তুমি কি দেখেছ সেই নীল জলরাশি,সমুদ্র সফেন
আকাশের ঘননীল নীলিমায় হয়ে আছে লীন,
মায়াময় পৃথিবীর মহাশূন্য পারে,
খেলা করে যায় আজও বিরামবিহীন।
মনে হয় কিছু নেই সাগরের এপারে ওপারে,
যেন সেই অন্তহীন জলরাশি চঞ্চল শিশুর মতো খেলা করে–
খেলা করে জীবনের প্রমত্ত বাতাসে, প্রতিদিন,দিকে দিগন্তরে,
জীবন যুদ্ধের মতো আপনি আপন করে খেলা করে।
কখনো আনত সে,কখনো বা উদ্ধত শিরে,
বার বার আসে ফিরে ফিরে,বালুকা বেলার পরে,
জীবনের মরণের যত কিছু স্মরণের
ভালোবাসা কিছু আশা, নিভৃত অন্তরে,
ফিরে ফিরে আসা আর চলে যাওয়া মতো।
জীবনের জলছবি খেলা করে যায় অবিরত।
যত কিছু সুখরাশি, উছলিয়ে আসে ভাসি
আরো এক বেদনাকে সাথে লয়ে তার।
কখনো সে উল্লাসে ভেসেছে প্রমত্ত ঝড়ে
কখনো সে নত শিরে পায়ে পড়ে যায়।,
কখনো সে লাজভরে, বুকের উপরে পড়ে
ঝাঁপ দিয়ে সে জড়ায় প্রেমিকার প্রায়,
কখনো সে শিশু যেন জননীর বুকে হেন
অধীর আনন্দে মত্ত খেলা করে যায়।
কখনো সে স্থিত প্রাজ্ঞ বিজ্ঞজন মতো, গভীরেতে স্থির,
কখনো অস্থির যেন,ঊর্দ্ধাকাশে দেখে চাঁদ হয়েছে অধীর।
কখনো ঈশান কোনে ধেয়ে আসে কালো মেঘ বেদনার অশ্রুভরা মহাকালরাত্রির মতন–।
সমগ্র সাগর জলে যেন তার ছায়া ফেলে
থমথমে অভিমানী প্রিয়ারা যেমন।
প্রমত্ত ঝড়ের বেগে জলরাশি উথলিয়ে
ফুলে ওঠে, আদিম এ পৃথিবীর ঘৃণার মতন।
নিমেষে প্রশান্ত হয় নিদাঘের তপ্ত দিনে ব্যথা বেদনায় ,
প্রাণরসে উজ্জীবিত অফুরান জলোছ্বাসে ভেসে যায় কতো কালের সময়,
আমাদের জীবনের সুখ দুঃখ স্মরণের একমুঠো ভালোবাসা প্রাণে পেতে চায়।
ফিরে ফিরে আসি তাই,সাগরের কাছে ভাই
নীল জলে ছবি দেখি জীবনের জলছবি আয়নার মতো,
যত দেখি শেষ নাই, দেখিবার সাধ তাই বারে বারে ডেকে আনে সুমহান জীবনের ব্রত।
কোনো এক মায়া টানে দুর্নিবার কতো টানে,
ছুটে যাই নীল সেই জলরাশি পানে।
জীবনের ভাঙা গড়া আসা যাওয়া ফিরে চাওয়া,
মায়া আর ব্যথা ভরা গান শুনি কানে।
সাগরের কলোকল জলরাশি অবিরল
জীবন সঙ্গীত গায় মহাকলতানে –
অসীম আকাশ তলে জীবনের লীলা চলে মহাসঙ্গীত রব শুনি যেন জীবনেরই গানে।