যা বলা হয়নি, হয়নি যে কথা বলা
[ফেসবুকে দুই বন্ধুর কথোপকথন ]
প্রথম বন্ধু –তোমার খবর বল।
কি খবর শুনতে চাও বল
১ম–বিকেলে কি হাঁটতে বেরিয়েছিলে?ঘুরে এলে পার্ক থেকে।
২য় –না, ছাদে বেড়ালাম।
১ম– কি ছাদে গিয়ে হাঁটলে?
২য়– ভালো ঘুম হয়নি রাতে।
১ম– আমারও দশা ঠিক তাই।
১ টা অবধি জেগে, ঘুমতে পারিনি। তারপর
কখন ঘুমিয়েছি জানি না।
২য়– আমিও ২টোর পর ঘুমালাম।
ঘুম ভেঙে গেল খুব ভোরে।পড়লাম
ক্ষুধিত পাষান। তারপর
চা খেয়ে ফেসবুকে।
১ম –বেশ দ্রুত অসুস্থ হবার করেছো জোগাড়।
করোনা কিছু না করলেও,
ঘুম না হলে অনিদ্রায় ভুগবে।
২য়– তাতে তোমার কি?এখনও জেগে কেন?
১ম–তাতে আমার কি বুঝতে হবে না।
২য়–ঠিক আছে।ঘুম না এলে তাকে বল মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। এসে যাবে ঘুম।
১ম–সে ঘুমিয়ে পড়েছে।
২য়– তবে তুমিও তার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়।
১ম–শুয়েই আছি তার পাশে।
২য়–আহা যদি পাশে থাকতাম,
চুলে বিলি কেটে ঘুম পাড়িয়ে দিতাম।
আমারও খুব ঘুম পাচ্ছে।
১ম–এখন ঘুমাবে?উঠেছ কটায়?
২য়–বললাম তো আগে,
ছ্যাকরা ছ্যাকরা ঘুম হয়েছে।
১থেকে ২টো,
২ থেকে ৩-৩০ জাগা,
তারপর ঘুম ৪ -৩০
তারপর থেকে জাগা
উফফফফ
তোমাকে কেন যে এত মনে পড়ে
সর্বদা তাই ভাবি,ঘুমে জাগরণে স্বপ্নে।
১ম–আমি পাজি।যে তোমার ঘুম
নষ্ট করে। মনে ব্যাথা দেয়।
২য়–মনে হয় তাই? হা হা হা।
তুমি মনে মনে ডাক,
কেন যে ডাক আমায় কি জানি।
১ম– আমিও সত্যি ভাবি তাই।
বুড়ো বয়সে ধেড়ে রোগ ধরছে।
২য়–ভাইরাসটার কি নাম?
১ম–হা হা হা হা হা লভ ২০।
২য়–না না লভ ২১।
১ম–এর উপসর্গ কি?
২য়–ভাল না লাগা,
মন খারাপ হওয়া হঠাৎ অনিদ্রা,
খিদে না লাগা, দম বন্ধ ভাব।
এইসব আর কি।
১ম–কি আশ্চর্য? আমারও যে তাই হয়।
২য়–বাউন্ডুলেকে কিভাবে বাঁধলে ভাবি তাই।
১ম–সে তুমিই জানো।
২য়–এখানে তোমার কামাক্ষ্যার বশীকরণ মন্ত্র কাজ করেছে।
১ম–কি সেই মন্ত্র?
২য়–তুমিই জান,কি মন্ত্রে বশ করেছো,আমার মতো এক দুর্বিনীতকে।
১ম–দুর্বিনীত কেন ?
পুষ্প মালা নয়,গাঁথছিলাম বসে শব্দমালা।
হঠাৎ কোথা থেকে এসে বললে মালাটা বেশ সুন্দর। দেবে আমায়?
২য়– আমি বললাম আর একটু সাজিয়ে গাঁথলে হবে আরও সুন্দর।
১ম–তাই?
এই বলে একটার পর একটা নিজেই নিলে।
২য়–হ্যাঁ তো
১ম– তারপর বললে দাঁড়াও ঠিকমত সাজিয়ে নিয়ে আসছি।
২য়–তারপর। কি যে হলো কেন হলো জানি না, তুমি জান?
১ম–না তো, জানার চেষ্টাও করিনি।
আমি শব্দমালা গাঁথি আর তুমি টেনে নাও।ভাবলাম পরার যখন কেউ আছে তবে গেঁথে যাই।
২য়–হুম। এখন তো সে মালা নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে।
১ম–না জানি কি কেমন সে মালা?
না হীরে না মুক্ত, তাতেই এত জ্বালা
২য়–হুম এই যে বশীকরণ রুদাক্ষ মালা।
১ম–কোন মন্ত্র দিয়ে তো হয় গাঁথা নয়।
মালাগুলো খুশিতে মন ভরে? নেড়েচেড়ে দেখ তাই সারক্ষণ।
২য়–খেয়াল করিনি তাতেই ছিল ভাইরাস , যা করছে আক্রান্ত। মুক্ত হয়ে রোগ সারাতে বলছ?
১ম–পারলে কই আর?
২য়–জানো, মালাগুলো খুলে রেখে দিলেও
মুক্ত হয় না।শুনেছি ভাইরাস শরীরে ঢুকে নিজেও মরে বাঁচে,আর শরীরটাকে মারে।
১ম–আর মনটাকে কি করে??
২য়–এই জীবাণু তো অদৃশ্য। মনটাকে কুরে কুরো খায়।এই তো দারুণ সুযোগ পেলে। দূরে থাকার অজুহাত। আমায় ছাড়া বেশ তো আছো,
কাটছে দিন কাটছে রাত।
১ম– আমি যে আমি না
তুমি তা জান না?
দূরে থেকেও থাকি কাছে
মনে হয় না তা যে?
২য়–হা হা হা হা হা
তাই তো ধরেছি গান
তাই রে , রে রে না
খুশিতে নাচছে প্রাণ
১ম–জানি তুমি হিন্দু সন্তান।
২য়–আর তুমি মুসলমান??
সন্তান না,সন্তানের বাপ ? ?
ভাবলে বাড়ে রক্তের উচ্চচাপ।