Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অমৃতের মৃত্যু – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay » Page 4

অমৃতের মৃত্যু – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay

ব্যোমকেশ ও আমি চাতালের উপর উঠিলাম‌, আর যাহারা আমাদের পিছনে আসিয়াছিল। তাহার চাতালের কিনারায় দাঁড়াইয়া নিঃশব্দে চক্ষু গোল করিয়া দেখিতে লাগিল।

সদানন্দ সুর যে বাঁচিয়া নাই তাহা একবার দেখিয়াই বোঝা যায়। তাহার শরীর অপেক্ষাকৃত অক্ষত বটে; ডান হাতে তালা ও বাঁ হাতে চাবি দৃঢ়ভাবে ধরা রহিয়াছে; কিন্তু মাথাটা প্রায় ধড় হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া উল্টা দিকে ঘুরিয়া গিয়াছে‌, রক্ত ও মগজ মাখামাখি হইয়া চুৰ্ণ খুলি হইতে গড়াইয়া পড়িতেছে; মুখের একপাশটা নাই। বীভৎস দৃশ্য। তিন মিনিট আগে যে-লোকটাকে জলজ্যান্ত দেখিয়াছি‌, তাহাকে এই অবস্থায় দেখিলে স্নায়ুবিক ত্ৰাসে শরীর কাঁপিয়া ওঠে‌, হাত-পা ঠাণ্ডা হইয়া যায়।

গ্রামবাসীদের এতক্ষণ বাকরোধ হইয়া গিয়াছিল। পটল প্রথম কণ্ঠস্বর ফিরিয়া পাইল; কম্পিত্যস্বরে বলিল‌, ‘ব্যোমকেশবাবু্‌, এসব কী হচ্ছে আমাদের গ্রামে।’

ব্যোমকেশ ভাঙা দরজার নিকট হইতে ঢালাই লোহার একটা টুকরা কুড়াইয়া লইয়া পরীক্ষা করিতেছিল‌, পটলের কথা বোধ হয় শুনতে পাইল না। লোহার টুকরা ফেলিয়া দিয়া বলিল‌, ‘হ্যান্ড-গ্রিনেড! ক্যাম্বিসের ব্যাগটা কোথায় গেল?’

ব্যাগটা ছিন্নভিন্ন অবস্থায় একপাশে ছিটকাইয়া পড়িয়া ছিল। ব্যোমকেশ গিয়া সেটার অভ্যন্তরভাগে পরীক্ষা করিল। নূতন ও পুরাতন কয়েকটা জামাকাপড় রহিয়াছে। একটা নূতন টাইম-পীস ঘড়ি বিস্ফোরণের ধাক্কায় চ্যাপ্টা হইয়া গিয়াছে‌, একটা কেশতৈলের বোতল ভাঙিয়া কাপড়-চোপড় ভিজিয়া গিয়াছে। আর কিছু নাই।

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘অজিত‌, তুমি বাইরে থাকো‌, আমি চট্ট করে বাড়ির ভিতরটা দেখে আসি।’

শুধু যে দরজার কবাট ভাঙিয়া পড়িয়াছিল তাঁহাই নয়‌, দরজার উপরের খিলান খানিকটা উড়িয়া গিয়াছিল‌, কয়েকটা ইট বিপজ্জনকভাবে ঝুলিয়া ছিল। ব্যোমকেশ যখন লঘুপদে এই রন্ধ পার হইয়া ভিতরে প্রবেশ করিল। তখন আমি আর স্থির থাকিতে পারিলাম না। এই অভিশপ্ত বাড়ির মধ্যে কোথায় কোন ভয়াবহ মৃত্যু ওৎ পাতিয়া আছে কে জানে!–ব্যোমকেশের যদি কিছু ঘটে‌, সত্যবতীর সামনে গিয়া দাঁড়াইব কোন মুখে?

‘দাঁড়াও‌, আমিও আসছি—বলিয়া আমি প্রাণ হাতে করিয়া বাড়িতে ঢুকিয়া পড়িলাম।

ব্যোমকেশ ঘাড় ফিরাইয়া একটু হাসিল; বলিল‌, ‘ভায়ের কিছু নেই। বিপদ যা ছিল তা সদানন্দ সুরের ওপর দিয়েই কেটে গিয়েছে।’

এদিকে সন্ধ্যা হইয়া আসিতেছে‌, বাড়ির ভিতরে আলো অতি অল্প। বলিলাম‌, ‘কি দেখবে চটপট দেখে নাও। দিনের আলো ফুরিয়ে আসছে।’

