সংগীত দিবস
মঞ্জুশ্রী দেবী গান গাইছেন ,’দাঁড়িয়ে আছো তুমি আমার গানের ওপারে….’
ওনার স্বামী সুশান্তবাবু এক মনে শুনছেন সেই গান।
মঞ্জুশ্রী দেবীর গানের পর সুশান্ত বাবু গিয়ে উঠলেন, ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে, সখি যাতনা কাহারে বলে…..’
মঞ্জুশ্রী দেবী একাগ্র শ্রোতা।
এরপর মঞ্জুশ্রী দেবী গাইলেন,’আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাইনি তোমায়…..’
এই গানের পর সুশান্ত বাবু গাইলেন ,’আমার পরান যাহা চায় ,তুমি তাই তুমি তাই গো….’
এইভাবে রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে এই প্রৌঢ় বয়সে এসে আজকের সংগীত দিবসে মঞ্জুশ্রী দেবী আর সুশান্তবাবু গানের মাধ্যমে নিজেদের আবার নতুন করে মেলে ধরলেন।
অল্প বয়স থেকেই দুজনেরই বাড়িতে গানের চর্চা ছিল ,পরিবেশ ছিল, আর গানের রেওয়াজও করতেন দুজনেই তাঁরা, মোটামুটি ভালই গাইতেন দুজনেই।
বস্তুতপক্ষে গানের মাধ্যমেই কলেজ জীবন থেকে তাদের পরিচয় ,আর সেই সূত্রে বিয়ে ।
কিন্তু সংসারের নানা কাজের ভারে আর ছেলেমেয়েদের মানুষ করার ব্যস্ততায় মঞ্জুশ্রী দেবীর নিয়মিত গানের রেওয়াজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি।
চাকরির জন্য, সংসারের নানা কাজের জন্য আর ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা আর ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সুশান্ত বাবুরও আর সেই রকম ভাবে গান গাওয়া হয়ে ওঠে নি।
এখন তাঁদের ছেলে আর মেয়ে পড়াশোনার পর নিজেদের ক্যারিয়ার গড়েছে। সুশান্ত বাবু আর মঞ্জুশ্রী দেবী তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা এখন নিজেরা নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। তাঁদের ছেলে-বৌমা আর মেয়ে -জামাই সবাই এখন চাকরী সূত্রে বাইরে থাকে।
সুশান্ত বাবুও এখন রিটায়ার করেছেন তাঁর চাকরি থেকে।
এখন সুশান্ত বাবু এবং মঞ্জুশ্রী দেবীর অবসর জীবন।
তাঁরা আবার নিজেদের জীবনে গানকে বেছে নিয়েছেন আনন্দের এক অন্যতম অবলম্বন হিসেবে।
হারমোনিয়াম নিয়ে প্রায়ই বসেন তারা গানে , এখন তাঁরা একে অপরের শ্রোতা আর সমালোচক।
আজ সংগীত দিবসে রবীন্দ্র সংগীতকে আশ্রয় করে তারা দুজনে আবার নতুন করে মেতে উঠেছেন গানে গানে। গানের ভুবনে ডুবিয়ে দিয়েছেন নিজেদের।
তাঁদের সংগীত চর্চার এই আনন্দের ভাগীদার এখন তারা নিজেরাই !