনে ঘুরে কোনো লাভ নেই,” রমেশ ভেঙে পড়ল। সে বুঝতে পারল, নীতু কখনো তার আবেগের মূল্য দেবে না।

সেই রাতে, রমেশ তার ঘরে একা বসে নিজেকে একটি প্রতিশ্রুতি দিল। সে বলল, “এবার আমি কারও জন্য বাঁচব না। এবার আমি নিজের জন্য বাঁচতে শিখব।”

ধীরে ধীরে রমেশ নিজেকে বদলাতে শুরু করল। তার যন্ত্রণা সে নিজের শক্তিতে পরিণত করল। যে স্বপ্নগুলি সে নীতুর ভালোবাসার মধ্যে হারিয়ে ফেলেছিল, সেগুলিকে সে আবার বাঁচিয়ে তুলল।

এখন রমেশ একা, কিন্তু দুর্বল নয়। সে নিঃশব্দ, কিন্তু শান্তিপূর্ণ। তার একাকীত্বকে সে তার শক্তিতে পরিণত করেছে। সে শিখেছে যে ভালোবাসা খারাপ নয়, কিন্তু নিজেকে হারিয়ে ফেলা সবচেয়ে বড় বোকামি।

রমেশ এখন নতুন পথে হাঁটছে—তার নিজের আনন্দ খোঁজার পথে। এবং এবার, সে জানে যে তাকে নিজের জন্য বাঁচতে হবে, নিজের সুখের জন্য লড়াই করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *