Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অশ্লীলতার মোড়কে || Rana Chatterjee

অশ্লীলতার মোড়কে || Rana Chatterjee

অশ্লীলতার মোড়কে

নাও পড়ো সোনা এটা কি বলোতো ,এটা হাতি।কি আছে বলো হাতির বলে রিয়া আয়ুষ কে পড়াচ্ছিলো।উফ সোনা আবার অন্য দিকে তাকায়, বলে ফেলো-হম আরে বাহ শুঁড় ,ইয়া বড়ো শুঁড় আছে হাতির।তুমি দেখেছো হাতি ,বলোতো কোথায়?

মাম্মা মাম্মা-হ্যাঁ বলো বাবু। বাবারও ইয়া বড়ো শুঁড় আছে-বাবার শুঁড়!শুধু বদ মায়েসী দুস্টামি কথা! না মাম্মা সত্যি শুঁড় আছে কালও রাতে আমার ঘুম ভাঙতে দেখি ইয়া বড়ো শুঁড় নিয়ে বাবা তোমায় গুঁতাচ্ছিলো। এবার অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল রিয়া,আপ্রাণ চেষ্টা করে ঠোঁট টা কামড়ে লজ্জায় সে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে কি রাতুল যখন ঘুমন্ত আমার সাথে ওই সব অসভ্যতামী করে সোনা বাবু সব দেখেছে,ইস। নাও আজ এ পর্যন্তই থাক বাবু।এবার বরং একটু হ্যান্ডরাইটিং করে নাওতো আমার সোনা।

মাম্মা বোলো না বাবার সত্যি শুঁড় আছে কিনা?এবার হো হো করে হেসে উঠলো রিয়া,না বাবু বাবা তো মানুষ তুমি স্বপ্ন দেখছিলে মনে আছে এত বড় একটা বাঘ ,অমনি জঙ্গল থেকে বেরুলো হাতি। কি লড়াই কি লড়াই বাবা বন্দুক এনে আকাশে ঢিচকাউ ঢিচকাউ করে গুলি ছুঁড়তেই বাঘ টা চলে গেল।না মাম্মা আমি স্বপ্ন দেখি নি বলে ঝেড়ে মেরে উঠে টেবিলের নিচে রাখা ওর খেলনা ব্যাগ থেকে বন্দুকটা বের করে ধূলো ঝেড়ে রাখলো।ওকে আর না ঘাঁটিয়ে রিয়া রান্না ঘরে ঢুকলো কি করছে রান্নার দিদি দেখতে কিন্তু চিন্তা আর লজ্জা তার গেল না! ঐটুকু পুঁচকে যদি রাতে মশারির মধ্যে হাতি তাড়া করবে বলে বন্দুক নিয়ে ঢোকে বেশ তো জ্বালা!!

মাঝে মাঝে রাতুলকে এমন রাগ ধরে না,লাজ লজ্জা কিছু রাখলো না! ঘর সুনসান,মাঝরাত সেও ঘুমিয়ে কাদা হঠাৎ ওনার ইচ্ছা চাগিয়ে ওঠে।ইস এমন যদি চলে তবে তো আয়ুষের শিশুমনে বেশ চাপ পড়বে।কৈ কটা রুটি করছো দিদি,না না কাল তো অফিস নেই তোমার ভাইয়ের টিফিনের আটা মেখো না।কথাটা বলেই মনে পড়ে গেল তবে তো আজও আবার হাতির শুঁড়-হা হা বেশ নাম দিয়েছে আয়ুষ।হবে না তো কি যেভাবে মাঝরাতে অমন ভেক করে উঠে দাঁড়াবে সুস্থ মানুষও ভয় পেয়ে যাবে!

সেবার দেশের বাড়ি গ্রামে কি লজ্জা কি লজ্জা!ইচ্ছা যে তারও করেনি তা নয়! খাওয়া দাওয়া সেরে কেউ কোথাও নেই দেখে দরজা জানলা এঁটে পর্দা দিয়ে ইচ্ছাকে রূপ দিতে তোড়জোড় স্বামী স্ত্রীর অমনি দেখে কিনা খাটের এক কোণে ভাসুরের ক্লাস ফাইবে পড়া মেয়েটা চুপ করে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কেঁদে উঠেছে!ওদের দুজনেরতো লজ্জায় মরে যাই অবস্থা! আয়ুষ কাকিমার কাছে ঘুমিয়ে ছিল-জা তো মেয়ের কান্না শুনে ভেজানো দরজা ঠেলে এসেই সব বুঝে ভিরমি খাওয়ার জোগাড়।সে যে কি অবস্থা সেটা থিতিয়ে যেতেই আবার এই কান্ড।তবে এটা যে বেশ বেগ দেবে রাতুলকেও চিন্তাটা যাচ্ছে না রিয়ার।

প্রথম প্রথম রিয়ার এই সব আলোচনা হলে কি যে বিশ্রী অস্বস্তি হতো কিন্তু গার্লস স্কুলে চাকরি পাওয়ার পর থেকে স্টাফ রুমে যা সব আলোচনা কত আর কান বন্ধ করে রাখবে! চুপ করে শুনতো সবার কথা,আর রাতুলকেও সে সব কথা বলতে পারতো না আর ভাবতো মা গো মা শিবানী দির ওই মুখে কোনো কিছু আটকায় না গো, ইস।যেদিন রিয়ার পালা এলো কত আর লাজুক হয়ে পাশ কাটায় এমন খুল্লম খুল্লম সবার সামনে শিবানীদি রসিয়ে রসিয়ে বলছে আর সমান তালে সঙ্গ দিয়ে সংগীতা অভিনয় করে দেখালো !বাপরে যেন কখন টিফিন শেষের ঘন্টাটা পড়বে রিয়ার তো দমবন্ধ হবার জোগাড়।তবুও যেহেতু সবাই মহিলা সংকোচ বোধটা আসতে আসতে চলেই যায়। এটা বোঝে রিয়া সবাই এভাবে ফ্রি হয়ে গেলে সে পাঁচ মিনিট সময় হোক আর আলোচনা দশ মিনিট একটা যেন হুল্লোড়,ফ্রেস এনার্জি।শুধু তো অশ্লীল আলোচনা হয় না যার যা সমস্যা সে পারিবারিক হোক আর শারীরিক কত সহজে আলোচনায় সমাধান এখানে।তাই তো গরমের ছুটিটা পড়ে গেলে সকলকে মিস করে একটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে রিয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress