আমাদের ঘর, গ্রাম সেই পদ্মপুকুর
কোনো এক অনূঢ়া পাড়ায়
কিশোর বেলায় সময়গুলো খুঁজি;
খুঁজি জলস্রোতে ভেসে আসা শাপলা, দীর্ঘায়িত প্রতীক্ষার পথ
আমাদের মৌলিক অপসৃয়মান মুখশ্রী আমাদের ঘরবাড়ি ঠিক এখানেই হয়ত ছিল,
যেখানে গোধূলির ম্লান ছায়া ঘুমোয় নিভৃতে, শুয়ে থাকে হলুদ চাঁদ, বাঁশঝাড় সারি সারি নারকোল, ভুতুড়ে ছায়া
নিম তেঁতুলের বনে, যেখানে জোছনা
ভেঙে পড়ে ভাঙাচোরা নদীর কূলে
মেঠো পথ, বনফুলের গন্ধ জেগে থাকে গোপনে, যেখানে আকাশের বুকে তারারা জ্বলে তারার মত,
যেখানে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে জাগে সবুজ
ঘাসের বিশ্বাস ,
হয়ত বা ঠিক ওখানে নয়
আরো কাছাকাছি কোথাও
যেখানে বন কলমির ভেষজ লতার
মালা পরা বোনেরা খেলে যেত ,
উলুখাগড়ার বনের ভিতর লুকিয়ে রেল ইঞ্জিনের শান্টিং-এ কতকাল, কতকাল ওদের চলে যাওয়া দেখেছি
হয়ত ঠিক সেখানে, যেখানে চাঁদ ডুবে
গেলেও জোছনা জেগে থাকে ,সেই গ্রাম হয়ত বা আমাদের ঘরবাড়ি, ছিল কোনোকাল ;
তবে এটুকু মনে আছে কিশোরবেলার স্মৃতি
সেই জ্যৈষ্ঠের বিকেলের কথা,
আম গাছের কথা ,আমগুলো
হলুদ হয়েছিল,
হঠাৎ ‘গুম’ করে একটা আওয়াজ
বাবা বলল পালাতে হবে ওরা
এসে গেছে ,
ফাটা জমিনের উপর দিয়ে, উলুখাগড়ার বন পেরিয়ে, সাম্পানে চড়ে নদীর
বুকে ভাসতে ভাসতে কতকাল
কতকাল যে এভাবে পিছনে
ফেলে এসেছি, আমদের ঘর গ্রাম
হয়ত বা কালস্রোতে ভেসে গেছে
তবে সেই স্মৃতিগুলো জেগে আছে ওরা জেগে থাকে চিরকাল!