Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অসমাপ্ত রবীন্দ্রজয়ন্তী || Jharna Das

অসমাপ্ত রবীন্দ্রজয়ন্তী || Jharna Das

অসমাপ্ত রবীন্দ্রজয়ন্তী

মাসি আজ ২৫শে বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। স্কুলের পাশের মাঠে অনুষ্ঠান হবে। সবাই নাচ, গান, কবিতা বলবে! আমিও একটা কবিতা বলবো,প্র্যাকটিস্ করেছি। তুমি আমার নাম টা লিখিয়ে দিও।
মাসি বলল ভালো করে মুখস্থ করেছিস তো। ঝুমকি বলল,হ্যাঁ ভালো করে মুখস্থ করেছি আর কিভাবে স্টেজে উঠে বলতে হয় সব শিখে নিয়েছি তুমি শুধু আমার নামটা লিখিয়ে দিও মাসি বলল আচ্ছা ঠিক আছে।
ঝুমকি মাসির বাড়িতে মাসির সঙ্গে থাকে।মাসির মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাবার পর মাসি একদম একা হয়ে গেছে তাই ঝুমকিকে তার বোনের কাছ থেকে এনে নিজের কাছে রেখেছে। কথা দিয়েছে মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে, পড়াশোনা করবে। মেয়েদের বিয়ের পর বড় একা হয়ে গেছি, তাই তোর মেয়েটা সব সময় আমার কাছে কাছে থাকব। মায়ের মত বড় দিদির কথা ফেলতে পারেনি ঝুমকির মা। তাই ঝুমকিকে মাসির বাড়ি থাকতে পাঠিয়ে দিয়েছিল। মাত্র আট বছর বয়স ঝুমকির।ক্লাস ওয়ান থেকে সবে ক্লাস টু তে উঠেছে।
মাসির অনেক বড় বাড়ি, এই বাড়িতে ঝুমকি আর ওর মাসি থাকে।
স্কুলে যায়, পড়াশোনা করে, মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে,অল্প বাড়ির কাজকর্মও করে। এই ভাবেই চলছে।
বৈশাখ মাসে যখন আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াতে লাগল বাঙালির আর এক উৎসবের গন্ধ। রবীন্দ্রজয়ন্তী উৎসব।২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন।ঐ দিন স্কুলের পাশে মাঠে বড় করে অনুষ্ঠান হবে। সবাই সবার মত করে প্রস্তুতি নিচ্ছে,কেউ নাচ করবে,কেউ গান করবে,কেউ আবৃত্তি বলবে আবার নাটকও হবে।ব্যস্ত সবাই। কিন্তু ঝুমকি তো এসব কিছুই পারে না।ওর খুব ইচ্ছা কিছু একটা করবে, তাই একটা রবীন্দ্রনাথের কবিতা ভালো করে মুখস্থ করেছে অনুষ্ঠানের দিন বলবে বলে। ওকে কেউ সাহায্য করেনি। শুধু দেখেছে সবাই কিভাবে প্র্যাকটিস্ করছে, স্টেজে উঠে কিভাবে বলতে হয় সব দেখে দেখে শিখে নিয়েছে।
তাই ও মাসিকে বলেছিল মাসি যেন ওর নামটা কবিতা বলার জন্য লিখিয়ে দেয়।
যথারীতি সেই দিন উপস্থিত হল।২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন। মাঠে প্যান্ডেল হয়েছে। বিকাল থেকেই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।কত বড় বড় লোকেরা আসবে, তারা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কত কিছু বলবে! তারপর নাচ, গান, কবিতা,নাটক হবে।সেও একটা কবিতা বলবে, সবাই হাততালি দেবে।ঝুমকির মন আনন্দে ভরে উঠছে। একটা ভালো জামা পরে ঠিক সময়ে ঝুমকি মাঠে পৌঁছে গেল। দর্শকদের মাঝে বসে অনুষ্ঠান দেখছে।আর ভাবছে ওকেও ওর নাম ধরে স্টেজে ডাকবে। স্টেজে উঠে প্রথমে নমস্কার করবে তারপর কবিগুরুর নাম, কবিতার নাম বলে কবিতা বলা শুরু করবে।
একে একে সবার নাম ডাকল, সবাই যে যার মত করে অনুষ্ঠান করে গেল। কিন্তু কই ঝুমকির নাম তো ভাকলো না। অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল সবাই বাড়ি ফিরে গেল,ঝুমকি তখনও বসে।ও শুধু ভাবছে ওর নাম টা কেন ডাকলো না! ও মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে এলো। বাড়িতে এসে মাসিকে জিজ্ঞাসা করলো’ মাসি তুমি আমার নাম টা কবিতা বলার জন্য লিখিয়ে দাও নি।
মাসি বলল, না। ঝুমকির চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে,ও যে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে কবিতা বলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে শ্রদ্ধা জানাবে। সেটাই বাকি থেকে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress