অশ্লীল-বিলাস
বড় রাস্তার ওপরেই দোকানটা। ফুটপাথ থেকে তিনটে ধাপ উঠে গেছে দোকানের কার্পেট পাতা মেঝে পর্যন্ত। বিশাল দরজা। দু-পাশের দ্রষ্টব্য শো-কোসে সাজানো রঙিন প্রচ্ছদের দেশি-বিদেশি বই। দরজার ওপরে মস্ত সাইনবোর্ডে। এবং তাতে মস্ত-মস্ত অক্ষরে লেখা, ‘যোশি বুক শপ।’ সাইনবোর্ডের চটকদার রং যে-কোনও কালার-ব্লাইন্ড লোককেও দোকানের কাছে টেনে আনবে।
মালিক মিস্টার যোশির নামটা কোন অক্ষর দিয়ে শুরু হবে ভাবতে-ভাবতে দোকানে ঢুকলাম। দোকানের ভেতরে আলো রেস্তোরাঁগোছের—বিশাল কিন্তু প্রায় টিমটিমে কয়েকটি ঘষা কাচের গ্লোব সিলিং থেকে ঝুলছে। দোকানের র্যাকগুলো বিভিন্ন ধরনের বইয়ে (‘ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট’ থেকে শুরু করে ‘ফ্রয়েড’ পর্যন্ত) ঠাসা। ভেতরে কোনও খদ্দের নজরে পড়ল না। তা ছাড়া বেলা বারোটায় এই ঠা-ঠা রোদ্দুরে কে-ই বা বই কিনতে বেরুবে! অবশ্য বই কিনতে আমিও বেরোইনি—।
যথেষ্ট খোঁজাখুঁজির পর একটা বইয়ের র্যাকের পেছনে ‘লুকিয়ে’ বসে থাকা জনৈক প্রৌঢ়কে আবিষ্কার করলাম। তার সামনে একটা টেবিলে বিভিন্ন কাগজপত্র—এমন কি খবরের কাগজ পর্যন্ত—ছড়ানো। টেবিলের কাছাকাছি আর কোনও চেয়ার নেই। সুতরাং আমি দাঁড়িয়েই রইলাম।
তিনি তখন ফোনে কথা বলছেন।
‘হ্যাঁ—কবে মারা গেছেন খোঁজটা নাও। আর ঠিকানাটা আমাকে বলো—লিখে নিই।’
উত্তরে সম্ভবত ঠিকানাটাই শোনা গেল, কারণ উনি খসখস করে একটা সাদা কাগজে কী যেন লিখে নিলেন। তারপর বারকয়েক ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে’ বলে রিসিভার নামিয়ে রাখলেন। তাকালেন আমার দিকে।
প্রথমে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করল আমার সাদা গোঁফ, পেটানো শরীর। তারপর চোখ নেমে এল আমার হাতে ধরা রুপোবাঁধানো লাঠিটার দিকে।
আমিও তাঁর চশমা, টাক, ঈগল-নাক, থ্যাবড়া থুতনি, চঞ্চল কণ্ঠা ইত্যাদি জরিপ করে তাকালাম অস্থির, ধুরন্ধর চোখজোড়ার দিকে।
আমার সাহেবি পোশাক দেখেই তিনি বোধহয় কিছুটা আশান্বিত হলেন। বিগলিত স্বরে বললেন, ‘বলুন স্যার, কী চাই?’
সামনের ছড়ানো কাগজগুলো একপাশে ঠেলে দিয়ে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তুষার-মানব দেখার মতো বিস্ময়ভরা দৃষ্টি নিয়ে আমার গোঁফজোড়া দেখতে লাগলেন।
কিছুক্ষণ একচোখে তার দিকে চেয়ে রইলাম। তারপর প্রশ্ন করলাম, ‘মিস্টার যোশি?’
‘হ্যাঁ, আমিই যোশি—বিলাস যোশি।’
‘ও।’ সত্যি কথা বলতে কী, এই বিলাস যোশিকে পার্ক স্ট্রিটের একটা বড় বইয়ের দোকানের মালিক বলে কল্পনা করতে আমার বেশ কষ্ট হল: ‘আমার নাম সেনবর্মা—প্রকাশ সেনবর্মা।’
‘বলুন মিস্টার সেনবর্মা, কী বই চাই আপনার?’
‘ও, আপনি দেখছি ”সেনবর্মা” পদবিটা বেমালুম ভুলেই গেছেন!’
‘তা—তার মানে?’ চোখ থেকে সরু ফ্রেমের চশমাটা নামিয়ে উৎসুকভাবে তাকালেন বিলাস যোশি: ‘না, নামটাতো ঠিক মনে পড়ছে না। সেনবর্মা? উঁহু, এ নামে কাউকে তো চিনি না।’
‘তাই নাকি?’ হাতের লাঠিটা বগলে পাচার করে পকেটে হাত ঢোকালাম। একটা মুখ ছেঁড়া সাদা খাম বের করে তার ভেতর থেকে একটা কাগজ বের করলাম। কাগজটা একপলক দেখে ছুড়ে দিলাম টেবিলের ওপরে।
‘দেখুন—এবার হয়তো মনে পড়বে।’
বিলাস যোশি চশমাটা নাকে লাগিয়ে তড়িঘড়ি আবার চেয়ারে বসলেন। হাতে নিলেন কাগজটা। কঠিন দৃষ্টিতে একবার আমার দিকে তাকিয়ে সশব্দে নাক টানলেন।
‘হুম—’ কাগজটা গভীরভাবে দেখতে লাগলেন তিনি: ‘এটা দেখছি একটা বিল।…আপনি হয়তো জানেন না, মিস্টার সেনবর্মা, আমি সাধারণত পোস্টেই খদ্দেরদের বইপত্তর পাঠিয়ে থাকি। তাদের অনেকের সঙ্গে আমার সামনাসামনি কোনও আলাপ নেই। তাই—’ বিলের ওপর লেখা নামটা তিনি বিড়বিড় করে পড়লেন, ‘প্রফেসর সুরপতি সেনবর্মা। ছয়ের তিন, গোলক মিত্র রোড। কলকাতা বারো। হ্যাঁ, এবার মনে পড়েছে—।’
‘তা পড়বারই কথা। স্বর্গীয় ডক্টর সুরপতি সেনবর্মা আমার বড় ভাই ছিলেন। তিনি—মারা গেছেন।’
‘ডক্টর সেনবর্মা মারা গেছেন?’ ভীষণ অবাক হওয়ার ভান করল বিলাস যোশি ‘সেইজন্যেই বোধহয় শেষ কয়েকটা চিঠির জবাব পাইনি। কিন্তু আপনারা তো আমাকে তাঁর মারা যাওয়ার খবরটা অন্তত জানাতে পারতেন…।’
‘পারতাম, কিন্তু ইচ্ছে করেই জানাইনি।’ রূঢ় স্বরে জবাব দিলাম, ‘কারণ আপনি হয়তো ভুল করে এই বিলটা পাঠিয়েছেন। আমার দাদা কোনওদিন এ ধরনের বইয়ের জন্যে অর্ডার পাঠাননি, আর কেনেনওনি। তা ছাড়া তাঁর লাইব্রেরি ঘেঁটেও আমরা এসব বইয়ের একটা কপিও খুঁজে পাইনি।’
বিলে লেখা বইয়ের লম্বা লিস্টটার ওপরে চোখ চালিয়ে বিলাস যোশি ‘হুম’ করে একটা শব্দ করলেন। তারপর অস্বস্তিতে কাশলেন বারকয়েক: ‘মিস্টার সেনবর্মা, বইগুলো আমি সত্যিই পাঠিয়েছি। সুরপতিবাবু বইগুলো পেয়েছেন জানিয়ে আমাকে চিঠিও দেন। কিন্তু দামটা পেতে দেরি হওয়ায় আমি বেশ কয়েকটা রিমাইন্ডার তাঁকে দিই। অথচ কোনও রিপ্লাই পাইনি। তাই এই লাস্ট চিঠিটায় আমি রিমাইন্ডার বলে ভয় দেখিয়ে বিলটা পাঠিয়েছি—মাত্র সাতশো টাকার।’
এবার ‘হুম’ শব্দটা বলার পালা আমার।
আমাকে বিলাস যোশি বলতে লাগলেন, ‘দাঁড়ান, আমি খাতা-পত্র দেখে আপনাকে কারেন্ট পজিশানটা জানাচ্ছি।’ পাশের শেলফ থেকে একটা মোটা বিধ্বস্ত ফাইল বের করলেন তিনি:’সেনবর্মা—কিউ, আর, এস—এই তো!’
