সম্পত্তি
বিয়ের বছরটা রিমার আনন্দে কাটে। এই সময়টাতে রমেনকে নতুন করে আবিষ্কার করে। বিছানা থেকে গামছা সব কিছু ভাগ করার মাঝেই সুখ পায়।রমেনকে মুগ্ধ করার চেষ্টা করে। পরের বছরগুলো দৈনন্দিন অভ্যস্ততায় পরিণত হয়। আবেগের জায়গায়টা দখল করে বাস্তবতা। রমেন থাকে তার বাইরের জগতে –আনন্দে, রিমা তার সংসারের গণ্ডিতে আবদ্ধ। এরপর বাচ্চা , সামজিকতার ভীড়ে প্রেম নিখোঁজ হয়।রিমার মনে হয় প্রেম আর ফেরে না। সত্যিই কি হারিয়ে যায়? মনে হয় জীবনের সব কিছু ফুরিয়ে যায়, রমেন তাকে শুধুমাত্র বৌ বানিয়ে ফেলেছে। একসময় আমিই ছিলাম তার ভালবাসার প্রেরণা,এখন সম্পত্তি । যেন আমার সব কিছুই তার। রিমার অভিজ্ঞতায় রমেন আসলে ভুলে গেছে,তার মাঝে আমার প্রেমিককে খুঁজে বেড়াই, যে তাকে রোজ না হোক সপ্তাহে একদিন কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাবে।রমেনের সে খেয়াল,থাকে না। ছুটিরদিনেও নিজের কাজেই ব্যস্ত,থাকে।কখনও,বলে না রিমা আজ আমার পছন্দের শাড়িটা তুমি পরবে আর শাড়ির কুচি ঠিক করে দেব।আমার জন্য ভ্যানিটিব্যাগে কিছু খুচরো রেখে বলবে প্রয়োজন মত খরচা কর।আমি,বলব ওহ! খুচরো দিয়ে কি সব প্রয়োজন মেটানো যায়? খুচরো গুলো গুনতে দেখে রমেন মুচকি হেসে বলবে আমি তো জানি তুমি এমন কথাই বলবে।
রিমা তো সেটাই চায়, রমেন থাকুক তার মন জুড়ে। প্রথম পরিচয়ে যে ভালবাসার কথাগুলোয় মন দেয়া নেওয়া হয়েছিল সেগুলোই বলুক আজীবন। কিন্তু রমেন যখন থেকে রিমাকে সম্পত্তি ভাবা শুরু করে , ঠিক তখন থেকেই রিমা সংসারটাকে শুধুই কর্তব্য মনে করে। সেখানে আন্তরিকতা,প্রেম আর থাকে না , থাকে অভ্যস্ততা দায়িত্ব পালন।। কেউ হয়ত অন্য কাউকে ভালবাসার দুঃসাহস দেখায় কিন্তু রিমা তা পারে না সামাজিকতার ভয়ে। রিমা সারাটা জীবন দায়িত্ব ভারে নুব্জ হয়ে পরে, ভাবে সত্যিটা হল , স্বামী হওয়া সহজ কিন্তু প্রেমিক হওয়া কঠিন ।বিয়ের পর প্রেমিকা পদবী বদলে স্ত্রী হয় কিন্তু মানুষটার বদল হয় না। সকল স্ত্রী স্বামীর ভালবাসা পায় বলে মনে হয় না। বিয়ের পরেও ভালবাসা আদায় করে নিতে হয় । প্রেমিক বিয়ের পরে স্বামী হয়। স্ত্রী নিজের সেই প্রেমিককে আর পায় না।প্রমিকা বিয়ের পর কেবল সুন্দর দ্বায়িত্ববান স্বামীর সম্পত্তি।