শাহরিয়ার কবির, কী গভীর ভালোবাসা তোমার হৃদয়ে
এ দেশের জন্যে, তা’ জানে সবুজ ঘাস,
লতাগুল্ম, সুগন্ধি ফুল, উদার প্রান্তর, নদীর
উদ্দাম স্রোত, পাখা-ঝাপটানো
নানা রঙের পাখি, সবচেয়ে বেশি হাজার
হাজার সংগ্রামী মানুষ। তোমার বোধে দীপ্ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
হাতকড়া পরা তোমাকে যে মুহূর্তে জড়িয়ে
কাঁদছিল কারাগারের সামনে
তোমার মেয়ে, তখন বাংলার আকাশের কালো মেঘ থেকে
ঝরে পড়েছিল অশ্রুকণা।
শাহরিয়ার, তোমাকে ওরা এক অন্ধকার কুঠুরিতে
বন্দি করে রেখেছে। কিন্তু ওদের জানা নেই,
তোমার অন্তর্গত আলোয় উদ্ভাসিত,
আশ্চর্য মুক্ত হাওয়ার তরঙ্গিত সেই কৃপণ, জন্মান্ধ ঘর!
কারাগারের প্রাচীর খুব উঁচু, আমরা জানি। অথচ তুমি
এই কঠিন, কালো দেয়ালের চেয়ে অনেক
অনেক বেশি দীর্ঘকায়। তোমার প্রকৃত সত্তার
নাগাল পাওয়ার যোগ্যতা ওর নেই,
কারারক্ষীদের কাছেও তোমার উচ্চতা
মাপার কোনও যন্ত্র নেই, নেই কোনও পদ্ধতি।
তুমি তো ডাকাত নও, নও কোনও তস্করও, তোমার
কোনও প্রাচীন টপকে বেরিয়ে আসার
মনোবৃত্তি থাকতে পারে না। বীর তুমি, তোমার
ধরন রণজয়ী যোদ্ধার মতোই।
শাহরিয়ার, তুমি যখন বীরোচিত পদক্ষেপে,
প্রশস্ত বুকে কুটিল মিথ্যাকে ধুলোয় লুটিয়ে সত্যের মুকুট
মাথায় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসবে, তোমার গলায়
অনেক আগ্রহী আনন্দিত হাত পরিয়ে দেবে
অজস্র জয়মালা, দূর থেকে মনশ্চক্ষে তোমাকে দেখব এবং
আমার হৃদয়মথিত পঙ্ক্তিমালা তোমাকে স্পর্শ করতে চাইবে।