আজ একুশে জুলাই
গতকাল রাত থেকেই শহরের প্রতিটি রাস্তায়
যাত্রীশূন্য শত শত বাস লরি; টেম্পু;—-
অটো-রিক্সা; ও হাতে টানা রিকশা দাঁড়িয়ে আছে
রাস্তাঘাট ;বাস ;ট্রাম ;সব বন্ধ।
পাশের বাড়ির পরিচারিকা মাসিমার মুখে শুনলাম
আজ সকল রিক্সাওয়ালারা—-
একশো টাকা করে চাঁদা দিয়েছেন;
এক প্রকার দিতে বাধ্য হয়েছে;
অবশ্য একটা বিরিয়ানীর প্যাকেট পাওয়া যাবে হয়তো।
থলে নিয়ে এক প্রতিবেশী বৃদ্ধ বাজারে গিয়ে দেখেন
সব দোকানের ঝাপ বন্ধ
ওরা সবাই ধর্মতলায় চলে গেছে
শুনলাম গতকাল কোন এক নেতা ওদেরকে বলে গেছেন
“আগামীকাল দোকান খোলা রাখলে সারা
জীবনের জন্য দোকান বন্ধ হয়ে যাবে”
না খেতে পেয়ে মরার ভয়ে সকল দোকানদারেরা
দোকান বন্ধ করে ধর্মতলায় গেছেন।
আজ একুশে জুলাই
ভোর থেকেই অসুস্থতায় কাতরাচ্ছে মুমূর্ষু রোগী
মাগো… বাবা-গো.. প্রাণটা বেরিয়ে গেল… বলে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর থেকে আর্তনাদ বেরিয়ে আসে,
অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার রাস্তাটাও বন্ধ।
আজ একুশে জুলাই
সারাদিন হই হুল্লোড়
১৯৯৩ এর এই দিনে শহীদ হয়েছিল যাঁরা,
আসল ইতিহাস পড়ে আছে চাপা
তাঁহাদের ডাকে কেউ দেয়নিকো সারা।
মঞ্চে আলোকিত উপবিষ্ট ভাষণ
দিনশেষে পড়ে থাকে সব আয়োজন
পড়ে থাকে শূন্য মঞ্চ; পড়ে থাকে শুন্য আসন
যে পতাকার জন্য এত লড়াই–
যে পতাকার জন্য এত বড়াই–
ধুলিময় রাস্তায় পড়ে আছে দেখো;
খাচ্ছে গড়াগড়ি আজও পতাকা সেই-ই,
তলিয়ে যায় দিনটির মহানুভবতা
হয়তো এভাবেই আগামী দিনেও অনবরত চলবেই;
আজ একুশে জুলাই।