‘অতসব ফাইল ঘাঁটাঘাঁটির কোনও দরকার নেই।’ ঠান্ডা গলায় বিলাস যোশির উৎসাহে ঠান্ডা জল ঢেলে দিলাম, বললাম, ‘আপনার কোথাও একটা ভুল হয়েছে। আর ভুলটা একটু পিকিউলিয়ারও বটে। সুতরাং, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ভুল আর না হয়, সে বিষয়ে আমি আপনাকে ওয়ার্নিং দিচ্ছি। যদি আপনি এই ছবির বইয়ের নোংরা ব্যাবসা চালিয়ে যেতে চান, চালিয়ে যান—আমি বাধা দেব না। কিন্তু তাই বলে—।’
বিলাস যোশি বারকয়েক মাথা নাড়লেন, হেলান দিয়ে বসলেন চেয়ারে: ‘মিস্টার সেনবর্মা, আপনার কথার ওপরে কথা বলা ঠিক নয়। তা ছাড়া খদ্দের হল গিয়ে লক্ষ্মী। কোনও খদ্দেরের পছন্দ নিয়ে সমালোচনা করা আমার কাজ নয়। তা হলে আমাকে বইয়ের দোকান তুলে দিয়ে তেলেভাজার দোকান দিতে হয়। সে যাক, আমি শুধু এটুকু জানি, এই ঠিকানা থেকে…’ আঙুল দিয়ে বিলটার ওপর ঠোকর মারলেন বিলাস যোশি: ‘…এই বইগুলো চেয়ে মিস্টার সেনবর্মা নামে একজন আমাকে অর্ডার পাঠান। এবং গত পনেরোই ডিসেম্বর বইগুলো আমি ওই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিই। তারপর বইগুলোর কী হয়েছে না হয়েছে তা আমার জানার কথা নয়, আর জানতেও চাই না। তবে এটা তো বুঝতেই পারছেন যে, এসব বই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে খোলা জায়গায় ফেলে রাখার বই নয়। সাধারণত লুকিয়ে দেখা এবং রাখার জন্যেই এ বইয়ের জন্ম।’ নিজের রসিকতায় নিজেই হাসলেন বিলাস যোশি: ‘তবে আমি জানতাম না আপনার দাদা মারা গেছেন—জানলে এ-চিঠি আর বিল এভাবে পাঠাতাম না। আই অ্যাম সরি, মিস্টার সেনবর্মা।’
‘আপনার ভবিষ্যৎ ভেবে আমিও কম দুঃখিত নই।’ আমার কণ্ঠস্বরে দুঃখের লেশমাত্র নেই। কর্কশ গলায় খেঁকিয়ে উঠলাম, ‘আপনি এখনও বলছেন প্রফেসর সেনবর্মা নিজে এসব বাজে বইয়ের অর্ডার দিয়েছিলেন? আপনার সাহস তো কম নয়! আপনি জানেন, আমার দাদা…?’
‘উত্তেজিত হবেন না, স্যার।’ দু-হাত তুলে মোলায়েম স্বরে আমাকে বাধা দিলেন বিলাস যোশি: ‘আমাকেও কথা বলার একটু সুযোগ দিন। আপনি কী করে এত শিওর হচ্ছেন যে, আপনার দাদা এসব বইয়ের অর্ডার দিতে পারেন না? পৃথিবীতে কত বিচিত্র মানুষই না রয়েছে। ফ্রয়েড বলে গেছেন…।’
‘থামুন!’ গর্জে উঠলাম আমি, ‘ঢের ন্যাকামো হয়েছে, স্কাউড্রেল কোথাকার!’
‘আপনিও স্যার ন্যাকামো কিছু কম করছেন না।’ সরল মুখে মন্তব্য করলেন বিলাস যোশি, ‘আপনার দাদার চরিত্র জানতে আমার বিন্দুমাত্রও উৎসাহ নেই। আমি শুধু জানি, মাল যখন পাঠিয়েছি তখন তার দাম আমার পাওনা। আমি গরিব মানুষ। এই দোকান থেকেই আমার সংসার চলে। সুতরাং যদি কোনও খদ্দের আমাকে ফাঁকি দেয়, তা হলে—।’
‘ফাঁকি? কীসের ফাঁকি? আপনাকে কতবার বলব এসব বই একটাও আমার দাদা কেনেননি।’
বিলাস যোশি ক্ষীণ স্বরে প্রতিবাদ করলেন, ‘আপনি যে খুব ভদ্র ব্যবহার করছেন সেটা বলতে পারছি না বলে দুঃখিত, মিস্টার সেনবর্মা। এই বিলের টাকা বহুদিন বাকি থাকা সত্ত্বেও আমি কোনওরকম কেসকামারি করিনি। কারণ, আমি জানি, এ ধরনের বইয়ের ক্যাচাল একবার চাউর হলে আমার খদ্দেরদের সুনাম নিয়ে টানাটানি হবে। তা ছাড়া শুধু আপনার দাদাই নন, এরকম অনেক খদ্দেরই আমার আছে। তাদের নামধাম আমি সবসময় গোপন রাখার চেষ্টা করি—।’
‘তা হলে দাদার লেখা চিঠিগুলো আমাকে দেখান।’
আমার শান্ত স্বরে বিলাস যোশি একটু অবাক হলেন। বললেন, ‘এবার আমাকে হাসালেন। কারণ, এটুকু আপনার বোঝা উচিত, এমন কোনও জিনিস আমি দোকানে রাখি না যাতে আমার খদ্দেরদের মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হয়। তা ছাড়া এ-ব্যবসায় সিক্রেসিই হল ক্যাপিটাল। অবশ্য চালানের কার্বন কপিটা আমি আপনাকে দেখাতে পারি। আমার মনে হয়, আমাকে আপনি ভুল বুঝবেন না।’
‘উহুঁ, আপনাকে বুঝতে আমার এতটুকুও ভুল হয়নি।’ আমাকে হাসতে দেখে আবারও অবাক হলেন বিলাস যোশি: ‘এবং ভুল হয়নি বলেই এই মুহূর্তে আপনার কোমল শরীরে কিঞ্চিৎ লাঠ্যেïষধ প্রয়োগ করতে আমি উদগ্রীব।’
আমার বক্তব্যের গূঢ় অর্থ যতটা না কথায় তার চেয়ে বেশি প্রকাশ পেল আমার লাঠি বাগিয়ে ধরার ভঙ্গিতে।
আশ্চর্য ক্ষিপ্রতায় চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়ালেন বিলাস যোশি। একহাতে তুলে নিলেন টেলিফোনের রিসিভার এবং তাঁর অন্য হাতে মুহূর্তের মধ্যেই গজিয়ে উঠল একটা ০.৪৫৭ লুগার অটোমেটিক।
দাঁত বের করে নিঃশব্দে হাসলেন বিলাস যোশি: ‘আপনি বোধহয় এটাই চাইছিলেন, তাই না? কিন্তু এখন আপনাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ নেই। এতক্ষণ ধরে ঢের আমড়াগাছি হয়েছে—আর নয়।’
দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়েই শুনলাম, তিনি পার্ক স্ট্রিট থানা থেকে একজন অফিসারকে জরুরি স্বরে ডেকে পাঠালেন, তারপর বললেন, ‘আমি আপনাকে যেতে দিতে পারি, তবে একটি শর্তে। আপনাকে কথা দিতে হবে যে, আমার পাওনা টাকা আমাকে মিটিয়ে দেবেন। আর ভবিষ্যতে দোকানে এসে এ ধরনের অসভ্যতা করবেন না। আর তা যদি না চান, তবে একজন পুলিশ অফিসারের জন্যেই ওয়েট করুন—।’
শক্ত মুঠোয় লাঠিটা চেপে ধরে জবাব দিলাম, ‘আমার মনে হয় অফিসারের জন্যে ওয়েট করাটাই ঠিক হবে। পুলিশকে আমিও বলব আপনার কাল্পনিক খদ্দেরদের কথা! দেখি, আমাকে বিলটা দিন—।’
বিলাস যোশি টেবিলে রাখা বিলটার দিকে তাকালেন।
ওই একটা মুহূর্ত আমার পক্ষে যথেষ্ট ছিল।
বিদ্যুৎঝলকের মতো আমার হাতের লাঠিটা আছড়ে পড়ল বিলাস যোশির রিভলভার ধরা হাতের কবজির ওপর। লুগারটা সশব্দে ঠিকরে পড়ল মেঝেতে। পলকের মধ্যে ওটাকে বুট দিয়ে চেপে ধরলাম। বললাম, ‘প্ল্যানটা আপনার নেহাত কাঁচা নয়, মিস্টার যোশি। মারা যাওয়া লোকজনের আত্মীয়রা কে-ই বা চায় যে, এসব অশ্লীল বইয়ের ব্যাপারস্যাপার লোকজানাজানি হোক! সুতরাং খবরের কাগজের শোক সংবাদ এবং চ্যালাদের পাঠানো মৃত্যুর খবরগুলো পাওয়ামাত্রই আপনি কতকগুলো কাল্পনিক বইয়ের নাম করে একটা বিল সেই ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। বইগুলো যে ধরনের তাতে এ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে কেউই চায় না। সকলেই চুপচাপ বিনা প্রতিবাদে আপনার টাকা মিটিয়ে দেয়। কিন্তু আপনি ভুল করলেন প্রফেসর সুরপতি সেনবর্মার বেলায়।’
‘তা—তার মানে?’ কবজিতে হাত বোলাতে-বোলাতে বলে উঠলেন বিলাস যোশি, ‘কী—কী বলতে চান আপনি?’
‘বলতে চাই, মিস্টার সেনবর্মা কখনও আপনাকে কোনও বইয়ের অর্ডার পাঠাননি—পাঠাতে পারেন না। সত্যিই তো, আপনি কী করে জানবেন যে, আমি সুরপতি সেনবর্মার ভাই নই। কী করে জানবেন যে—।’
এমন সময় দোকানের খোলা দরজায় এসে উপস্থিত হলেন একজন পুলিশ অফিসার—সঙ্গে দুজন কনস্টেবল। অফিসার আমাকে দেখেই সসম্ভ্রমে স্যালুট দিয়ে দাঁড়ালেন। তা দেখে বিলাস যোশি তাজ্জব হয়ে গেলেন।
আমি বলে চললাম, ‘কী করে জানবেন যে, আপনার ফোনের উত্তরে একজন নয়, দুজন পুলিশ অফিসার এসে হাজির হবেন?’ আমার আইডেনটিটি কার্ডটা বের করে বিলাস যোশির নাকের ওপরে তুলে ধরলাম: ‘আর, কী করেই বা জানবেন যে, প্রফেসর সুরপতি সেনবর্মা পুরো অন্ধ ছিলেন?’
বিলাস যোশি হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলেন টেবিলের ওপরে—বোধহয় অজ্ঞান হয়েই।