Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

জ্যোৎস্না

সুলেখার মত জ্যোৎস্নার ও প্রথম জীবন কেটেছে ওপার বাংলায়। রাতের অন্ধকারে ভাই বোন আর বড় দার হাত ধরে সেও এদেশে আসে। তবে সে যখন এদেশে আসে তখন সে অবিবাহিত। আর্থিক অবস্থা কোনোদিনই ভালো ছিল না। তাই এখানে এসে অবস্থা হল আরও করুণ। এক নদীর তীরে জায়গা হল তাদের। মা বাবা আর তারা দশ ভাই বোন। সংসারে অর্থ উপার্জনের মত শুধু বাবা আর বড় দা – বাকি সবাই ছোটো ছোট। তখনকার দিনে অতগুলো পেট চালানো তাও আবার নতুন কোনো জায়গায় – এ এক ভয়ঙ্কর স্পর্ধা। ভাইবোন নিয়ে মাঠ ঘাট খুঁটে, বাগান ঘুরে যা পেত নিয়ে আসত তারা বাড়িতে। কিন্তু জ্যোৎস্নার বাবা অভিমানী মানুষ – ছেলে মেয়েদের কুড়িয়ে আনা কিছুই তিনি স্পর্শ করবেন না , এমনকি তাদেরও করতে দেবে না।
অন্যের জমি ভাগে নিয়ে চাষ করতে লাগল জ্যোৎস্নার বাবা। জ্যোৎস্না কাজ করে মায়ের সাথে। ঢেঁকি তে ধান ভাঙে। বড়লোকের বাড়ির বউদের ধান ভেঙে দেয় – পরিবর্তে পায় চাল। সেই চাল এনে জ্যোৎস্নার মা আদুরীবালা তার দশ ছেলে মেয়েকে খেতে দিত। ঝোপঝাড় থেকে জোগাড় করত রান্নার জ্বালানি।
মায়ের সাথে সাথে কাজ করলেও ভাইবোনদের সাথে মজা করতে কিন্তু পিছিয়ে থাকেনি জ্যোৎস্না। একবার হল কি – এক শীতের ভোর বেলা চুপি চুপি মেজ ভাইকে সঙ্গে করে একটা ছোটো খেজুর গাছ থেকে পেড়ে নিয়ে এল খেজুর রসের ভাঁড়। সবাই মিলে চুপি চুপি খেয়ে সেই ভাঁড়ের মধ্যে জল ঢেলে আবার টাঙিয়ে দিতে এল গাছে। শীতের ভোরে এই রকম রস খেয়ে তাদের লোভ আর গেল বেড়ে। পরপর তিনদিন ভাঁড়ে এমন জল মেশানো দেখে গাছি গেল বেজায় চটে। সে বনের এক ফল মিশিয়ে রাখল রসের হাড়ি তে। যা খেলে কিছু সময়ের জন্য মানুষজন ভুল বকতে থাকে। কাজও হল সেই মত। রস চোর পড়ল ধরা। জ্যোৎস্না আর তার ভাইবোন সবাই ভুল বকতে লাগল। মা জুড়ে দিল কান্না, আর বাপ গেল গাছি কে মারতে। কিছুক্ষন পর অবশ্য আবার সবাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনার পর জ্যোৎস্না আর কোনোদিন রস খায় নি।
এই অভাবের সংসারে কোনো রকমে বছরখানেক কাটার পরেই আর এক চিন্তা এসে ডানা বাঁধলো। জ্যোৎস্নার বিয়ে দিতে হবে। বেশি বয়স হয়ে গেলে পাত্র পাওয়া যাবে না । খোঁজ শুরু হল পাত্রের । আদুরিবালার দূরসম্পর্কের এক মাসী প্রথম খোঁজ টা দিল। পাত্রের বাবা এসে দেখেও গেল মেয়ে। কিন্তু এরমধ্যেই পাড়ায় উঠল কলরব – জ্যোৎস্নার নাকি ডাকাতের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে। পাড়ার মোরোল বাড়ি বয়ে এসে বলে গেল ধোঁপা নাপিত বন্ধ করায় ভয় ও দেখালো। এই বেসামাল পরিস্থিতিতে জ্যোৎস্নার বাবা পড়ল অসুস্থ হয়ে। বিয়ের কথার এখানেই হল ইতি। (ক্রমশঃ)

Pages: 1 2 3 4 5 6
Pages ( 6 of 6 ): « পূর্ববর্তী1 ... 45 6

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *