শিব-কথনের আড়ালে ভবিষ্যৎ
হে বাবা ভোলেনাথ, পেত্থমেই ক্ষমাভিক্ষা চেয়ে নিচ্ছি! অবলা ভেবে ক্ষমাঘেন্না করে দিও….
আহা কী রোমান্টিক রোমান্টিক হাওয়া। নরম মোলায়েম মেঘলা রোদ্দুর। ফাগুনের আগুন যেন সব দিকেই দাউ দাউ জ্বলছে। তিথি পার্বণও যেন সব ঠ্যালা দিয়ে সেদিকেই নেয়। সেই যে শুরু আর থামাথামির নাম নেই। ইয়ো বাবা ভ্যালেন্টাইন ঝড় থাকতেই বাঙালীর প্রেমজ্বর তোলা সরস্বতীর পাগলপারা প্রেমরোগ! রেশ যায়নি ফিল্ডে চলে এলেন বাবা শিব। বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনে ছয়লাপ কমপ্লিট ইলিজিবল ব্যাচেলর। তার মতো ‘হাবি’ চাই। বোঝ ঠ্যালা!
সামলানো কী চাট্টিখানি কথা? সব কুমারী পার্বতীরা যার যার বায়োডাটা রেডি করে গুঁতোগুঁতি শুরু করেছে কার আগে কে তেনার দৃষ্টিতে পড়বে। হুঁ, বাওয়া ডট কমে ক্রাইটেরিয়া অব্দি আপলোড করা হয়ে গ্যাছে। ঝাড়াই বাছাইয়ের কাজ শুরু হবে পঞ্জিকার নির্ঘন্ট মেনে।
শিব বলে কথা! তিন কুলে যার কেউ নেই। ইস্পেসাল হল শাশুড়ির হ্যাপা পোয়াতে হবে না। উফ্ সে আর এক ঝামেলার! উকীলের বাড়ি দৌড়োতে দৌড়োতে লম্বা জিহ্বা বেরিয়ে যাবার যোগাড় একেক জনের। বুঝতে পারছো না তো? এ এক বিচ্ছিরি সত্য! আরে বাবা অধিকার অধিকার খেলা। পুরো প্রক্রিয়াটিই যৎপরোনাস্তি বিড়ম্বনার ব্যাপার। সে আপনি টাটা বিড়লা কিংবা আদানি-আম্বানির ঘরের পার্বতীই হোন কিংবা হরিপদ কেরানির মেয়ে শাশুড়ি মানেই অবিমিশ্র সুখ নামক পাখিটি হাতের নাগালের বাইরে থাকবে।
তার উপর ছেলেগুলোও আজকাল বেশ পাঁঠার মতো ম্যা ম্যা করেই চলে যেন বৌ নামক হাঁড়িকাঠে তাকে জবাই করা হবে। আরে বাবা দুনিয়ার যত রদ্দি-রাবিশ সম্পর্কের গার্বেজ আমার আপানার বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সঙ্গে আসতেই হবে?
তার চাইতে অনাথ ভোলেনাথ অনেক ভালো পাত্তর। চালচুলোহীন হোক ক্ষেতি নেই, বিত্তবান পুরুষ সব পার্বতীরই চলন্ত এ টি এম মেশিন এ গুঢ় তত্ব কে না জানে। আস্ত একখানা কৈলাশের মালিক শুনে শুনে মুখস্ত সবার। এমন পুরুষ কার না কাম্য। এর জন্য যদি মাগ্গিগণ্ডার বাজারে কয়েক হাজার লিটার দুধ ভাসাতে হয় তাও নেহাত মন্দ নয়।
তেনার আবার স্টাইলটাও বেশ আধুনিক। বেশ হিরো হিরো টাইপ। ঐ অনেকটা ম্যাচোমেন। মাসল টাসলও বেশ আছে ক্যালেন্ডারে দেখে দেখে সবার চোখে গেঁথে গ্যাছে।
‘বাসাংসি জীর্ণানি’ দৃষ্টান্ত তার জন্য উপযুক্ত। নশ্বর দেহে অবিনশ্বর শৌখিন পোশাকের বালাই নেই। আজকাল স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে ক্রমশই সংক্ষিপ্ত হচ্ছে অঙ্গবাস, বাড়ছে ছেঁড়া-ফাটা জীর্ণবসনের ফ্যাশন। ভগবান না করুন, সবাই দিগম্বর-দিগম্বরী হয়ে গেলেই তো জীর্ণ বসনের তুলনাও অপ্রাসঙ্গিক। গুণের ব্যখ্যান শুরু হলে শেষ হবে না পাতার পর পাতা লেখাই চলবে….
আজকাল আবার খুব মোটা দাগের ডিপ্রেশন নামক ভাইরাসেরা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে তাই মাঝে মাঝে ফ্রিতে গাঁজার কল্কেতে কয়েকটা টান মেরে স্বগ্গ অব্দি ঘুরে আসা যাবে। গাঁটের কড়ি খরচা করে হুক্কা বারে যাওয়ার ঝক্কি নেই। তার উপর বেহুঁশটার আড়ালে আরও দু-চারটেকে ভ্যানেটিতে রাখা যাবে। এগুলো ফাউ।
আমাদের ধারেকাছে যাদের বয়স তারা যায় বাবার দরবারে মোটা মোটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে। কী চেয়েছিলুম কী পেলুম। একটিবার ট্যারা চোখেও যদি দেখতে তবে তিনি আমার আঁচলে বাঁধা থাকতেন। থাক্ আর বেশি কিছু বলে বৌমার দুঃকের বোঝা বাড়াবনিকো। সেও আসবে নালিশ জানাতে। ঐ শাউড়ি বড় বালাই…
বাওয়া এতোকিছু লিখলাম বলে কিলিয়ে কিলিয়ে কাঁঠাল পাকিও না। এ আবার ধম্মের দেশ। মনে মনেও ক্যালাবে ভাবলে ধম্মে সইবে না এই আমি বলে রাখলুম।
জয় বাবা ভোলানাথ। জিভ কেটে দু’কান মুলছি পাপ নিও না বাবা…