Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সুইসাইড || Ratna Sengupta

সুইসাইড || Ratna Sengupta

পরকীয়া প্রেমের পরিণতি সুইসাইড, ভাবতে পারেনি চঞ্চল। অল্পবয়সে বিয়ে, বড়ো লোকের মেয়ে তনিমা, এক কাপড়ে বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল। হাত ধরেছিল বেকার চঞ্চলের। আশ্চর্য এরপরেই সরকারী চাকরি পেলো চঞ্চল। মা বললেন তোর বউ লক্ষ্মী। তার ভাগ্যে তোর চাকরী।

সুখের সাগরে ভেসে দিন চলছে। পর পর দুটো ছেলে মেয়ে মা বউ নিয়ে সংসার। এর পর এলো হাতে বদলির চিঠি। সেন্ট্রাল গভঃ চাকরী, বদলি আন্দামানে, চোখের জল ফেলে চলল সেথায়।

পড়শির মেয়ে নন্দা, থাকা খাওয়া নিজেদের বাড়িতে করলো, নন্দা তাদের ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন সদাশিব বাবুর মেয়ে। আতিথেয়তা রান্না খাইয়ে মোহিত করে দিলো। একটু একটু করে নজর কেড়ে নিলো। হাতের কাছে সব গোছানো পেয়ে চঞ্চল কখন মন দিয়ে বসে আছে। পরকীয়া প্রেম বোধ হয় বেশি মিঠা।

বাড়িতে চিঠি, মোবাইলে কথা, সব কমতে লাগলো।
খুব ব্যস্ত এটাই জানে তনিমা। শুধু মাঝে মধ্যে অফিশ থেকে মায়ের সাথে, তনিমার সাথে কথা।
ছুটির দিনে সম্পূর্ণ নীরবতা। কেমন একটা সন্দেহ মাথায় আসে। তবু দাঁতে দাঁত চেপে রাখে।
শাশুড়ি মা বুকের ব্যথায় একরাতেই চলে গেলেন।
আসতে বাধ্য হলো চঞ্চল। শ্রাদ্ধের দিন নন্দা ছেলে কোলে মা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দুয়ারে। সেও স্ত্রী তাই শাশুড়ি মায়ের কাজ করবে।

এক ঘর লোক, তনিমা কোনো রকম বাক্ বিতণ্ডাতে গেল না। কাজের শেষে নিজের ফরমান জারী করলো। ছেলে মেয়েকে নিয়ে তোমার সংসারে যাবে। আমি তোমাকে ডিভোর্স দেবো। নাহলে পুলিশ কেস করবো। নন্দা লাফিয়ে ওঠে নিশ্চয় নিয়ে যাবো। নিজের ছেলেমেয়ের মত মানুষ করবো।

চঞ্চল অবসরে হাত পা ধরে, তুমিও চলো, আমি দুর্বল পারিনি নিজেকে রক্ষা করতে, ক্ষমা করে দাও। মুচকি হেসে তনিমা বলে আরে আগে ডিভোর্স দিই, পরে তোমার সাথে পরকীয়া প্রেমে মাতবো। আসলে ক্যান্সারের তীব্র যন্ত্রনা সহ্যের বাইরে, অনেকদিন থেকে ভয় মৃত্যুর পর ছেলেমেয়েকে কে দেখবে?

সকলে আন্দামানে গুছিয়ে নিয়েছে। হঠাৎ চঞ্চল অনুভব করে, কার হাত তার সারা শরীর জুড়ে ঘুরে বেড়ায়। ফিসফিস করে কথা বলে কানের পাশে। পিঠে স্নানের সময় সাবান ঘষে। জুতো জোড়া পায়ের কাছে চলে আসে। ফিতে বাঁধা হয় আপনি।
ওগো পরকীয়া প্রেম করবো বলে এলাম।
গিন্নী চেঁচায় তোমায় ভূতে ধরেছে, কার সাথে কথা বলো, সংযত হয়, গাছের ডালে পা ঝুলিয়ে বসে তনিমা। বুকটা ছ্যাত করে এলো, খবর নেয়নি ডিভোর্স পাবার পর।

কলকাতাতে তদবির করে বদলি হয়ে আসা। নিজেদের বাড়িতে সাফ সুতরো করে ঢোকা।
পড়শি থেকে খোঁজ নিয়ে জানে তনিমার ক্যান্সার ছিল। তাই সে ডিভোর্স দিয়ে মুক্ত হয়েছিল, আর এক মাসের মধ্যে পরলোকগত।

কি গো করবে নাকি পরকীয়া প্রেম আমার সাথে, আমি বনফুল গো, চঞ্চলের তখন দাঁতকপাটি লেগেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress