ঝা- চকচকে প্রদীপের আলো ভারী মোহময় স্নিগ্ধ
কিন্তু ,তার তলায় জমাট বাঁধা কালোর তেলচিটে ছোপ!
জীবন চালচিত্র ঠিক তেমনি ,
ভালো প্রচ্ছদে ঢাকা গল্প বা উপন্যাসের মতন,
বাইরে থেকে মলাটের সুচারু শৈল্পিককলা চোখ মন দুটোই টানে।
কিন্তু,ভেতরের লেখাগুলো!
কালো পিঁপড়ের সারিবাধা লাইনের মিছিল!
যেখানে বিমূর্ত হয়ে জমাট কতনা করুণ জীবনের দাস্তান!
কত বঞ্চনা,প্রতারণা,লাঞ্ছনা আর ধর্ষণের জীবন্ত দলিল!
যা লোকচক্ষুর অগোচরে নীরব দহনে গুমরে মরে।
প্রকাশ্যে,ছিমছাম ছবি! সুখী সাজানো সংসার!
খুশির আলো মাখা মুখের বিজ্ঞাপন নজর টানে।
অতি হাস্যকর!
প্রচ্ছদের পাতা উল্টালেই অন্ধকারের গল্পকথা !
মুখোশের আবরণটা সরে যেতেই চমক শিহরণ!
হয়তো,ছেলে অফিসের কাজে বাইরে –
বৌমার ভালোমানুষির মুখোশটা খুলে যায়–
বৃদ্ধা শাশুড়ি নিত্য নিগ্রহের বলি!
বাড়ির ঝি- কাম রাধুনি- এইতো!
বিনিময়ে,একাদশীর ফল,দুধ! নাহ্ তাও জুটেনা।
আঁধারের আরো গল্প আছে,
ডিগ্রীর ঝুলি নিয়ে যেনতেন একটা চাকরির জন্য জুতোর শুকতলা ছিঁড়ে যাওয়া নিরাশায় আঁধারের পিচ্ছিল পথটাকেই বাঁচার উপায় বলে লুফে নেওয়া –
অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে?
ক্ষুধার আগুনে ন্যায় অন্যায়ের বোধটুকু গিলে ফেলতে বাধ্য হয় বলেইনা-
কারখানা থেকে ফেরার পথেই তো লড়ির ধাক্কায় স্বামী কোমর ভেঙে পঙ্গু,খাবার মুখ আছে,
রোজগারী হাত নেই,অগত্যা-
মালতীর রূপ নাই থাকুক ,গতরে যৌবনের ঢল,
সাহায্য করার কেউ নেই , কিন্তু যৌবন চেটেপুটে নিতে,
মানুষের ভিড় বাড়ির পিছনের ঝুপড়িতে-
অসহায় স্বামীকে বাঁচাতে আকুল তিয়াস!
ভালোবাসার প্রতারণাও মানুষকে আঁধারে ঠেলে দেয় ।
যে জীবন হতে পারতো প্রদীপের মতো দীপ্যমান সেই জীবন অন্ধকারের তমিস্রাকে ছুঁতে ছুটে —
সুকোমল মনকে করে তুলে পাষন্ড,হাতে তুলে নেয় হিংসার কৃপাণ।
ভীষন সুখী দাম্পত্যের ছবি! আহা! ভারী খাসা!
রাতের রূপ ভারী বিচিত্র!
পদোন্নতির লালায়িত লোভে স্ত্রীকে টোপ হিসেবে
অফিসের বসের শয্যাসঙ্গিনী!
কত কত জীবন দিনের আলোয় ললিত সুষমায়,
সাঁঝের আঁধার যত ঘন হতে থাকে চিত্রপট বদলে যায়–
শুধু কালো পিঁপড়ের সারি অন্ধকারের গল্পকথা জুড়ে–
কজন তা টের পায়? তার হিসেব রাখে?