অর্থই অনর্থের মূল কারণ
অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গেই একথা মানতে হয় যে অর্থই অনর্থের মূল কারণ অনেকাংশে।কেননা, মানুষ মাত্রেই সকলেই কিন্তু অর্থের পেছনে ছুটে না ,তারা ব্যক্তিস্বার্থে অর্থ উপার্জনের জন্য নানা অসদুপায়কে অবলম্বন করে থাকে তাদের ক্ষেত্রেই একথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য? অর্থের কারণেই সমাজে এত মারামারি ও হানাহানি হয়। এই অর্থ কে ঘিরেই পৃথিবীতে এতো অশান্তি, রেষারেষি, খুনোখুনি, রাহাজানি মানুষের মধ্যে।অর্থের প্রলোভন এতোটাই রে মানুষকে অর্থোপার্জনের নেশাতে আসক্ত করে তুলে মা থেকে সহজে বেড়িয়ে আসতে পারেনা।
অর্থের প্রয়োজন দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি মানুষের আছে। খাওয়া পরা,পোশাক আশাক, ঔষধপত্র, পড়াশোনা এককথায় যাবতীয় ব্যাপারেই অর্থ ছাড়া চলেনা। কিন্তু তাই বলে,প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন বা বিলাসবহুল জীবন যাপনের জন্যে যেকোন উপায়েই অর্থোপার্জন অনর্থের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষের জীবনে তেমন অর্থের দরকার আছে তেমনি অতিরিক্ত কোন কিছুই তেমন শুভফল বহন করেনা তেমনি অতিরিক্ত অর্থ ও বিনাশের পথ সুগম করে।
আজকাল, বেশীরভাগ বাড়িতে দেখা যায় , অভিভাবক ছেলেমেয়েদেরকে হাতখরচের জন্য যথেষ্ট পরিমানে টাকা দিচ্ছে তাদের বায়না মেটাতে।আর তারপরে সেই অর্থে ছেলেমেয়েরা ভোগবিলাসে , নেশাদ্রব্য পানে,রেসের খেলাতে , উচ্ছৃঙ্খলতার পথে এগিয়ে চলেছে।তার ফলে,অর্থ পরিণামে অশনিসংকেত ঠেকে আনছে,অবক্ষয়ের পথ সুগম করছে।
মহাপুরুষের মতে,টাকাপয়সা নাকি হাতের ময়লা,যা থেকে যত দূরে থাকা যায় ততোই মঙ্গল।
কিন্তু বর্তমানে দেশ ও সমাজ এই ময়লা দিয়েই ঘেরা। দেশে বর্তমানে যত অনর্থ, তার পেছনেই অর্থই কাজ করছে।
তাছাড়া,অর্থ মানুষের প্রয়োজন মেটায় বলে যে যেকোন উপায় অবলম্বন করতে হবে সেটা যুক্তিসঙ্গত নয়।বর্তমানে প্রতিপত্তি ও সম্মান নির্ণয় হয় অর্থের মাপকাঠিতে । তাই মানুষের অর্থ উপার্জনে মরীয়া।কেউ অল্পেতেই সন্তুষ্ট থাকে আবার কারো কারো কিছুতেই অর্থের তৃষ্ণা মেটে না।কেবল চাই চাই ভাব ।তার জীবন যেন টাকাতেই আবর্তিত।
অনেক সময় অর্থ উৎকোচ দিয়ে মানুষকে বশে আনা হয়। নেতারা অর্থের দাপটে অনেক অনৈতিক গর্হিত কাজ করিয়ে নেন,অর্থ দিয়ে অনেক পাপকর্মকে ধামাচাপার যোগসাজশ চলে হামেশাই। হুমকির ভয়েও অনেকের ইচ্ছা না থাকলেও বাধ্য হয় সেই দু নম্বরি টাকা গ্রহণ করতে। এবং একসময়ে প্রলোভন বাড়তেই থাকে ও মাতালের নেশার মতো অর্থের পেছনে ছুটতে থাকে। তাতে তার পরিবার ও ছেলেমেয়েরাও অর্থ বলে ধরাকে সরা জ্ঞান করে মানুষ কে অবজ্ঞা ও অবহেলা করতে শিখে।। অতিরিক্ত অর্থ মানুষের মনুষ্যত্ব লুপ্ত করে অমানবিক করে তুলে আর এই অতিরিক্ত অর্থের প্রাবল্যে অনেকেই ধংস হয়ে যায় ফলে মানুষ নীতি বর্জিত কর্ম কান্ডে লিপ্ত হয় মা ভবিষ্যত জীবনে বিরাট ক্ষতির কারণ হয়। অর্থের নেশা এতো তীব্র একটি নেশা,যার নেশায় মানুষ নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতম কাজ করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা বোধ করে না। অর্থের নেশায় চিন্তা- ভাবনা, আচার ব্যবহার,কাজ কর্মে, সবকিছুই পাল্টে যায়।অর্থের দাসত্বে পড়ে মানুষ নীতি, চরিত্র, বিবেক বিসর্জন দেয়।
অতএব অর্থের অপব্যবহার পরিণামে ধংসই ডেকে আনে, অর্থ হয়ে ওঠে সব অশান্তির উৎস যা মোটেই কাম্য নয়। তাই বাস্তবিকপক্ষে অস্বীকার করার উপায় নেই যে অতিরিক্ত কোনকিছুই যেমন ভালো নয়, তেমনি অতিরিক্ত অর্থই অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়ায় বা দাঁড়াচ্ছে ।