যখন ভীষণ বিমর্ষ হয়ে যাই
খুঁজে পাইনা কোনো শব্দমালা,
তখন মধ্য গগনে সূর্যটা
সাঁতার কেটে চলে অবিরাম।
কিছুতেই পেরিয়ে যায়না সময়।
থমকে দাঁড়ায় মধ্যাহ্ন কাল।
আমি আমার ভায়রার দেওয়া দামি স্কচের বোতলটা বের করে
আমার ইচ্ছেদের পেট ভরে খাইয়ে দিই।
আমার ইচ্ছেরা তখন আমার সবচেয়ে প্রিয় নদীটাই ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে এপার ওপার করতে থাকে বারবার।
অথচ আমাকে পুকুর ঘাটে ডুব দেওয়া শেখাতে গিয়ে পিসতুতো দাদা বলেছিলো,
“এর চেয়ে পি.এইচ.ডি করা অনেক সহজ।”
আমার ইচ্ছেরা এখন দুরন্ত নদীর দুরন্ত স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সাঁতার কাটছে এপার থেকে ওপার।
তারপর আসার সময় দেশের সবথেকে দামি শিল্পপতি কে
নদীতে বেঁচে দিচ্ছে মাত্র পাঁচ টাকায়।
আমার ইচ্ছেরা দামি স্কচ্ টা খেলে পাহাড়ের এচূড়া থেকে ওচূড়া অনায়াসে ডিগবাজি খেতে খেতে চলে যায়।
অথচ আমার প্রেমিকার সাথে দার্জিলিং বেড়াতে গিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে গগনভেদী চিৎকার করে বলেছিলাম,
এই উঁচু-নিচু রাস্তা আমি কখনোই পেরোতে পারিনা।
ছোটোবেলা থেকেই আমার হাঁটু দুটো দুর্বল।
যেজন্যে ফুটবল মাঠের শুধু ছবি এঁকেছি, কোনোদিন ধারেকাছেও যাইনি।
আমার ইচ্ছেরা তখন সমস্ত পাহাড় চূড়ায় বিজয়ের নিশান উড়ায়।
আমার ইচ্ছেরা দামি সিঙ্গল মল্ট স্কচ্ খেলেই পৃথিবীর সব সৌন্দর্যকে জড়ো করে মিলিয়ে দেখতে চায়,
তার থেকে আমার প্রেমিকা সুন্দরী কিনা।
একটু স্কচ্ খেলেই পৃথিবীর সব সাহিত্যিকের নোবেল পুরস্কার কেড়ে নিয়ে বাজারের মাঝখানে
পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দিতে চায়।
কারণ এইসব সাহিত্যিকেরা কখনো কি মানুষের গুণগান গায়?
আমার ইচ্ছেরা দামি স্কচ্টা খেলেই ছুটে যায় বনানীর অঞ্চলে।
তারপর কুরুলের ঘায়ে একে একে সব গাছগুলো কেটে ফেলে
প্রতিবাদের ভাষা শেখায়।
এখন আর নির্জীব, নিশ্চুপ থাকার সময় নয়।
আমার ইচ্ছেরা পৃথিবীর সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানায়।
আমার ইচ্ছেরা কাল রাতে চেঁচামেচি করে স্কচ্ চেয়েছে আরও।
পৃথিবীর যাবতীয় কলুষতা দূর করে স্বর্গীয় উদ্যান বানাতে চায় আরও।
পৃথিবীর সব রাষ্ট্র প্রধানদের মিছিল করে দাঁড় করিয়ে জীবন পাঠ শেখাতে চায় আমার ইচ্ছেরা।
তাই তারা আরও স্কচ্ চায়।