বাড়ির সামনের দিকে দু’টি ঘর‌, পিছনে রান্নাঘর। কোনও ঘরেই লোভনীয় কিছু নাই। যে ঘরের দরজা ভাঙিয়াছিল সে-ঘরে কেবল একটি কোমর-ভাঙা তক্তপোশ আছে; পাশের ঘরে আর একটি তক্তপোশের উপর বালিশ-বিছানা দেখিয়া বোঝা যায় ইহা গৃহস্বামীর শয়নকক্ষ। একটা খোলা দেওয়াল-আলমারিতে কয়েকটা ময়লা জামাকাপড় ছাড়া আর কিছুই নাই।

রান্নাঘরও তথৈবচ। খানকয়েক থালা-বাটি‌, ঘটি-কলসী‌, হাঁড়িকুড়ি। উনুনটা অপরিষ্কার‌, তাহার গর্ভে ছাই জমিয়া আছে। সব দেখিয়া শুনিয়া বলিলাম‌, সদানন্দ সুরের অবস্থা ভালো ছিল না মনে হয়।’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘হুঁ। ওই দরজাটা দেখেছি? বলিয়া দ্বারের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিল। কাছে গিয়া দেখিলাম। রান্নাঘরের এই দরজা দিয়া উঠানে যাইবার পথ। দরজা ভেজানো রহিয়াছে‌, টান দিতেই খুলিয়া গেল। বলিলাম‌, ‘একি? দরজা খোলা ছিল।’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘সদানন্দ সুর খুলে রেখে যাননি। হুড়কো লাগিয়ে গিয়েছিলেন। ভালো করে দ্যাখো।’

ভালো করিয়া দেখিলাম, দ্বারের পাশে হুড়কো ঝুলিতেছে, কিন্তু তাহার দৈর্ঘ্য বড়জোর হাতখানেক। বলিলাম‌, ‘একি‌, এতটুকু হুড়কো।’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘বুঝতে পারলে না? হুড়কোটা প্রমাণ মাপেরই ছিল এবং লাগানো ছিল। তারপর কেউ বাইরে থেকে দরজার ফাঁক দিয়ে করাত ঢুকিয়ে ওটাকে কেটেছে‌, তারপর ঘরে ঢুকেছে। ওই দ্যাখো হুড়কের বাকী অংশটা।’ ব্যোমকেশ দেখাইল‌, উনানের পাশে জ্বালানী কাঠের সঙ্গে হুড়কের বাকী অংশটা পড়িয়া আছে।

ব্যাপার কতক আন্দাজ করিতে পারিলেও সমগ্র পরিস্থিতি ধোঁয়াটে হইয়া রহিল। সদানন্দ সুরের কোনও শত্ৰু তাঁহার অনুপস্থিতিকালে হুড়কো কাটিয়া বাড়িতে প্রবেশ করিয়াছিল। তারপর? আজ বোমা ফাটিল কি করিয়া? কে বোমা ফাটাইল?

খোলা দরজা দিয়া আমরা উঠানে নামিলাম। পাঁচলা-ঘেরা উঠানের এককোণে কুয়া‌, অন্য কোণে পেয়ারাগাছ। ব্যোমকেশ সিধা পেয়ারাগাছের কাছে গিয়া মাটি দেখিল। মাটিতে যে অস্পষ্ট দাগ রহিয়াছে তাহা হইতে আমি কিছু অনুমান করিতে পারিলাম না‌, কিন্তু ব্যোমকেশ ঘাড় নাড়িয়া বলিল‌, ‘হুঁ, যা সন্দেহ করেছিলাম। তাই। যিনি এসেছিলেন তিনি এইখানেই পাঁচিল টপকেছিলেন।’

বলিলাম‌, ‘তাই নাকি! কিন্তু পাঁচল টপকাবার কী দরকার ছিল? করাত দিয়ে খিড়কি-দোরের হুড়কে কাটল না কেন?’

ব্যোমকেশ বলিল, ‘খিড়কির হুড়কো করাত দিয়ে কাটলে খিড়কি-দরজা খোলা থাকত, কারুর চোখে পড়তে পারত। তাতে আগন্তুক মহাশয়ের অসুবিধা ছিল। আমি গোড়াতেই ভুল বুঝেছিলাম‌, নইলে সদানন্দ সুর মরতেন না।’

‘কী ভুল বুঝেছিলে?’

‘আমি সন্দেহ করেছিলাম‌, যাঁকে ধরতে এখানে এসেছি তিনি সদানন্দ সুর। কিন্তু তা নয়।–চল‌, এখন যাওয়া যাক। বাঘমারি গ্রামে আর কিছু দেখবার নেই।’

রান্নাঘরের ভিতর দিয়া আবার সদরে ফিরিয়া আসিলাম। ইতিমধ্যে গ্রামের সমস্ত লোক আসিয়া জড়ো হইয়াছে এবং চাতালের নিচে ঘনসন্নিবিষ্ট হইয়া দাঁড়াইয়া একদৃষ্টি মৃতদেহের পানে চাহিয়া আছে। মৃত্যু সম্বন্ধে মানুষের কৌতুহলের অন্ত নাই।

ভিড়ের মধ্য হইতে পটল বলিয়া উঠিল‌, ‘ব্যোমকেশবাবু্‌, বাড়ির মধ্যে কী দেখলেন? কাউকে পেলেন?’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘না। পুলিসে খবর পাঠিয়েছ?

পটল বলিল‌, ‘না। আপনি আছেন তাই—’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘আমি কেউ নয়‌, পুলিসকে খবর দিতে হবে। আচ্ছা‌, তোমাদের যেতে হবে। না; আমরা তো যাচ্ছি‌, সুখময়বাবুকে খবর দিয়ে যাব।’

‘আপনারা যাচ্ছেন?’

‘হ্যাঁ। যতক্ষণ পুলিস না আসে ততক্ষণ তোমরা কয়েকজন। এখানে থেকে।’

‘পুলিস কি আজ রাত্রে আসবে?

‘আসবে।’

আমরা আবার রেল-লাইনের ধার দিয়া চলিয়াছি। সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া চাঁদের আলো ফুটি-ফুটি করিতেছে। একটা মালগাড়ি দীর্ঘ দেহভার টানিয়া হাঁফাইতে হাঁফাইতে চলিয়া গেল।।

আমি বলিলাম‌, ‘ব্যোমকেশ‌, তুমি এ-ব্যাপারের কিছু কিছু বুঝেছি মনে হচ্ছে। আমি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি।’

ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে এটা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছ?’

‘সম্বন্ধ আছে নাকি? কী সম্বন্ধ?’

ব্যোমকেশ একটা নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল‌, ‘অমৃত বেচারা বেঘোরে মারা গেল। সে-রাত্রে যদি সে জঙ্গলে না যেত তাহলে মরত না। যে তাকে মেরেছে সে তাকে মারতে আসেনি।’

‘তবে কাকে মারতে এসেছিল?’

‘সদানন্দ সুরকে।’

‘কিন্তু–সদানন্দ সুর তো তখন বাড়ি ছিলেন না।’

‘ছিলেন না বলেই আততায়ী এসেছিল তাঁকে মারতে।’

‘বড্ড বেশি রহস্যময় শোনাচ্ছে। অনেকটা কালিদাসের হেঁয়ালির মত-নেই তাই খাচ্ছ তুমি‌, থাকলে কোথায় পেতে!-কিন্তু যাক‌, আজ বোমা ফাটল কি করে?’

ব্যোমকেশ সিগারেট ধরাইল‌, ধোঁয়া ছাড়িয়া বলিল‌, ‘বুবি-ট্র্যাপ কাকে বলে জানো?’

বলিলাম‌, ‘কথাটা শুনেছি। ফাঁদ পাতা?’

‘হ্যাঁ। সদানন্দ সুরকে একজন মারতে চেয়েছিল। সে যখন জানতে পারল সদানন্দ সুর বাইরে গেছেন‌, তখন একদিন সন্ধ্যের পর এসে পাঁচিল ডিঙিয়ে উঠোনে ঢুকাল‌, দরজার হুড়কে করাত দিয়ে কেটে বাড়িতে ঢুকল‌, তারপর বন্ধ সদর-দরজার মাথায় এমনভাবে একটা বোমা সাজিয়ে রেখে গেল যে‌, দরজা খুললেই বোমা ফাটবে। আজ সদানন্দ সুর ফিরে এসে দরজা খুললেন‌, অমনি বোমা ফাটল। এবার বুঝতে পেরেছ?’

‘বুঝেছি। কিন্তু লোকটা কে?’

‘এখনও নাম জানি না। কিন্তু তিনি অস্ত্রশস্ত্রের চোরাকারবার করেন এবং কালো ঘোড়ার পিঠে চড়ে রাত্ৰিবেলা যুদ্ধযাত্রা করেন। লোকটির নামধাম জািনবার জন্যে আমার মনটাও বড় ব্যগ্র হয়েছে।’

সান্তালগোলায় পৌঁছিয়া দেখিলাম দিনের কর্ম-কোলাহল শান্ত হইয়াছে‌, বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ। থানা খোলা আছে‌, সুখময়বাবু টেবিলে বসিয়া কাগজপত্র দেখিতেছেন। আমাদের পদশব্দে তিনি চোখ তুলিলেন‌, ‘কী খবর?’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘খবর গুরুতর। বাঘমারিতে আর একটা খুন হয়েছে।’

‘খুন!’ সুখময়বাবু চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন।

‘হ্যাঁ। সদানন্দ সুরকে আপনি চেনেন?’

সুখময়বাবু ভ্রূকুটি করিয়া মাথা নাড়িলেন‌, ‘হয়তো দেখেছি‌, মনে পড়ছে না। সদানন্দ সুর খুন হয়েছে? কিন্তু আপনি সকলের আগে এ-খবর পেলেন কোথা থেকে?’

‘আমি বাঘমারিতে ছিলাম।’

সুখময়বাবুর মুখ হইতে ক্ষণেকের জন্য মিষ্টতার মুখোশ খসিয়া পড়ল, তিনি রূঢ়চক্ষে চাহিয়া বলিলেন‌, ‘আপনি বাঘমারিতে গিয়েছিলেন। আমি মানা করা সত্ত্বেও গিয়েছিলেন।’

ব্যোমকেশের দৃষ্টিও প্রখর হইয়া উঠিল‌, ‘আপনি আমাকে মানা করবার কে?’

সুখময়বাবু কড়া সুরে বলিলেন‌, ‘আমি এ এলাকার বড় দারোগা‌, পুলিসের কর্তা।’

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘আপনি পুলিসের হত্যকতা বিধাতা হতে পারেন‌, কিন্তু আমাকে হুকুম দেবার মালিক আপনি নন। ইন্সপেক্টর সামন্ত‌, আমি সরকারের কাজে এখানে এসেছি। আপনার ওপর হুকুম আছে সবরকমে আমাকে সাহায্য করবেন। কিন্তু সাহায্য করা দূরের কথা‌, আপনি পদে পদে বাগড়া দেবার চেষ্টা করছেন। আমি আপনাকে সাবধান করে দিচ্ছি‌, ফের যদি আপনার এতটুকু বেচাল দেখি‌, আপনাকে এ-এলাকা ছাড়তে হবে। এমন কি চাকরি ছাড়াও বিচিত্র নয়।’

সুখময়বাবু বোধ করি ব্যোমকেশকে গোবেচারী মনে করিয়া এতটা দাপট দেখাইয়াছিলেন‌, এখন তাহাকে নিজমূর্তি ধারণ করিতে দেখিয়া একেবারে কেঁচো হইয়া গেলেন। তাঁহার মিষ্টতার মুখোশ পালকের মধ্যে আবার মুখে ফিরিয়া আসিল। তিনি কণ্ঠস্বরে বশংবদ দীনতা ঢালিয়া দিয়া বলিলেন‌, ‘আমি কি-যে বলছি তার ঠিক নেই! আমাকে মাপ করুন‌, ব্যোমকেশবাবু। আজ বিকেল থেকে পেটে একটা ব্যথা ধরেছে‌, তাই মাথার ঠিক নেই। আপনাকে হুকুম করব আমি! ছি-ছি‌, কী বলেন। আপনি! আমি আপনার হুকুমের গোলাম। হো-হে। —ত সদানন্দ সুর খুন হয়েছে?’

ব্যোমকেশের তখনও মেজাজ ঠাণ্ডা হয় নাই; সে বলিল‌, ‘অমৃতের মৃত্যুর খবর পেয়ে আপনি সে-রত্রে তদন্ত করতে যাননি‌, পরদিন সকালবেলা গিয়েছিলেন। এ খবরটা আপনার ওপরওয়ালার কানে পৌঁছুলে তিনি কি করবেন তা বোধ হয় আপনার জানা আছে?’

সুখময়বাবু কাকুতিপূর্ণ স্বরে বলিলেন‌, ‘কি বলব ব্যোমকেশবাবু্‌, সেদিনও কলিকের ব্যথা ধরেছিল‌, হো-হে‌, একেবারে পেড়ে ফেলেছিল। নইলে খুনের খবর পেয়ে যাব না‌, এ কি সম্ভব! তা যাকগে ও-কথা। এখন এই সদানন্দ সুর—। আমি এখনি বেরুচ্ছি। এই জমাদার‌, জলদি ইধার আও! হামারা ঘোড়াপর জিন চড়ানে বোলো। তুম ভি তৈয়ার হো লেও। ভারী খুন হুয়া হ্যায়। আভি যানা পড়েগা।’

অতঃপর সুখময়বাবু রণসাজে সজ্জিত হইয়া অশ্বারোহণে যাত্ৰা করিবার উপক্রম করিতেছেন দেখিয়া আমরা চলিয়া আসিলাম। পাড়াগাঁয়ে পুলিসকে তদন্ত উপলক্ষে পথহীন মাঠে-ঘাটে ঘুরিয়া বেড়াইতে হয়‌, তাই বোধ করি তাহাদের ঘোড়ার ব্যবস্থা।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *