পর্ব – ৩
বিহারী রেল পুলিশ অগোছালো ভাবে যা বলল তার সারমর্ম কলকাতা জুড়ে নামী দামী পুজো হয় , কোন একটা পুজো এই ভাবে বলা যাবে না । আমি যেন লোকদের জিজ্ঞেস করে করে ঠাকুর দেখি । আর মেলা প্রায় সব প্যান্ডেলেই হয় ।
কি আর করা যায় । স্টেশনের বাইরে এলাম । বাস স্ট্যান্ড নয় তো , হরিহর ছত্রের মেলা । একে তাকে জিজ্ঞেস করে উঠে বসলাম এক বাসে । কন্ডাক্টার এক জায়গায় নামিয়ে দিল , সেখান থেকে হেঁটে দেখলাম বাগবাজারের পুজো , এটা না কি কলকাতার প্রাচীন পুজো । মাঠ জুড়ে মেলা বসেছে । দুপুর বেলা বলে সব দোকান খোলে নি। সব মেলা দেখে শেষে পছন্দের জিনিস কিনব , এটাই ঠিক করে রেখেছি ।
এত পুজো যে কলকাতায় হয় আমার ধারনা ছিল না । কত রকমের প্যান্ডেল , ঠাকুরের নানার আকৃতি , আমি তো অবাক । হেঁটে হেঁটে অনেক ঠাকুরই দেখলাম । সন্ধ্যে হয়ে আসছে , ক্ষিদে ও পেয়েছে । মুড়ি তেলেভাজা খেলাম । খুচরো টাকা গুলো খরচা করে । একটা মেলাতে দেখি বন্দুকের গুলি মেরে বেলুন ফাটানোর দোকান । আমিও ফাটালাম , তবে তেমন সুবিধে করতে পারলাম না । রাত হয়ে আসছে কিন্ত চারদিকে এত আলো এত আলো আর মানুষের ভীড় ,বোঝাই যাচ্ছে না রাত নেবেছে ।
একটা প্যান্ডেলের ঠাকুর দেখে বেরিয়ে রাস্তা হারালাম । পথচলতি মানুষদের কাছে হাওড়া স্টেশনের হদিশ জানতে চেয়ে ব্যর্থ হলাম , ওরাও কলকাতায় ঠাকুর দেখতে এসেছে , ওরা শিয়ালদার রাস্তা দেখাতে পারে । শেষে এক পান দোকান থেকে হাওড়া যাবার রাস্তার সন্ধান পেলাম । হাঁটতে শুরু করলাম । রাস্তায় পুলিশ বাঁশ বেঁধে দিয়েছে , রাস্তা ইচ্ছে মতন এপার ওপার করা যাচ্ছে না । তাদের মর্জি মাফিক যেতে হবে । এমন করে একটা জায়গায় এলাম যেখান টা বেশ ফাঁকা ফাঁকা বাড়ি গুলো সব টালির বা টিনের ছাউনি আলোর রোশনাই নেই , নতুন জামা কাপড় পরা লোকের ভীড় নেই । লোকগুলো কেমন যেন । খুব সরু রাস্তা , গাড়ি ঘোড়া যায় বলে মনে হয় না। আমার অস্বস্তি হতে লাগল । আমি তাড়াতাড়ি হাঁটতে লাগলাম । একটা বাঁক নিতেই ঘটে গেল ঘটনাটা ।
সুন্দর লেখা। কয়েকটি ব্যাপার মন ছুঁয়ে যায় তবে আমার
মনে হয় যে যার ধর্মটিকে সম্যক দূরত্বে রেখে যদি শুধু
মানবিক মন নিয়ে সমাজটাকে দেখি, তাকে উপলব্ধি করি,
আরও বেশি স্বচ্ছ ও সুন্দর হয়। আরও বেশি পবিত্র ও
গ্রহণীয় হয়। ভালো লেখা শ্রদ্ধেয়। এভাবেই কলম এগিয়ে
যাক নিরপেক্ষ ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে। শুভেচ্ছা তো থাকলই।
নম্রতায়-
” যাযাবর……. “
খুব সুন্দর বক্তব্য। প্রাণিত হলাম।
অসাধারণ মুগ্ধ সৃজন। বিভেদকামী ধর্মের চেয়ে মানবিক মূল্যবোধের ও এবং চেতনার গুরুত্ব অপরিসীম। মনুষ্যসৃষ্ট তথাকথিত ধর্মের সুড়সুড়ি কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের আখের গোছানোর অন্যতম কৌশল।
সুস্থ সামাজিক এবং সাম্যের গান ধ্বনিত হোক প্রতিটি মানুষের অন্তরে। চলুক কলম।
একদম ঠিক কথাই বলেছ। বিভেদকামী শক্তিদের চিহ্নিত করে নিজেরাই পারি তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সমাজে মৈত্রী ও সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে তুলতে।